করোনাভাইরাস চলাকালে অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের অফিসিয়াল কার্যক্রম অব্যহত রাখতে চালু করেছে অফিস ফ্রম হোম পদ্ধতি। লকডাউনে ঘরে বসেই অফিস করছেন অনেক চাকুরীজীবি। কিন্তু অনেকেই হয়তো অবগত নয় যে হোম অফিস সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। এই নিবন্ধে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে হোম অফিসেও আপনি আপনার সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করবেন।
যদিও কারো কারো ক্ষেত্রে ঘরে অফিস করাটা নতুন নয় তবু এই করোনাভাইরাসের প্রাক্কালে বড় পরিসরে অফিসের সমস্ত কর্মকর্তা – কর্মচারী মিলে বাসায় অফিস করাটা সামগ্রিকভাবে নতুন একটি ধারণা। যারা পুর্বে বাসায় বসে অফিস করেনি তারা হঠাত করে আতকে উঠতে পারেন যে কিভাবে সম্ভব এটি! রিমোটলি অফিস স্থানান্তরের পুর্বে আপনার অফিসের উপযোগী কি ধরণের সার্ভিস যুক্ত হবে বা কোন সার্ভিসটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন এ বিষয়টি পর্যালোচনা করুন। নিম্নে হোম অফিসের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু দিকনির্দেশনা আলোকপাত করা হল –
- রিমোট অফিসের কার্যক্রম পরিচলনার জন্য আপনার কর্মীদের জন্য নতুন একাউন্ট ও এক্সেস পয়েন্ট তৈরি করতে হতে পারে। সেক্ষত্রে উইজার একাউন্টের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
- অফিসে যেসকল সফটওয়্যার ব্যবহার করা হত হোম অফিসের ক্ষেত্রে রিমোট ইউজারদের হয়তো ভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করা লাগতে পারে। এসব সফটওয়্যার সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য লিখিত নির্দেশনা তৈরি করে কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা যেতে পারে।
- কর্মীদের দক্ষতা অনুসারে বিভিন্ন কাজের জন্য ‘হাউ টু ডু’ গাইডলাইন তৈরি করা যেতে পারে। এতে হেল্প রিকোয়েস্ট কমিয়ে কাজের গতি ঠিক রাখা সহজতর হয়।
- খেয়াল রাখা উচিত যে, করোভাইরাসের কারণে কর্মীরা স্বভাবিকভাবেই নানান মানসিক চাপে রয়েছেন। এর মধ্যে নতুন টেকনোলোজি শেখার বিষয়ে তারা হয়তো তাদের সহকর্মিকে ততটা বিরক্ত করতে চাইবে না যতটা স্বাভাবিক অফিসে করতে পারত। তাই কর্মিরা পরিবর্তিত প্রযুক্তির সাথে নিজেদের কতটা মানিয়ে নিতে পারছেন তা মনিটর করুন।
- বাসায় অফিসের কারণে অনেকের ডিভাইসে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিভাইস চুরি হতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিদিনকার কাজের ব্যাক আপ রাখার অভ্যাস করতে হবে।
- যে কোন ধরণের প্রযুক্তিগত সমস্যায় আপনার কর্মীরা যাতে আপনাকে রিপোর্ট করে সে ব্যাপারে তাদের উৎসাহিত করুন।
- আপনার প্রতিষ্ঠানের আইটি রিসোর্স এক্সেস করার জন্য আপনার কর্মীদের ভিপিএন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করুন। এতে সাইবার এটাক থেকে আপনার ডাটা অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে।
- ঘরে অফিসের ক্ষেত্রে বাচ্চারা কর্মীদের ডিভাইসের আশেপাশে আসার সুযোগ পায়। কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চারা ডিভাইস নিয়ে খেলতে গিয়ে তার ক্ষতিসাধন করতে পারে। শিশুদের নাগালের বাইরে নিরাপদ জায়গায় ডিভাইস সেট আপ করার পরামর্শ দিন।
- রিমুভেবল ডিভাইস বা ইউ এস বি ডিভাইস ব্যবহার করা থেকে আপাতত বিরত থাকুন। এতে আপনার সিস্টেমে মেলওয়্যার প্রবেশ করার সুযোগ পায়। ফাইল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে অনলাইন স্টোরেজ ব্যবহার করুন।
হোম অফিস একটি পরিবর্তিত সময়ে আবিষ্কৃত একটি অস্থায়ী সমাধান। এ পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার আপনার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম যেমন স্বাভাবিক করতে পারে তেমনি ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতার কর্মীদের জন্য এটি চ্যালেঞ্জও হতে পারে। এজন্য কর্মীদের মধ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সমন্বয় নিশ্চিত করুন। ভার্বাল সল্যিউশনের থেকে লিখিত নির্দেশনা বা ম্যানুয়াল এ সময়ে ব্যাপক কাজে দেবে। কর্মীদের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন।
ছবিঃ সংগৃহীত