গৌতম ভট্টাচার্য: ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি বনাম বোর্ডপ্রধান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় -দিনভর ভারতজুড়ে উত্তাল বিতর্কের পর শেষ রাতের পরিস্থিতি বলছে ,দলনায়কের ওপর বোর্ডকর্তারা এতটাই চটেছেন যে প্রয়োজনে দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমিতে তাঁকে শোকজ করলেও আশ্চর্য হওয়ার নেই।
বিরাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ ,অসত্য ভাষণ এবং পদের শালীনতা ভঙ্গের। আজ পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটের ঊননব্বই বছরের ইতিহাসে বোর্ডেরই দেওয়া মঞ্চে বোর্ডেরই ওপর ভারত অধিনায়কের গোলাবর্ষণের মতো আজব কাহিনী দুটো নেই। আর তিনি কোহলি তো শুধু তীব্র সমালোচনাই করেননি ,বোর্ডপ্রধানকে প্রকাশ্যে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করে ছেড়েছেন ।কেউ কেউ বলেছেন প্রথম টেস্টের আগে বিদেশের মাঠে শোকজ করলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হবে। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে বিশ্ব আরোই হাসবে।আবার কেউ কেউ বলেছেন এই আচরণের প্রতিবাদ না করলে আমরা আছি কেন ? কিছু একটা ব্যবস্থা তো নিতেই হবে। চিঠি দিতে হবে। কেন এটা বলল সেটা ও কারণ দর্শাক।
এইসব মহাবিতর্ক শ্রী লংকার ক্রিকেটে আকছার হয়েছে।পাকিস্তানে হয়েছে ।কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের রিখটার স্কেলে এই মাত্রার ভূকম্পন আগে অনুভূত হয়নি।যেখানে কোহলির মতো মেগাস্টার অধিনায়কের গুলি সরাসরি তাক করেছে চিরপ্রভাবশালী ক্যাপ্টেন কাম বোর্ড প্রেসিডেন্টকে।কত ভারত অধিনায়ক এসেছেন।অপছন্দ সত্ত্বেও জবাই হয়ে গিয়েছেন।সে শচীন হন কী কপিল।গাভাসকর হন। কী সৌরভ। কারো সাহস হয়নি এইভাবে বোর্ডকে আক্রমণ করার।
মোহিন্দর অমরনাথ একবার বাদ পড়ে নির্বাচক কমিটিকে একদল ভাঁড়ের সমাবেশ বলেছিলেন।দ্রুত তাঁকে শো কজ করে টিম থেকে বাদ দেওয়া হয়। কোহলির ক্ষেত্রে সময় বদলেছে।জমানা বদলেছে।প্লেয়ারের ঔজ্জল্যও এক নয়। তিনি মোহিন্দর যতই তিরাশির বিশ্বকাপ জেতানোয় অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে থাকুন,বিরাট হলেন বিরাট।বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাঁচ স্পোর্টিং সুপারস্টারের একজন।তিনি কাউকে আক্রমণ করা মানে সেই স্ফুলিঙ্গ মুহূর্তে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া.বোর্ডকর্তারা গোড়ায় বিরাটের বোমা বর্ষণে একটু হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিলেন।কিন্তু রাত্তিরের দিকে নতুন ভাবনা শুরু হয় যে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন যেহেতু ভিডিও কনফারেন্সে হয়েছিল এবং একাধিক সেখানে মজুত ছিলেন –উল্টে বিরাটের কাছে অসত্য ভাষণের ব্যাখ্যা চাওয়া হোক। কারণ তিনি যা করেছেন পরিষ্কার শৃঙ্খলাভঙ্গ।বৃহস্পতিবার এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।