মাসুদ আহমেদ: ভূস্বর্গ থেকে বেজিং। সার্চ ইঞ্জিন বলছে ৩,৭০৪ কিলোমিটার। তবে যে জবাব সার্চ ইঞ্জিন ঘাঁটলেও জানা যাবে না, তা হল, কতটা স্বপ্নে হাঁটলে তবে নিয়নের স্রোতে ভাসা যায়। গুলমার্গের আরিফ খান (Arif Khan) এখন সত্যিই স্বপ্ন দেখছেন। দেশকে গর্বিত করার স্বপ্ন নিয়ে উড়ে গিয়েছেন দিল্লি। সেখান থেকে রওনা হবেন বেজিংয়ে। সেখানেই যে বসবে ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক (Winter Olympics)। এবারের অলিম্পিকে স্কি (Skiing) ইভেন্টে ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি ৩১ বছরের আরিফ খান।
হাজিবল ট্যাংমার্গের বাসিন্দা আরিফ। এর আগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চার বার দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই আরিফ বলছেন, ”আমার স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হয়েছে। যে স্বপ্নের পিছনে আমি এতদিন ধাওয়া করে এসেছি, সেটাই সফল হয়েছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমার বাবা আমাকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্নও সত্যি হয়েছে।” বেজিংয়ে রওনা হওয়ার আগে গুলমার্গে গিয়েছিলেন আরিফ। এখান থেকেই তো শুরু হয়েছিল তাঁর অভিযান। দিল্লির বিমানে ওঠার আগে গুলমার্গের মানুষজনের আশীর্বাদ নিয়েছেন আরিফ। উল্লেখ্য, শনিবার তিনি দিল্লির বিমানে উঠেছেন। সেখান থেকে উড়ে যাবেন বেজিং।
[আরও পড়ুন: U-19 World Cup: বাংলার রবির তেজে মধুর প্রতিশোধ, বাংলাদেশকে হারিয়ে শেষ চারে ভারত]
যাওয়ার আগে আরিফ বলেছেন, ”খুব সহজ কাজ ছিল না। আমাকে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। ১৯৯৪ সালে আমি স্কি শুরু করেছিলাম। ২০০৮ থেকে পেশাদার স্কি-তে আমি।” সরকারের ভূমিকার কথা প্রশংসা করেছেন আরিফ। তিনি বলছেন, ”সরকারের কাছ থেকে আমি খুব সাহায্য পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল খেলাটাকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সরকার। আমাকে সবধরনের সাহায্য করেছিল।” আরিফ আরও বলেন, ”গুলমার্গ পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর জায়গা। এখানে স্কি করার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সারা পৃথিবীর আকর্ষণও রয়েছে গুলমার্গের প্রতি। গুলমার্গ, কাশ্মীর এবং দেশকে গর্বিত করার চেষ্টা করব। ১৪০ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছি আমি। চেষ্টা করবো যাতে সম্মান হানি না হয়।”
রাজ্য ও জাতীয় স্তরের একাধিক টুর্নামেন্টে এর আগে অংশ নিয়েছেন আরিফ। কিন্তু ২০২২ সালের অলিম্পিক সব দিক থেকেই আলাদা তাঁর কাছে। এখান থেকে পুরস্কার জিততে চান আরিফ। আগামী মাসেই শুরু হচ্ছে শীতকালীন অলিম্পিক। আরিফ পিছনের দিকে তাকিয়ে বলছেন, ”আমার বয়স যখন চার বছর, তখন আমার বাবা আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন গুলমার্গ। স্কি কোচিং কোর্সে আমার নাম নথিভুক্ত করান। তার পর থেকে আমার এই জার্নিতে বাবা আমার পাশে থেকেছেন।”
তার পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আরিফ খানকে। ২০০৫ সালে নিজের শহরে অনুষ্ঠিত রাজ্য স্তরের টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন আরিফ। সেখানে তাঁর পারফরম্যান্স দেখার পরে ১৪-তম জুনিয়র অ্যালপাইন স্কি চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নির্বাচিত হন।
আমেরিকা, জাপান, তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে , লেবানন, অস্ট্রিয়ায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন আরিফ। ১২৭টি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নেন তিনি। এবার গোটা দেশের চোখ তাঁর দিকে। লক্ষ্য একটাই। দেশকে গর্বিত করা এবং বেজিং থেকে সোনা জেতা।
[আরও পড়ুন: ‘নো মাস্ক, নো মেট্রো’র প্রচারে নয়া চমক, যাত্রীদের সতর্ক করছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও]
Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ