মুম্বইয়ে পিঙ্ক আর্মির দাপট
Image Credit source: Twitter
রাজস্থান রয়্যালস – ২২২/২ (২০)
দিল্লি ক্যাপিটালস – ২০৭/৮ (২০)
মুম্বই: আজ ওয়াংখেড়েতে জস বাটলারের (Jos Buttler) ইনিংসটা দেখে মনে মনে কি জ্বলে উঠছেন বিরাট কোহলি? এ বার ফর্মে নেই কিং কোহলি। অন্যদিকে দুরন্ত ছন্দে বাটলার। একই আইপিএলে (IPL 2022) চারটি সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েছিলেন বিরাট। এক সময় মনে হত এই রেকর্ড ভাঙা যাবে না। কিন্তু জস বাটলার এ বার যে ব্যাটিংটা করছেন তাতে সংখ্যাটা চারের অনেকে বেশি হতে পারে। সাত নম্বর ম্যাচ খেলতে নেমে তিনটি সেঞ্চুরি তাঁর নামের পাশে। আজ ১১৬ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরির পর আজ আবার। কোনও বল কোনও বাউন্ডারি যেন সমস্যা নয় জস দ্য বসের কাছে। আজকের দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals) ও রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) ম্যাচটা বুঝিয়ে দিল বাটলারের ব্যাট ও অশ্বিন-চাহালের বল ঘুড়লে শুধু একটা দুটো ম্যাচ নয়, দ্বিতীয় বার ট্রফিটা পাওয়া খুব একটা মুশকিল নয়। কারণ অধিনায়ক সঞ্জু শুধু ব্যাট হাতে রান করছেন না, দুরন্ত ভাবে দলটাকেও সামলাচ্ছেন। আজকের ম্যাচে ক্যাপ্টেন ঋষভকে টেক্কা দিলেন ক্যাপ্টেন সঞ্জু। শেষ ওভারে মাথা গরম করে আম্পায়ারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে মাঠে থেকে দল তুলে নিতে চাইলেন। ওয়াটসন বুঝিয়ে ঠাণ্ডা করেন পন্থকে।
That’s that from Match 34. @rajasthanroyals take this home by a 15-run win.
Scorecard – https://t.co/IOIoa87Os8 #DCvRR #TATAIPL pic.twitter.com/D2JXBfMTSp
— IndianPremierLeague (@IPL) April 22, 2022
টস জিতে দিল্লি অধিনায়ক ঋষভ পন্থ যখন ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন কেউই জানত না তাঁর বোলারদের কি হাল হতে চলেছে। পাওয়ার প্লে শেষেও রাজস্থান আহামরি কিছু নয়। নিজেদের যেন সেট করার চেষ্টা করছিলেন বাটলার ও পাড়িক্কল। সেট হওয়ার পর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। বাকি সবকটা ওভারই যেন পাওয়ার প্লে ছিল ইংল্যান্ড ওপেনারের কাছে। একটার পর একটা ছক্কা আছড়ে পড়ল ওয়াংখেড়ের গ্যালারিতে। রাজস্থানের স্কোর বোর্ড পঞ্চন গিয়ারে। বাটলার শোয়ের মাঝে নিজের উপস্থিতিও জানান দিলেন দেবদত্ত পাড়িক্কল। ১৫৫ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপে, দেবদত্ত যেমন হাফ সেঞ্চুরি পেলেন তেমনই চলতি আইপিএলে তৃতীয় সেঞ্চুরিটা বাটলারের নামের পাশে। ৬৫ বলে ১১৬ রানের ইনিংসে ঋষভের সব হিসেব উল্টে গেল। মেজাজ হারাতে শুরু করলেন পন্থ। ৫৪ রানের ইনিংস খেললেন পাড়িক্কল। তিন নম্বরে নেমে ১৯ বলে অপরাজিত ৪৬ রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জুর। ২০ ওভারে মাত্র ২ দুটি উইকেট তুলতে পারলেন দিল্লির বোলাররা। একটি উইকেট নিয়ে ৪ ওভারে ৪৭ রান খরচ করলেন খলিল আহমেদ। মুস্তাফিজুর ১ উইকেট পেলেন ৪৩ রানের বিনিময়ে। টুর্নামেন্টে চমক দেওয়া কুলদীপ আজ সাদামাটা। মাত্র তিন ওভার বোলিং করলেন, হাত থেকে বেড়িয়ে গেল ৪০ রান।
রানের পাহাড় জয় করার লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে পজিটিভ শুরু দিল্লি ক্যাপিটালসের। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে ঝড় তোলার চেষ্টা করলেন পৃথ্বী ও ওয়ার্নার। কিন্তু এতবড় রান তাড়া করতে গেলে ঝুঁকি নিতেই হবে। ক্রমাগত ব্যাট চালাতে গিয়ে পঞ্চম ওভারে প্যাভেলিয়ানে ফিরলেন ওয়ার্নার। এর পর অশ্বিনের শিকার শরফরাজ। ছয় ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান স্কোর বোর্ডে তুলল দিল্লি ক্যাপিটালস। অধিনায়ক ঋষভকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু করলেন পৃথ্বী। কিন্তু সেই পার্টনারশিপও দানা বাঁধল না। ৩৭ রানে সাজঘরের পথে পৃথ্বী। ১০ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়াল ৯৯ রানে। শে, ৬০ বলে প্রয়োজন ছিল ১২৪ রানের। ১২ নম্বর ওভারে ৪৪ রানে ঋষভ আউট হতেই দিল্লির সব আশাই যেন শেষ। এমন একটা ম্যাচে কেন রভমান পাওয়ালকে আট নম্বরে ব্যাট করতে পাঠালেন ঋষভরা। শেষ বেলায় ললিতকে সঙ্গে নিয়ে একটা শেষ চেষ্টা করেছিলেন। যা দেখে ক্রিকেট মহল বলছে আর একটু আগে রোভমান নামলে ম্যাচের ফলটা বদলেও দিতে পারতেন। কিন্তু সুযোগটাই পেলেন না। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে দেখলেন ১৯ নম্বর ওভারটা মেডেন হতে। শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৬ রানের। প্রথম তিন বলে তিনটি ছয় মেরে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন পাওয়েল। এমন সময়ই নাটক। তৃতীয় ছয়ের সময় নো বলের দাবি দিল্লি শিবিরের। আম্পায়র নো বল দিতে চাননি। ক্ষোভে ঋষভ পাওয়েল ও কুলদীপকে মাঠ থেকে উঠে আসতে বলেন। কোচ পন্টিং ছিলেন না ডাগ আউটে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে প্রবীন আমরে ও শেন ওয়াটসন ঠাণ্ডা করেন ঋষভকে। এই ক্ষোভের পরিবেশে বাকি তিন বলে তিনটি ছয় হাঁকিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেনি রোভমান পাওয়েল।
আরও পড়ুন : Santosh Trophy: বাংলার আশা জিইয়ে রাখলেন মহিতোষ, প্রিয়ন্তরা