IPL 2022: টানা হারের ধাক্কায় প্লে-অফ থেকে ক্রমশ সরছে শ্রেয়সের কেকেআর


IPL 2022: টানা হারের ধাক্কায় প্লে-অফ থেকে ক্রমশ সরছে শ্রেয়সের কেকেআর

Image Credit source: GT Twitter

গুজরাত টাইটান্স ১৫৬-৯ (২০ ওভারে)

কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৪৮-৮ (২০ ওভারে)

মুম্বই: ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) ইনিংসের শেষ ওভারটাকে কি টার্নিং পয়েন্ট বলা যেতে পারে? নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। মাত্র ৫ রান না দিলে টার্গেট বাড়তে পারত। না, হার্দিক পান্ডিয়ার টিমের বিরুদ্ধে তাঁর ওই ওভারটা টার্নিং পয়েন্ট নয়। তবে, দ্রে রাসের আউট হওয়া শেষ ওভারটা নিশ্চিত ভাবেই টার্নিং পয়েন্ট। বল হারানো ৬টা ছয় মেরেছেন। আবার একটা বিস্ফোরক ইনিংস দিয়ে টিমকে জয় এনে দিতে চলেছেন, এমন স্বপ্ন ক্রমশ ডানা মেলতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই দেশোয়ালি ভাই আলজারি জোসেফের বলে লকি ফার্গুসনের হাতে ধরা পড়লেন রাসেল। ওখানেই খেলাটা শেষ। হলও তাই! হারের হ্যাটট্রিক আগেই হয়ে গিয়েছিল। আইপিএলে (IPL 2022) টানা চারটে হারের নতুন কলঙ্ক জুড়ল কেকেআরে (Kolkata Knight Riders)। গুজরাতের ১৫৬-৯ তাড়া করতে নেমে ১৪৮-৮ এ শেষ কলকাতা। ৮ ম্যাচে হেরে লিগ টেবলের ৭-এ নেমে গেলেন শ্রেয়স আইয়াররা। একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এত ভুল করলে কি চলে?

এ বারের আইপিএল যদি জস বাটলারের হয়, কিছুটা হলেও হার্দিক পান্ডিয়ারও। তাঁকে যেন থামানোই যাচ্ছে না। ব্যাট হাতে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন। আগের ম্যাচেই রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে নট আউট ৮৭ করেছিলেন। তার আগের ম্যাচে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও ছিল নট আউট ৫০। হাফসেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করে ফেললেন গুজরাতের ক্যাপ্টেন। সাদা বলের ক্রিকেটে হার্দিক ভারতীয় টিমের সম্পদ। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফর্মে ছিলেন না। এ বার আইপিএলের মঞ্চ যে ভাবে মাতিয়ে দিচ্ছেন, বাটলারের মতোই তাঁর জন্যও নতুন অঙ্ক সাজাতে হবে প্রতিপক্ষ বোলারদের। তিন নম্বরে কলকাতার বিরুদ্ধে ৪৯ বলে ৬৭ করে গেলেন। ৪টে চার ও ২টো ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন ইনিংস। সবচেয়ে বড় কথা হল, যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, শ্রেয়সের টিমের বোলারদের মাথায় উঠতে দেননি। পর পর ম্যাচ জিতে হার্দিকের টিম ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের একেই থাকল।

হার্দিককে বাদ দিলে বাকিরা সে ভাবে জ্বলে উঠতে পারলেন না। কলকাতার বিরুদ্ধে বাংলার ছেলে ঋদ্ধিমান সাহা ওপেন করতে নেমে ২৫ করে ফিরলেন। ডেভিড মিলার ২০ বলে ২৭ করে ফেরেন। বাকিরাও আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। কেকেআরের বোলাররা সামগ্রিক ভাবে খারাপ বোলিং করেননি। প্যাট কামিন্সের বদলে নেমে ২৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন টিম সাউদি। শিবম মাভি ও উমেশ যাদবের পকেটে ১টি করে উইকেট। তবে শেষ ওভারে বল করতে এসে চমক দিলেন রাসেলই।

২০ ওভারে ১৫৭ রানের টার্গেট টি-টোয়েন্টিতে আজকাল জল-ভাত। হাসতে হাসতে তুলে দিচ্ছে টিমগুলো। শ্রেয়স আইয়ারের কেকেআর সেটাই কঠিন করে ফেলল টপ অর্ডারের ব্যর্থতায়। অ্যারন ফিঞ্চ, প্যাট কামিন্সের বদলে স্যাম বিলিংস ও টিম সাউদি খেললেন। নিউজিল্যান্ডের পেসার নিজের কাজটা যথাযথ করে গেলেন। কিন্তু বিলিংস টিমকে ভালো শুরু দিতে পারলেন না। মহম্মদ সামির মাপা বোলিংয়ের শিকার হলেন কলকাতার দুই ওপেনার। বিলিংস ফিরলেন ৪ করেন। ৫ করে আউট সুনীল নারিন। আগের ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেও গুজরাত ম্যাচে ১৫ বলে ১২ করে ফিরলেন ক্যাপ্টেন শ্রেয়স। নীতিশ রানা (২) কবে খেলবেন, কেউ জানে না। ভেঙ্কটেশ আইয়ার (১৭) মিডল অর্ডারে নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না। কিছুটা লড়াই করলেন রিঙ্কু সিং। যশ দয়ালের বলে আউট হওয়ার আগে মূল্যবান ৩৫টা রান দিয়ে গেলেন। তবে যিনি জেতাতে পারতেন, সেই রাসেল আর কিছুক্ষণ জ্বলতে পারলে কিন্তু গল্প অন্যরকম হতে পারত। পর পর কয়েকটা ম্যাচ জিততে না পারলে কিন্তু প্লে-অফের স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাবে কেকেআরের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: গুজরাত টাইটান্স ১৫৬-৯ (হার্দিক ৬৭, মিলার ২৭, ঋদ্ধি ২৫, রাসেল ৪-৫, সাউদি ৩-২৪)। কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৪৮-৮ (রাসেল ৪৮, রিঙ্কু ৩৫, উমেশ নট আউট ১৫, সামি ২-২০, রশিদ ২-২২, দয়াল ২-৪২)।



Leave a Reply