IPL 2022: তিন ছক্কায় গুজরাতকে ফাইনালে তুললেন কিলার মিলার


IPL 2022: বাটলার ঝড়ের পরও অপেক্ষা বাড়ল রাজস্থানের, মিলার-পান্ডিয়া জুটিতে ফাইানালের টিকিট পেল গুজরাত

গুজরাত টাইটান্স আইপিএল অভিষেকেই ফাইনালে পৌঁছে গেল। এ বার ঘরের মাঠে ২৯ মে ফাইনালে নামবেন হার্দিকরা।

রাজস্থান রয়্যালস ১৮৮-৬ (২০ ওভার)

গুজরাত টাইটান্স ১৯১-৩ (১৯.৩ ওভারে)

কলকাতা: শেষ ৬ বলে ১৬ রান দরকার। এমন ম্যাচের শেষ পাতে বরাবরই ঝলসে ওঠেন ফিনিশাররা। স্ট্রাইক এন্ডে যখন ডেভিড মিলার, যা কিছু ঘটতে পারে। হলও তাই। আগের ওভারেই হাফসেঞ্চুরি করেছেন নিজের। খুনে মেজাজে যে রয়েছেন, বুঝিয়েও দিয়েছিলেন। বোলার প্রসিধ কৃষ্ণার বিরুদ্ধে কিলার মিলারই ইডেনে এনে দিলেন দুরন্ত জয়। প্রথম বলটা লং অনের উপর দিয়ে লম্বা ছক্কা হাঁকালেন। দ্বিতীয় বলটাও ফেন্সের ওপারে ফেলে দিলেন। তৃতীয় বলটাতে কী হয়-কী হয় পরিস্থিতি। ৪ বলে তখন দরকার মাত্র ৪ রান। মিলার যে মোডে ব্যাটিং করছেন, তিনি যে ছক্কাতেই খুশি হবেন, তাতে আর আশ্চর্যের কী! হলও তাই। ছয়ের হ্যাটট্রিকে তিন বল বাকি থাকতেই গুজরাত টাইটান্সকে ফাইনালে তুলে দিলেন মিলার। উল্টো দিকে তখন সঙ্গী ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইডেনে বিশাল রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে চেনা ছন্দই ধরে রাখল গুজরাত।

বৃষ্টি… কালবৈশাখী… এই সবের জন্য ঘোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল ইডেনে এ বারের আইপিএলের (IPL 2022) প্রথম প্লে অফ নিয়ে। তবে মঙ্গলবার রাতে আবহাওয়ার রাগী মেজাজ দেখা গেল না। উল্টে ক্রিকেটের নন্দনকাননে দীর্ঘদিন পর ফেরা আইপিএলের ম্যাচ দারুণ উপভোগ করল দর্শকরা। পাশাপাশি মেগা ম্যাচে বাটলার ঝড় তো দেখা গেলই, কিন্তু হাসি ফুটল না রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) মুখে। তবে এখনও তাদের সামনে একটা সুযোগ থাকবে ফাইনালে ওঠার। ২৭ মে আমেদাবাদে এলিমিনেটরের জয়ী দলের (আরসিবি কিংবা লখনউ) বিরুদ্ধে খেলবে রাজস্থান। তবে আজ বাটলার ম্যাজিকের পাশাপাশি ইডেনের হাউসফুল গ্যালারি যা পেলেন তা হল মিলার-পান্ডিয়ার জুটির উইনিং পার্টনারশিপ। এই মরসুমেই আইপিএলে অভিষেক করে সকলকে তাক লাগিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্স (Gujarat Titans)। মিশন ফাইনালের জন্য পা বাড়ালেন হার্দিকরা।

এ বারের আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে টসে জিতে শুরুতে রাজস্থানকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলেন গুজরাতের অধিনায়ক হার্দিক। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলেই প্রথম ধাক্কা খায় পিঙ্ক আর্মি। মাত্র ৩ রান করে মাঠ ছাড়েন রাজস্থানের ওপেনার যশস্বী জসওয়াল। এরপর অপর ওপেনার ও এ বারের অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক জস বাটলারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে সঞ্জু-বাটলার জুটিতে ৬৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দায়িত্ব নিয়ে খেলছিলেন সঞ্জু। তবে হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া করে সাই কিশোরকে উইকেট দিয়ে যান সঞ্জু। ২৬ বলে ৪৭ রান করার পথে সঞ্জু মারেন ৫টি চার ও ৩টি ছয়। এরপর দেবদত্তকে পান বাটলার। পাড়িক্কাল করে যান ২৮ রান। তবে বাটলার আজ ঠিক করেই নিয়েছিলেন ইডেনে মেগা শো দেখাবেন। ৪২ বলে হাফসেঞ্চুরি করার পর বাকি ১৪ বলে করে যান ৩৯ রান। মোট ৫৬ বলে ৮৯ রানের নজরকাড়া ইনিংস দেখা গেল জসির ব্য়াটে। ১২টি চার ও ২টি ছয় আসে বাটলারের এই ইনিংসে। পিঙ্ক আর্মি ১৮৯ রানের টার্গেট দিলেও চাহাল-বোল্টরা থামাতে পারেননি মিলারদের।

ফাইনালের টিকিট হাতে পাওয়ার জন্য ১৮৯ রান তুলতে হত গুজরাতকে। শুরুতেই ঋদ্ধির উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা খায় গুজরাত। ইডেনের প্রতি ঋদ্ধি অভিমানী ছিলেন, এবং ক্রিকেটের নন্দনকানন থেকে খালি হাতেই ফিরতে হল তাঁকে। ঘরের মাঠে হতাশ করলেন পাপালি। তবে প্রাথমিক ধাক্কা খুব তাড়াতাড়ি সামাল দেন গিল-ওয়েড জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে গিলের সঙ্গে ওয়েড ৭২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। কেকেআরের জার্সিতে গত মরসুমেও খেলেছিলেন শুভমন। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে একটা সময় এই ইডেনই গিলের কাছে ঘরের মাঠ ছিল। ২১ বলে ৩৫ রান করে যান গিল। ওয়েডের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট না হলে গিলের ব্যাট আরও বড় রান তুলত। ওয়েডও ফেরেন ৩৫ রান করে। এরপর দলকে জেতানোর দায়িত্ব তুলে নেন ডেভিড মিলার ও হার্দিক পান্ডিয়া। ৬১ বলে ১০৬* রানের মিলার-পান্ডিয়া জুটি ফাইনালের টিকিট এনে দিল গুজরাতকে। ফের একবার কিলার মিলারে বাজিমাত টাইটান্সের। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৩ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় হার্দিকের টিম। মারকুটে ডেভিড মিলার করে যান ৩৮ বলে ৬৮*। হার্দিক নট আউট ৪০।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: রাজস্থান ১৮৮-৬ (জস বাটলার ৮৯, সঞ্জু স্যামসন ৪৭, হার্দিক পান্ডিয়া ১-১৪, মহম্মদ সামি ১-৪৩)। গুজরাত ১৯১-৩ (ডেভিড মিলার ৬৮*, হার্দিক পান্ডিয়া ৪০*, শুভমন গিল ৩৫, ম্যাথু ওয়েড ৩৫, ট্রেন্ট বোল্ট ১-৩৮, ওবেদ ম্যাকয় ১-৪০)।



Leave a Reply