ফিনালিসিমা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
ছবি: টুইটার
ফিনালিসিমায় ইতালিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফের দেশের জার্সিতে খেতাব জয় লিওনেল মেসির। গত বছরই কোপা চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ইউরো জেতে ইতালি।
আর্জেন্টিনা ৩ : ইতালি ০
(মার্টিনেজ ২৮, ডি’মারিয়া ৪৫+১, দিবালা ৯০+৪)
লন্ডন: বাঙালি মানেই ফুটবল। আর ফুটবল মানেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ইতালি কিংবা হালফিলের স্পেন, ফ্রান্স। আর প্রিয় দলের খেলা থাকলে বাঙালি তো টিভির পর্দা থেকে চোখই সরাবে না। বুধ রাতে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফিনালিসিমায় মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা আর ইতালি। কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা (Argentina) আর ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালির (Italy) ম্যাচ ঘিরে ছিল তুমুল উন্মাদনা। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সব টিকিট আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। সারা বিশ্ব চোখ রেখেছিল মেসি-কিয়েল্লিনি দ্বৈরথের দিকে। কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি ইতালি। তাই বাড়তি খিদে নিয়েই ওয়েম্বলিতে নেমেছিল আজুরিরা। কিন্তু মেসি (Lionel Messi)-ডিমারিয়াদের সৃষ্টিশীল ফুটবলের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ইতালি। মেসিভক্ত বাঙালিদের রাতজাগা সার্থক। প্রিয় ফুটবলার গোল না পেলেও, তিনি যা পারফর্ম করলেন তা মনে রাখার মতো। বোনুচ্চি-কিয়েল্লিনিদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন। স্কিলে আটকাতে না পেরে কখনও জার্সি ঘুসি মারলেন, কখনও লাথি মারলেন, আবার কখনও জার্সি ধরে টানলেন।
ফিনালিসিমায় ইতালিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফের দেশের জার্সিতে খেতাব জয় লিওনেল মেসির। গত বছরই কোপা চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ইউরো জেতে ইতালি। ইউরোর আধুনিক ফুটবল বনাম লাতিন আমেরিকার সৃজনশীল ফুটবল নিয়ে বরাবরই তর্ক বিতর্ক ওঠে। বর্তমান যুগে তো বিশেষজ্ঞরাও এগিয়ে রাখেন ইউরোপের আধুনিক ফুটবলকে। সেই সব কিছুকে মিথ্যা প্রমাণ করলেন মেসি-ডি’মারিয়ারা। বুঝিয়ে দিলেন, লাতিন আমেরিকার সৃজনশীল ফুটবল এখনও ভালো ভাবে বেঁচে রয়েছে। পুরো ম্যাচ প্রাধান্য দেখিয়ে ট্রফি জিতল স্কালোনির দল। মিশেল প্লাতিনি, দিয়েগো মারাদোনার পর এই ট্রফি উঠল লিওনেল মেসির হাতে। ১৯৯৩ সালে শেষ বার আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফি জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ২৯ বছর বাদে সেই টুর্নামেন্ট শুরু হলে ফের খেতাব উঠল নীল-সাদা জার্সিধারীদের হাতেই।
খেলার ২৮ মিনিটে লৌতারো মার্টিনেজের গোলে ১-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির ঠিকানা লেখা পাস থেকে গোল করে যান মার্টিনেজ। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ২-০ করেন অ্যাঞ্জেল ডি’মারিয়া। মার্টিনেজ-ডি’মারিয়ার দুরন্ত বোঝাপড়া। হাফটাইমেই ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেন মেসি-রোমেরো-ডি’পলরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ইতালির রক্ষণে আরও চাপ বাড়ায় আর্জেন্টিনা। একের পর এক আক্রমণে তখন ইতালির বক্সে ত্রাহি ত্রাহি রব। মেসির কয়েকটা শট ইতালির গোলকিপার ডোনারাম্মা না বাঁচালে স্কোরলাইন আরও বাড়তে পারত। খেলার একেবারে শেষ লগ্নে পরিবর্ত ফুটবলার হিসেবে মাঠে নেমে গোল পাওলো দিবালার (৩-০)।
শুধু আক্রমণ নয়, মাঝমাঠ থেকে রক্ষণ সব বিভাগেই পরিপূর্ণ আর্জেন্টিনাকে দেখা যায়। মেসি-ডি’মারিয়ারা মাঠে নেমে ফুল ফোটালেন। রক্ষণে ভরসা জোগালেন ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, মোলিনারা। এ বছরের শেষেই কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ। মেসিদের এই পারফরম্যান্স দেখার পর আশ্বস্ত হতেই পারেন সমর্থকরা। এ দিকে দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেললেন ইতালির ডিফেন্ডার জিওর্জিও কিয়েল্লিনি। তবে শেষ ম্যাচটা মোটেও সুখকর হল না আজুরি ডিফেন্ডারের।
আরও পড়ুন: Asia Cup 2022: জাপানকে হারিয়ে এশিয়া কাপে ব্রোঞ্জ পেল ভারতীয় হকি টিম