সুপারস্টার তকমায় ‘কেন মজা করছেন’ হেঁসে জবাব জাতীয় দলের স্ট্রাইকারের
ঘরের মাঠে, বিশেষত কলকাতায় সমর্থকদের সামনে খেলা আমাদের কাছে বিরাট সুবিধার। দলের বাকিরাও এই তিন ম্যাচে সর্বস্ব দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন, জানালেন লিস্টন কোলাসো।
কলকাতা: মাথা নীচু, মাটিতে পা এবং কঠিন পরিশ্রম করে যাওয়া। এই তিনটি বিষয়কেই পাথেয় করে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা। ভারতীয় ফুটবল দলের স্ট্রাইকার লিস্টন কোলাসো (Liston Colaco)। দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, সমর্থকদের কাছে সুপারস্টার, আর নিজের কাছে? জাতীয় দলের অন্যতম একজন সদস্য মাত্র। সামনেই এএফসি এশিয়ান কাপের (AFC Asian cup qualifier) যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ কলকাতায়। ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে খেলার সময় বাড়তি তাগিদ পাওয়া যায়। লিস্টনের ক্ষেত্রেও বিষয়টা অন্যথা নয়। মাঠ ভরাতে বাড়তি উদ্যোগ নিচ্ছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনও। জাতীয় দলে রয়েছেন সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। বাইচুং ভুটিয়ার পর যাঁকে দেশের সেরা স্ট্রাইকার মানা হয়। সুনীলের উপস্থিতিতেও নীল জার্সিতে গোল করার অন্যতম ভরসা এখন লিস্টন কোলাসো। ক্লাব ফুটবল হোক কিংবা জাতীয় দল, ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন।
এএফসি কাপে হ্যাটট্রিকের পর ম্যাচ বল-এ সতীর্থদের সই করে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। বলটা এখন তাঁর বুকে ‘বল’ও বাড়ায়। ফেডারেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিস্টন বলছেন, ‘এএফসি কাপে হ্যাটট্রিক করা সতীর্থদের সই সহ বলটি এখনও আমার সঙ্গেই রয়েছে। ওটা মনে করায়, আমার সাফল্যের পিছনে সতীর্থদের অবদান কতটা। শুধুমাত্র সেই ম্যাচেই নয়, বরং প্রতিটা ম্যাচ-প্রতিটা দিন। ফুটবলে ভালো ফল করতে সঙঘবদ্ধভাবে পারফর্ম করতে হয়। কেউ যদি ভাবে, একাই সব করে দেবে, সেটা ভুল ধারণা। সব কিছুই দলগত-দলের জন্য-দলের দ্বারা।’
যে কোনও দলগত খেলাতেই সাফল্য নির্ভর করে সকলের উপর। অনেকক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও পার্থক্য গড়ে দেয়। ফুটবলে কখনও গোলকিপার কিংবা রক্ষণের সৌজন্যে যেমন লজ্জাজনক হার থেকে বাঁচা যায়, তেমনই স্ট্রাইকাররা সঙ্গ দিলে তৈরি হয় সাফল্যের গাঁথা। অনেক ম্যাচেই বাকি সতীর্থদের সহযোগিতায় ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন লিস্টন। সমর্থকদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন ‘সুপারস্টার’। লিস্টন নিজে সেটা মানতে নারাজ। বরং বলছেন, ‘আমি কখনও নিজেকে সুপারস্টার মনে করি না। দলের অন্যতম একজন সদস্য মাত্র। যে নিজের ভূমিকাটুকু সাফল্যের সঙ্গে পালন করার জন্য পরিশ্রম করে চলেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পেশাদার ফুটবলার হিসেবে, আমার এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। জীবনে কখনোই নিজেকে সুপারস্টার কিংবা বিশেষ কেউ ভাবতে চাই না। মাটিতে পা রেখে, খেলায় উন্নতির জন্য পরিশ্রম করে যাবো।’
এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতার্জন পর্বে ভারতের গ্রুপে রয়েছে হংকং, আফগানিস্তান এবং কম্বোডিয়া। ফিফা ক্রমতালিকায় তারা ভারতের থেকে পিছিয়ে। ৮, ১১ এবং ১৪ জুন কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচ। ফিফা ক্রমতালিকা কতটা পার্থক্য গড়বে বলা কঠিন। তবে কলকাতায় ম্যাচ খেলাটা বিশাল ফারাক গড়বে বলেই মনে করেন লিস্টন। মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ প্রসঙ্গে বলছেন, ‘২০২৩ এএফসি এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। আরও পরিষ্কার করে বললে, এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। দল হিসেবে আমরা আত্মবিশ্বাসী। ঘরের মাঠে, বিশেষত কলকাতায় সমর্থকদের সামনে খেলা আমাদের কাছে বিরাট সুবিধার। দলের বাকিরাও এই তিন ম্যাচে সর্বস্ব দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।’