Image Credit source: Manoj Tiwary Instagram
ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে দাপুটে পারফরম্যান্সে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। এ বার কি ট্রফি আসবে?
দীপঙ্কর ঘোষাল
মন্ত্রীমশাইয়ের মুখে হঠাৎই রাফায়েল নাদাল-রজার ফেডেরার (Rafael Nadal-Roger Federer) প্রসঙ্গ! গত প্রায় দু’দশকে তিনবার রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ফাইনাল খেলেছে বাংলা। চায়ের কাপ আর ঠোঁটের দূরত্ব মেটেনি। ২০১৯-২০ মরসুমেও ফাইনাল খেলেছে বাংলা (Bengal)। মরসুমের শুরু ভালো হলেও ফাইনালে এমন কী হয় যে, ট্রফির সঙ্গে দূরত্ব থেকেই যায়? এ বার রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ পর্বে সব গ্রুপের মধ্যে সেরা হয়ে নকআউটের যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলা। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে দাপুটে পারফরম্যান্সে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। এ বার কি ট্রফি আসবে? সেই প্রসঙ্গেই মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) মুখে রাফা-রজার প্রসঙ্গ। বলছেন, ‘যারা বাইরে থেকে খেলা দেখে, তাদের পক্ষে বোঝা মুশকিল। মাঠে আমরা একশো শতাংশই দিই। ট্রফি জেতার জেদই থাকে। যে কোনও খেলায় এমন হতেই পারে। ওঠা-নামা থাকবেই। রজার ফেডেরার এবং রাফায়েল নাদালেরও এমন হয়। রজার ফেডেরারকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, রোলাঁ গারোয় নাদালের কাছে কেন এতবার হেরেছে? ফেডেরারেরও খারাপ লাগবে। অনেক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছে। বিশেষ দিনটাতে কেমন খেলছে, নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছে, সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ক্রিকেটেও যে দলটা ফাইনালে ওঠে. তারা সেরা ক্রিকেট খেলেই উঠে আসে। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। সোজা কথা বললে, গত চার পাঁচ বছর যাদের উপর ভরসা রাখা হয়েছে, তারা অনেক পরিণত। ভালো পারফর্ম করছে। ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে। আশা তখনই করা হয়, যখন যোগ্যতা থাকে। এ বারও সেই আশা, বিশ্বাস রয়েছে। যে ভাবে এই ম্যাচটা খেলেছি, তার ৭০ শতাংশও যদি সেমিফাইনালে খেলতে পারি, নিশ্চয়ই ফাইনালে উঠব, চ্যাম্পিয়ন হব।’
মনোজ যাঁদের সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, তাঁরা প্রায় সবাই অবসর নিয়ে ফেলেছেন। এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস কী থেকে পান? বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে ‘টিভি নাইন বাংলা’কে মনোজ বললেন, ‘বাংলাকে রঞ্জি ট্রফি জেতাতে হবে, এই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। আমি নিজে তিনটে ফাইনাল খেলেছি ঠিকই, চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এ বার বাংলাকে রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্নটা পূরণ করতে চাই। নিজে ভালো খেলতে পারলে, দল জিতলে খুবই ভালো লাগে।’
এক দিকে মন্ত্রীত্ব। অন্য় দিকে ক্রিকেট। এই দুই জগতের সঙ্গে সেতু বাঁধার কাজটা করেন কী ভাবে? ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ১৩৬ করেছেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক। বাইশ গজে যে ভাবে সাবলীল ব্যাট করেছেন, মন্ত্রীত্বও সে ভাবে সামলাচ্ছেন তিনি। মনোজের কথায়, ‘মনের জোর, তাগিদ, ইচ্ছাশক্তি যেমন দরকার, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, স্ত্রী-পরিবারের সমর্থন। খেলা, রাজনীতি, ক্রীড়াদপ্তর, পরিবারের দায়িত্ব, সব কিছু তখনই ম্যানেজ করা যায়, যখন স্ত্রীর সমর্থন থাকে। বাড়িটাকে ও-ই সামলে রাখে। পরিবারের এই সব বিষয়গুলো আমাদের চোখ এড়িয়ে যায় অনেক অনেক। বাইরের চিন্তা মাথায় থাকলে মাঠে ভালো পারফর্ম করা যায় না। ‘হোম’ মিনিস্ট্রি সাপোর্ট করলে বাকি সব মানিয়ে নেওয়া যায়।’
প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারে ২৮তম শতরান এল ব্যাটে। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসেও ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন। আরও অনেক বেশি ফোকাসড দেখাচ্ছে দলের অভিজ্ঞতম ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি। বলছেন, ‘ব্যাটসম্যানদের কাছে এক বলের খেলা। ফোকাস নড়ে গেলে উইকেট পড়ে যাবে। প্রত্যেকটা বলেই ফোকাস ধরে রাখতে হয়। শুধু ক্রিকেটের ক্ষেত্রেই নয় জীবনের অন্য দিকেও, ফোকাস ধরে রাখা জরুরি।’