Image Credit source: Twitter
একটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ বদলে দিতে পারত অনেক কিছুই। বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখতে না পারলেও এশীয় চ্যাম্পিয়নশপের এই সাফল্য নতুন প্রজন্মের বাচ্চাদের ক্রিকেট, ফুটবল, হকির পাশাপাশি বাস্কেটবলের প্রতিও আগ্রহী করে তুলবে।
দোহা: সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। আশা জেগেছিল দেশবাসীর। কিন্তু অল্পের জন্য হল না স্বপ্নপূরণ । প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব ১৭ বাস্কেটবল বিশ্বকাপে পা রাখার সৌভাগ্য হল না ভারতের। রবিবার দোহায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৬ এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপের (U 16 Basketball Team) শেষ আটের ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল জাপান। ধারে ভারে এগিয়ে থাকা জাপানিদের বিরুদ্ধে ৭ পয়েন্টে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে দেশের ছোটরা। এই ম্যাচ জিতলেই ইতিহাস গড়ে ফেলতে পারত লোকেন্দ্র, জয়দীপরা। মিলত অনূর্ধ্ব ১৭ বাস্কেটবল (U17 Basketball World cup) বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ। বিশ্বকাপ স্বপ্নপূরণ না হলেও এশীয় বাস্কেটবল (Basketball) চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে ছাপ ফেলেছে ভারতীয়দের পারফরম্যান্স। টুর্নামেন্টে সেরা পঞ্চম স্থানে শেষ করে দেশের বিমান ধরেছে লোকেন্দ্ররা।
অতীতে বয়সভিত্তিক এই বাস্কেটবল টুর্নামেন্টে ভারতের সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০০৯ সালে, দশম স্থান অধিকার করা। ১৩ বছর আগে সে বারই প্রথম এশিয়ান বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেছিল ভারত। পরবর্তীকালে ২০১১ সালে ফের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় টিম ইন্ডিয়া। লিগ স্টেজে পরপর ম্যাচ জিতলেও শেষ আটের ঘরে পৌঁছতে পারেনি । সে বার দ্বাদশ স্থানে প্রতিযোগিতা শেষ করে দেশের অনূর্ধ্ব ১৬ বাস্কেটবল দল । অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাপিয়ে গেল এবার। বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৫০ নম্বরে থাকা ভারত ইরান ও কোরিয়াকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল। বর্তমানে ব়্যাঙ্কিংয়ে ১৭ নম্বরে থাকা ইরানকে ৮৩-৭৮ ব্যবধানে হারিয়ে দেয় ভারত। পরের শিকার ২০১৫ সালে এই টুর্নামেন্টের বিজয়ী এবং মোট তিনবারের মেডেলিস্ট কোরিয়া।
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল ইন্দোনেশিয়া । বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৫০ নম্বরে থাকা ভারত ব়্যাঙ্কিংয়ে নীচে থাকা ইন্দোনেশিয়াকে ৯৭-৫৩ ব্যবধানে প্রায় উড়িয়ে দেয় । তাতেই কাতারের রাজধানীতে শেষ আটের জায়গা পাকা করে ফেলে ভারত । এই জয়ের পিছনে লোকেন্দ্র সিং, জয়দীপ রাঠৌর এবং কুশল সিং ত্রয়ীর কথা না বললেই নয় । ৯৭ পয়েন্টের মধ্যে তিনজনের মিলিত স্কোর ৮৩ । তার মধ্যে লোকেন্দ্রর ৩০ পয়েন্ট । যা এ বারের টুর্নামেন্টের কোনও এক ম্যাচে করা সবচেয়ে বেশি স্কোর । জয়দীপের ২৭ এবং কুশলের ২৬ । এই তিন প্লেয়ারের দুরন্ত পারফরম্যান্সে জেরেই ইন্দোনেশিয়া ছিটকে যায় । শেষ আটে জাপানি বাধা অতিক্রম না করতে পারলেও টুর্নামেন্টের ১৩ বছরের ইতিহাসে এটাই ভারতের সেরা পারফরম্যান্স।
একটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ বদলে দিতে পারত অনেক কিছুই। ইতিহাস গড়া তো হতই ভারতীয় খেলাধুলোর মোড় হঠাৎ করেই বদলে যেত। এনবিএ নিয়ে এ দেশেও উন্মাদনা কম নেই। আমেরিকান বাস্কেটবল লিগের বিভিন্ন বড় টিম ভারতের বাজার ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে । এখানে অ্যাকাডেমিও গড়েছে কেউ কেউ। বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখতে না পারলেও এশীয় চ্যাম্পিয়নশপের এই সাফল্য নতুন প্রজন্মের বাচ্চাদের ক্রিকেট, ফুটবল, হকির পাশাপাশি বাস্কেটবলের প্রতিও আগ্রহী করে তুলবে।