ইডেনে ঋদ্ধিমান সাহা।
ঋদ্ধির কাছে কতটা আবেগের দিন। একটা ঘটনার উদাহরণে সব পরিষ্কার করে দিলেন।
কলকাতা: একরাশ অভিমান। তবে সেটা বাংলার জন্য নয়। বাংলার এক ক্রিকেট কর্তার জন্য। কিছুক্ষণ আগেই ইডেন গার্ডেন্সে সিএবি (CAB) সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া এবং সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিটিং করেছেন। বেরিয়েছেন নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়ে। হাতে খাম। সেটায় ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ লেখা। ক্যামেরার ঝলকানিতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেন। মজা করে বলেই ফেলেন, ‘এত আলো এবং শব্দের জন্যই আমি নাইট ক্লাবে যাই না।‘ এতদিন আলোচনায় ছিলই। সরকারিভাবে বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার হলেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। ১৫ বছর, ১২২ ম্যাচ। সময়টা কম নয়। তবে ভবিষ্যতের দরজা খোলা রাখছেন। বাংলা যদি ডাকে, ক্রিকেটার হোক বা কোচ, যে কোনও ভূমিকাতেই দেখা যেতে পারে। ঋদ্ধি বলছেন, ‘সবাই সবকিছু জানে, বলার কিছু নেই। ফ্রি হওয়ার পর এখানে আসার কথা ছিল। প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। এখন অন্য রাজ্যে খেলার জন্য প্রস্তুত। তবে বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল বলাটা ঠিক কী না, জানি না। এখানে মেনশন করা আছে ২০২৩ অবধি।‘
বাংলার হয়ে অনেক স্মৃতি, ঘটনা, ১৫ বছর ধরে। কোনও বিশেষ স্মৃতি উল্লেখ করছেন না। বরং শেষ বেলায় অপ্রত্যাশিত ঘটনাই যেন মনে গেঁথে রয়েছে। সিএবি-র কি একটু সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত ছিল না? অভিমানী ঋদ্ধি বলছেন, ‘এটা সিএবি-কে জিজ্ঞেস করলেই ভাল। আমার তরফে আমি অনুরোধ করেছিলাম। ওনারাও আমাকে খেলার জন্য অনুরোধ করেছিল। এতদিন খেলার পর যে জিনিসটা ঘটেছে, আমি প্রত্যাশা করিনি। হয়তো সে কারণেই আজ এনওসির জন্য আসা। আজকেও অনেকবারই বলেছিল। সিদ্ধান্ত হয়েই ছিল। বাধ্য হয়ে আমিও এনওসি নিয়েছি।‘
এবার কোন রাজ্যের হয়ে খেলবেন তা এখনও ঠিক হয়নি বলেই জানালেন। বাংলার সঙ্গে কোনও ইগোর লড়াইয়েই কি শেষ অবধি এমন ঘটনা! ঋদ্ধি কিছুটা যেন শুধরে দিয়ে বললেন, ‘আমি কখনও বাংলার সঙ্গে ইগো করি না। এটা ব্যক্তিগত ভাবে হয়েছে, বাংলা ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গে নয়। বাংলা সাফল্য পাক, সেটাই আমি চাই। পরবর্তীকালে বাংলার দরকার হলে, পরিস্থিতি বদলালে, আমিও ভাবনা চিন্তা করব।‘
ঋদ্ধির কাছে কতটা আবেগের দিন। একটা ঘটনার উদাহরণে সব পরিষ্কার করে দিলেন, ‘বাংলা খেলার জন্যই মেট্রো রেলের চাকরি ছেড়েছিলাম। অনেকে হয়তো সেটা জানে না। সে সময় অনেকেই বলেছিল, এমন চাকরি কেউ ছাড়ে নাকি! আমি অবশ্যই চাই বাংলার ভাল হোক। সেমিফাইনালের সময় অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তাদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছি। এই সম্পর্ক পরেও থাকবে।‘
ঋদ্ধির টুপিতে লেখা কোচ। বাংলার কোচ হওয়ার সুযোগ এলে! ‘সিএবি থেকে ভাবলে, আমিও চিন্তাভাবনা করব।‘ কিছুদিন আগে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন। সে সময়ও বোর্ড সভাপতির উপর অভিমান ছিল। তাঁর আশ্বাস সত্ত্বেও জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া মেনে নিতে সমস্যা হয়। বাংলা ছাড়া নিয়ে আর কথা হয়নি। বলছেন, ‘মহারাজদার সঙ্গে অনেকদিন কথা হয়নি। সাধারণ কথা হত না, এটা নিয়ে কেনই বা হবে।‘