Image Credit source: TWITTER
অনফিল্ড আম্পায়ারের কাছে ছিল ওয়াকি টকি! পাঁচটি এইচডি ক্যামেরা! ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচারের সময় নকল দর্শকদের গর্জনও শোনানো হয়েছে। রাশিয়ান বুকিদের প্রলোভিত করতে সমস্ত সেট আপ রাখা হয়েছিল।
আহমেদাবাদ: আয়োজনে কোনও খামতি নেই। এইচ়ডি ক্যামেরা, ধারাভাষ্যের জন্য ‘হর্ষ ভোগলে’, এমনকি অফিসিয়াল টেলেগ্রাম চ্যানেলও। গুজরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (IPL)! তবে সেটা আসল নয়। জাল আইপিএল (Fake IPL) ঘিরেও এলাহি আয়োজন। টেলেগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে বেটিংও হচ্ছে। এমনকি রাশিয়ানরাও বেটিং করছেন এই আইপিএলে! কিন্তু প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ করা গেল না। নক আউটের আগেই পুলিশের জালে, জাল আইপিএলের কান্ডারিরা। গুজরাতের (Gujarat) একটি ফার্ম হাউসে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নিজেদের নিজস্ব চ্যানেলে ম্য়াচের সম্প্রচারও হয়েছে। একজন মিমিক্রি আর্টিস্টকেও ঠিক করা হয় ধারাভাষ্যের জন্য। যিনি ‘হর্ষ ভোগলের’ আওয়াজ নকল করে ধারাভাষ্য় দেন। একটা পূর্ণাঙ্গ আইপিএলই চলছিল। রাশিয়ার ভের, ভোরোনেজ, মস্কোর মতো শহর থেকে বেট করা হয়েছে এই প্রতিযোগিতায়।
জাল এই আইপিএল শুরু হয় আসল আইপিএল শেষ হওয়ার পরই। এবারের আইপিএলে নতুন দুটি দল অংশ নিয়েছিল। গুজরাত টাইটান্স এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস। হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে প্রথম বারই চ্যাম্পিয়ন গুজরাট। তারপরই শুরু হয় গুজরাতের মেহসানায় এই নকল আইপিএল। ফার্মের শ্রমিকদের ক্রিকেটার হিসেবে খেলানো হয়। সঙ্গে নেওয়া হয় কিছু কর্মহীন যুবককে। আইপিএলের দলের নকল জার্সি। চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এমনকি আসল আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্সও অংশ নিয়েছে। অনফিল্ড আম্পায়ারের কাছে ছিল ওয়াকি টকি! পাঁচটি এইচডি ক্যামেরা! ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচারের সময় নকল দর্শকদের গর্জনও শোনানো হয়েছে। রাশিয়ান বুকিদের প্রলোভিত করতে সমস্ত সেট আপ রাখা হয়েছিল। মিরাট থেকে একজন ধারাভাষ্যকার জোগার করা হয়, যিনি হর্ষ ভোগলের আওয়াজ এবং কথা বলার ধরনও নকল করতে পারেন। জাল টুর্নামেন্টে আসলের স্বাদ আনতে কেনও ত্রুটি রাখেনি আয়োজকরা।
মেহসানা পুলিশ এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে। হাওয়ালা নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। নকল আইপিএল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও নানা মন্তব্য করেছেন। মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারপার্সন লিখেছেন, ‘অনবদ্য! এরা যদি টুর্নামেন্টের নাম মেটাভার্স আইপিল নাম দিত, হয়তো বিলিয়ন ডলারও আয় করতে পারত!’ হর্ষ ভোগলে লিখেছেন, ‘হাসি থামাতে পারছি না। ধারাভাষ্যটা শুনতে পারলে ভাল হত। এই নকল আইপিএলের প্রধান উদ্যোক্তা শোয়েব দাবড়া, রাশিয়ায় একটি পানশালায় আট মাস কাজ করেছিলেন। সেখানকার পরিচিতি কাজে লাগিয়েই বেটিং করেছেন। মেহসানা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘শোয়েব একটি ফার্ম ভাড়া করে। হ্যালোজন দিয়ে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা। খেলোয়াড়দের ম্যাচ প্রতি ৪০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ক্যামেরাম্যান ঠিক করে এবং আইপিএল দলগুলির নকল জার্সি কেনে।’