অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়: আপনি প্রথমে যখন কোনো ব্যবসা শুরু করতে যাবেন তখন আপনার লোনের প্রয়োজন হতে পারে।
এই লোন অনেক সময় আমরা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে থাকি। মূলত প্রয়োজনের তাগিদে আপনাকে এই লোন নিতে হয়।
আপনার যদি খুব দ্রুত টাকার দরকার হয় তাহলে আপনি অনলাইন লোন নিতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইনে লোন আবেদন করার প্রক্রিয়া বাংলাদেশে শুরু হয়েছে।
কথায় আছে বিপদে বন্ধুর পরিচয়। তাই আপনি যখনই আর্থিক সংকটে পড়বেন তখনই আপনার আর্থিক বিপদে বন্ধুর মতো সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে অনলাইন লোন নামের এই বন্ধুটি।
মনে রাখবেন এই অনলাইন লোন গুলো আমাদের নিতে হবে কোনো না কোনো ব্যাংক হতে। আপনি যেকোনো ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
চলুন অনলাইনে লোন নেওয়ার আগে নিচে থেকে থেকে জেনে আসি ব্যাংক লোন কি?
ব্যাংক লোন কি? (What is bank loan)
লোন হলো ইংরেজি শব্দ, যার বাংলা অর্থ ঋণ। তাহলে, ব্যাংক লোন এর বাংলা অর্থ হলো ব্যাংক ঋণ।
ব্যাংক যখন গ্রাহকের আর্থিক বিপদে নিদিষ্ট সময়ের জন্য সুদের উপর ভিত্তি করে অর্থ প্রদন করে এবং সেই অর্থ সপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে সুদ সহ ব্যাংক কতৃপক্ষকে ফেরত দিতে হয়।
এই পদ্ধতিতে ব্যাংক থেকে আপনি যে অর্থ গ্রহণ করবেন বা ব্যাংক আপনাকে যে অর্থ প্রদান করবে তাকে ব্যাংক লোন বা ব্যাংক ঋণ বলা হয়।
বাংলাদেশে ব্যাংক কত ধরনের লোন দেয়?
বাংলাদেশের ব্যাংক থেকে আপনি অনেক ধরনের লোন বা ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। যে গুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
- কৃষি লোন
- পার্সোনাল লোন
- হোম লোন
- বিজনেস লোন
- অটো লোন
- স্টুডেন্ট লোন
- প্রবাসী লোন
- স্বল্প মেয়াদি লোন
- দীর্ঘমেয়াদি লোন
অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় | সহজ লোন বাংলাদেশ
বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইনে খুব সহজে আপনি লোন নিতে পারবেন। ব্যাক্তিগত বা ব্যবসার কাজে অনেক ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন এবং এই লোন নিদিষ্ট শর্তঅনুযায়ী সময়মত পরিশোধ করতে হবে।
এখান থেকে কয়েক বছর আগে ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে ব্যাংকে গিয়ে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হতো এবং বিভিন্ন জায়গা গিয়ে সময় নষ্ট করতে হতো।
কিন্ত, বর্তমানে আপনাকে আর সেই কষ্ট করতে হবে না এবং সময় ও আর নষ্ট করতে হবে না। কেননা আপনি ঘরে বসে অল্প সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করে লোন নিতে পারবেন।
আপনি যদি দ্রুত সময়ে বাংলাদেশে অনলাইনে লোন নিতে চান তাহলে প্রথমে ভিজিট করতে হবে এই http://forms.mygov.bd/ ওয়েবসাইটে।
তারপর অনলাইনে আবেদন করুন এই অপশনে ক্লিক করুন। উপরের ছবিতে যেমন আপনি দেখতে পাচ্ছেন।
এবার আপনি উপরে ছবির মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনি যে মাধ্যমে বাংলাদেশে অনলাইনে লোন নিতে চান অপশনে ক্লিক করে সঠিক নিয়ম মেনে ফরমটি পূরণ করুন।
আশাকরি আপনি বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। উপরের আবেদন ফরম পূরণের মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংক থেকে অনলাইন online loan বা ব্যাংক লোন নিতে পারবেন।
অনলাইন আবেদন ছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস তৈরি হয়েছে। যার মাধ্যমে অনলাইন মোবাইল লোন বাংলাদেশ নিতে পারবেন।
এই লোন গুলো হলো – এম পকেট, ক্রডিট বি, লেজি পে, ইন্ডিয়াবুলস ধানি, জেস্ট মানি অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে অনলাইনে লোন নিতে পারবেন।
অনলাইনে লোন পাওয়ার জন্য আবেদন করার নিয়ম কি? | ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
Online loan আপনি ব্যাক্তিগত বা ব্যবসার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মোটা সুদের উপর ভিত্তি করে নিতে পারবেন।
এই লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম বা শর্ত অনুযায়ী মেনে কাজ করতে হবে। আপনার যদি মনে হয় আপনি এই শর্ত গুলো মানতে পারবেন তাহলে আপনি লোন আবেদন করুন।
তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি অনলাইন ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে।
- ব্যাংক হতে লোন নিতে হলে প্রথমে লোনের আবেদন ফরম এনএফ (NF) সঠিক ভাবে পূরণ করুন।
- আপনি কত টাকা লোন নিতে চাচ্ছেন তার পরিমান ফরমে উল্লেখ করুন।
- আপনাকে যে সকল কাগজ-পত্র গুলো জমা দিতে হবে – নিজের রঙ্গিন ছবি, ভোটার আইডি ফটোকপি, অফিসের আইডি কার্ড, বেতনের সার্টিফিকেট, চেকবই, বাসার বিলের কপি, ইনকাম ট্যাক্স, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।
- ব্যাংকে চেক ইনস্টল করে সুদের হার যাচাই করতে হবে এবং ফরম্যাট সাবমিট করতে হবে।
- এরপর ব্যাংক থেকে আপনাকে কল করা হবে এবং সেখানে আপনাকে লোন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হবে।
- তারপর ব্যাংক কতৃপক্ষ আপনাকে যাচাই করবে আপনি সঠিক ব্যাক্তি কি না।
- সকল ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করার আপনাকে লোক দেওয়া হবে।
জরুরী লোন পাওয়ার সেরা ব্যাংক গুলো কি কি?
আমি আগেই বলেছি বাংলাদেশে লোন পাওয়ার জন্য অনেক গুলো ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে জরুরী লোন পাওয়ার জন্য সেরা কিছু ব্যাংক রয়েছে।
চলুন নিচে থেকে এই ব্যাংক গুলোর নাম জেনে আসি –
- বাংলাদেশ ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক
- ইসলামি ব্যাংক
- সোনালি ব্যাংক
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ডাচ বাংলা ব্যাংক
- ব্রাক ব্যাংক
- সিটি ব্যাংক
- ইবিএল ব্যাংক
- আল-আরাফা ব্যাংক
- ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক
- প্রাইম ব্যাংক
- এশিয়া ব্যাংক
- এবি ব্যাংক ইত্যাদি
অনলাইন লোন অ্যাপস ইন বাংলাদেশ
আমাদের বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত অনলাইন লোন অ্যাপস চালু হয়নি। তবে, খুব দ্রুত সময়ে এই অনলাইন লোন অ্যাপ গুলো চালু হবে।
নিচে যে online loan apps গুলো উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো শুধুমাত্র ভারতে চালু হয়েছে। চলুন নিচে থেকে এই অ্যাপস গুলোর সম্পর্কে জেনে আসি।
(১) ক্রেডিট বি (Kreditbee)
ক্রেডিট বি অনেক দ্রুত লোন পাওয়ার সেরা একটি অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি ৫ মিনিট থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যেকোনো জায়গা থেকে লোন নিতে পারবেন।
মনে রাখবেন, ক্রেডিট বি অ্যাপের মাধ্যমে সর্বনিন্ম ১০,০০০ টাকা থেকে সর্বচ্ছ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
(২) জেস্ট মানি (ZestMoney)
জেস্ট মানি একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই অনলাইনে EMI ব্যবহার করে শপিং করার সুবিধা পাবেন।
আপনি মূলত জেস্ট মানি অ্যাপের মাধ্যমে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল সহ অরো অন্যান্য জিনিসপত্র কেনার জন্য লোন নিতে পারবেন।
(৩) এম পকেট (Mpokket)
mpokket একটি কার্যকারী মোবাইল অ্যাপ। এখানে থেকে যেকোনো সময়ে অনেক দ্রুত লোন নিতে পারবেন। তবে, এখান থেকে শুধুমাত্র ভারতের স্টুডেন্টরা লোন নিতে পারবেন।
তাই আপনি যদি একটা ভারতের স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে এম পকেট অ্যাপ ব্যবহার করে সহজে লোন নিতে পারবেন।
(৪) লেজি পে (Lazy Pay)
অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে সেরা হলো লেজি পে। বর্তমানে এই অ্যাপটি ভারতে শীর্ষ লোন অ্যাপ।
এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি ১০,০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। আপনার যদি জরুরী লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে এই অ্যাপের মাধ্যমে নিতে পারবেন।
(৫) ইন্ডিয়াবুলস ধানি (Indiabulls Dhani)
ইন্ডিয়াবুলস ধানি হচ্ছে একটি ব্যাক্তিগত লোন অ্যাপ্লিকেশন। এখান থেকে আপনি ১ হাজার টাকা থেকে আরম্ভ করে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় এবং ভারতে কোন কোন অ্যাপের মাধ্যমে আপনি লোন নিতে পারবেন।
ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে যদি আপনার মনে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহলে নিচের কমেন্টে অবশ্যই লিখে জানাবেন।
শেষে লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই ফেসবুকের অন্যান্য বন্ধুদের জন্য শেয়ার করবেন।