মহিলা অ্যাথলিটদের বিশেষ চ্যালেঞ্জ ‘পিরিয়ডস’ নিয়ে কী বললেন ঝুলন?


মহিলা অ্যাথলিট হওয়া সহজ কাজ নয়। মহিলা অ্যাথলিটদের শারীরিক দিক থেকে ফিট থাকার জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ তো থাকেই, তার ওপর মাসিকের (Menstrual Cycles) দিনগুলিতে টুর্নামেন্ট পড়ে গেলে তো আর কথাই নেই।

Jhulan Goswami: মহিলা অ্যাথলিটদের বিশেষ চ্যালেঞ্জ ‘পিরিয়ডস’ নিয়ে কী বললেন ঝুলন?

নয়াদিল্লি: কিশোরী বয়স থেকেই মেয়েদের পিরিয়ডসের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। প্রতি মাসেই মহিলাদের এই শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া হয়ে থাকে। মাসের ওই বিশেষ দিনগুলিতে অস্বস্তি ছাড়াও অনেক মহিলাই পেটে ব্যাথা অনুভব করেন। অনেক সময় কারও কারও ক্ষেত্রে পেটে ব্যাথার মাত্রাটাও সহ্যের বাইরে চলে যায়। তারপরও তারা সব কাজ করে যান। আর এই মহিলা যদি কোনও অ্যাথলিট হন? তা হলে… মহিলা অ্যাথলিট হওয়া সহজ কাজ নয়। মহিলা অ্যাথলিটদের শারীরিক দিক থেকে ফিট থাকার জন্য একাধিক চ্যালেঞ্জ তো থাকেই, তার ওপর মাসিকের (Menstrual Cycle) দিনগুলিতে টুর্নামেন্ট পড়ে গেলে তো আর কথাই নেই। যন্ত্রনা নিয়েই তাঁরা খেলেন। এ ব্যপারেই সদ্য ভারতের মহিলা তারকা ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী (Jhulan Goswami) খোলামেলা কথা বললেন। ‘পিরিয়ডস’ হল মহিলা অ্যাথলিটদের জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জের। এমনটাই বলেছেন চাকদা এক্সপ্রেস।

ভারতের প্রাক্তন হেড কোচ ডব্লিউ ভি রমনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘ডব্লিউভি শো’-তে ঝুলন বলেন, “আমি যখন ছোট ছিলাম, আমি এই বিষয়ে আলোচনাও করতে পারিনি। আমি এটা শুধু নিজের মধ্যেই রাখতাম, কোচদের বলতে পারতাম না। চুপচাপ লড়াই করে যেতাম। এই বিষয়ে সঠিকভাবে গবেষণা করা উচিত। উন্নততর বিজ্ঞান রয়েছে। এবং যদি আমরা টুর্নামেন্টের সময় ওই মাসিক চক্রর সামঞ্জস্য করার একটি উপায় খুঁজে পাই, তা হলে সেটা মহিলা অ্যাথলিটদের জন্য খুবই ভালো হবে।”

লর্ডসে ২৪ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেই অবসর নিতে পারেন ঝুলন। ভারতের অন্যতম সফল মহিলা ক্রিকেটার মহিলা অ্যাথলিটদের মাসিকের ব্যপারে বলেন, “এটি একজন মহিলা অ্যাথলিটের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যদি এটি (পিরিয়ড) প্রতিযোগিতার সময় হয়, তবে মহিলা অ্যাথলিটের জন্য কাজে মনোনিবেশ করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। যার জন্য আপনাকে মানসিকভাবে খুব শক্তিশালী হতে হবে। মাসিকের সময়ে, এমনটা অনেক সময় ঘটে যে আপনি খেলায় বেশি মনোনিবেশ করতে পারন না, এবং বাকিরা এটা বুঝতে পারে না। এবং তারা প্রশ্ন করতে থাকে, ‘আরে ইয়ার, ইসকো কেয়া হো গ্যায়া?’ (এর আবার কী হল?) কিন্তু তারা এর পেছনে থাকা আসল কারণটা জানে না। এটাই হয় সারা বিশ্বের একাধিক মহিলা ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে এবং সেই কারণেই তাঁরা বিশেষ।”

একইসঙ্গে ঝুলন গোস্বামী ব্যাখ্যা করেছেন, মাসিকের সময় একজন মহিলাকে কীভাবে হরমোনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এবং সেই বিশেষ দিনগুলিতে লড়াই করতে ঠিক কতটা সাহস লাগে। তিনি বলেন, “এট এমন একটা জিনিস, যার ফলে শরীরে ব্যথা এবং যন্ত্রণা হয়। কিন্তু এই ধরনের ব্যথা এবং শরীরের পরিবর্তনগুলি পেরিয়ে আসাটাই আসল চ্যালেঞ্জ। ম্যাচের দিনগুলিতে মাসিক হলে, সেটা আরও কঠিন হয়। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সাহসের প্রয়োজন। এবং সেই সময় ক্রিকেট মাঠে ৬ ঘন্টা খেলা একটা বিরাট কাজ। সেই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাওয়া সমস্ত মেয়েদেরকে আপনাদের যথেষ্ট কৃতিত্ব দিতেই হবে। ওই দিনগুলিতে আপনি একটি রুমে থাকতে চান। বিশ্রাম নিতে চান। কিন্তু আমরা তা করতে পারি না। আমরা বিছানায় শুয়ে থাকতে পারি না। কোনও একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকলে আমাদের সেখানে ৬ ঘণ্টা থাকতেই হয়। আমরা অজুহাত দিয়ে বসে থাকতে পারি না। এটাই স্বাভাবিক। এবং আমরা এটা মেনেও নিয়েছি। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিই। এর জন্য কোনও অজুহাত দেওয়া যায় না এবং এটাই আমাদের মহিলা ক্রীড়াবিদদের সৌন্দর্য।”

এই খবরটিও পড়ুন



মহিলা অ্যাথলিটদের প্রতি মাসের ওই বিশেষ দিনগুলিতে যেন যন্ত্রনা কম হয়, এই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন, বলে মনে করেন ঝুলন। তাঁর কথায়, সিস্টেমটাকে উন্নত করার জন্য গবেষণার পথে হাঁটা একান্তই জরুরি। গবেষণা থেকে পাওয়া ফলাফলের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। চাকদা এক্সপ্রেস জানান, বর্তমানে এই বিষয়টি নিয়ে মানুষ ভাবছে, এবং এটা জানতে পেরে তিনি খুশি।

Leave a Reply