প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একশো উইকেট। ৪ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট। বর্তমানে বাংলার পেস আক্রমণের বড় ভরসা মুকেশ।
Image Credit source: TWITTER
কলকাতা : দীর্ঘদন ধরে বাংলার হয়ে খেলছেন মুকেশ কুমার। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছেন। অবশেষে ধারাবাহিকতার পুরস্কার। ভারত এ দলে সুযোগ পেয়েছেন বাংলার (Bengal Cricket) পেসার। ভারত সফরে আসছে নিউজিল্যান্ড এ দল। তিনটি মাল্টি ডে ফরম্যাট (চার দিনের) ম্যাচ খেলবে তারা। বুধবার রাতে প্রিয়াঙ্ক পাঞ্চালের নেতৃত্বে ভারত এ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বোর্ড। বাংলা অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের (Abhimanyu Easwaran) সঙ্গে স্কোয়াডে রয়েছেন মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)। এই প্রথম ডাক পেলেন বাংলার পেসার। বিহার থেকে বাংলা। এবার ভারত এ স্কোয়াডে। সফরটা সহজ ছিল না মুকেশ কুমারের। বিহারের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ স্তরে খেলেছেন। দুর্ঘটনাক্রমে কলকাতায় আসতে হয় মুকেশকে। তাঁর বাবা কলকাতায় ট্যাক্সি চালাতেন। মুকেশকেও ডেকে পাঠিয়েছিলেন কলকাতায় কাজের জন্য।
কলকাতায় দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাবের হয়ে খেলা দিয়ে শুরু। বাংলা দলে এখন নিয়মিত। বাংলা দলে সুযোগের পর সিনিয়র পেসার অশোক দিন্দার থেকে পরামর্শ পেয়েছিলেন মুকেশ। দিন্দা তাঁকে বলেছিলেন, ম্যাচে ভালো পারফর্ম করলে ড্রেসিংরুম ওর জন্য আনন্দে মেতে উঠবে। তবে এই ভালো পারফরম্যান্স এক ম্যাচে সীমাবদ্ধ না থাকাই শ্রেয়। সে কথা আজও ভোলেননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একশো উইকেট। ৪ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট। বর্তমানে বাংলার পেস আক্রমণের বড় ভরসা মুকেশ। শুরুর দিনগুলি অবশ্য ভুলছেন না বাংলার এই পেসার। বলছেন, ‘প্রথম ডিভিশনের ক্লাবে খেলছিলাম সেই মরসুমে। অবনমন বাঁচানোর লড়াই ছিল। একই দিনে আমার ট্রায়ালও ছিল। ভাগ্য বদলাতে ট্রায়াল দেব, মনে মনে এই প্রতিজ্ঞাই ছিল। রণ স্যার (রণদেব বোস) না থাকলে আমার কেরিয়ার হয়তো এই পথে এগতো না। লাইনে অনেকেই ছিল। সামনের জনকে বলে ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে বড়জোর ১০ মিনিট। এসে দেখছি কেউ নেই। তালিকায় আমার নামের পাশে ক্রস দেওয়া। রণ স্যারকে অনুরোধ করায় তিনি আমাকে বোলিং করতে বলেন।’
বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদানও ভুলছেন না মুকেশ। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তখন বাংলা ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি। আর্থিক সমস্যা থাকা মুকেশের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সৌরভই। মুকেশ বলছেন, ‘ছয় ভাই বোনের মধ্যে আমি সকলের ছোট। আর্থিক দিক দিয়ে অনেক সমস্যা ছিল। আমার তখন কাজের খুবই প্রয়োজন। নানা জায়গায় চাকরির চেষ্টা করেছি। খেলার মধ্যেও প্রভাব পড়ত। নানা ভাবনা চিন্তা। সে সময় রণ স্যার বাংলা ক্রিকেট সংস্থার সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আমার থাকা, খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করে দেন।’