‘শেষ ওভারে ১৫ রান প্রয়োজন হলেও জেতাতাম’, হার্দিকের আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ নেটপাড়া


রবিবার তাঁর স্বপ্নের ম্যাচে ২৫ রানে তিনটি উইকেট নেওয়ার পর মহম্মদ নওয়াজের বলে ছয় হাঁকিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করেন হার্দিক। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেললেন ১৭ বলে ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস।

আত্মবিশ্বাসী হার্দিক

Image Credit source: নিজস্ব চিত্র

দুবাই: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই স্নায়ুর চাপ। সেটা সামলে খেলতে পারবে যে টিম বা খেলোয়াড় তাঁরাই নায়ক। রবিবার এশিয়া কাপ অভিযানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই সমীকরণকে দারুণভাবে সামলে দিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। বিরাট কোহলি তাঁর শততম টি-২০ ম্যাচে ২৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেললেন। ব্য়াটে-বলে অলরাউন্ড পারফর্ম করে মেগা ম্যাচ জেতাতে কোনও কসুর রাখলেন না হার্দিক। শেষ ওভারে জাডেজার উইকেট পতন বুকের ধুকপুকানি বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুণ। জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ৭ রান। ওভারের চতুর্থ বলে ছয় হাঁকিয়ে ম্যাচের শুভ সমাপ্তি ঘটান হার্দিক। পাঁচবছর আগে এশিয়া কাপের মঞ্চ থেকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়েছিলেন। কেরিয়ারের শেষ হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক দিয়েছিল যে মঞ্চ তাকেই হাতিয়ার করে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে ম্যাচের নায়ক আপাদমস্তক বদলে যাওয়া হার্দিক।

ভারতের জয় সবসময়ই স্পেশাল। বিপরীতে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হলে মাহাত্ম্য যেন আরও বেড়ে যায়। রবিবার তাঁর স্বপ্নের ম্যাচে ২৫ রানে তিনটি উইকেট নেওয়ার পর মহম্মদ নওয়াজের বলে ছয় হাঁকিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করেন হার্দিক। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেললেন ১৭ বলে ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। ম্যাচের নায়ক হার্দিক বললেন, “এমন রান তাড়া করার ম্যাচে প্রতিটি ওভার ধরে পরিকল্পনা করতে হয়। আমি জানতাম ওদের দলে এক তরুণ বোলার রয়েছে (নসিম শাহ বা শাহনওয়াজ দাহানি) এবং একজন বাঁ হাতি স্পিনার (নওয়াজ)। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৭ রান। যদি ওই ওভারে ১৫ রানেরও প্রয়োজন থাকত সেই দাবি মেটাতেও আমি আত্মবিশ্বাসী। কারণ শেষ ওভারে আমার চেয়ে বোলার বেশি চাপের মধ্যে ছিল। তাই বিষয়টিকে সাধারণভাবে উতরে দিতে চেয়েছিলাম।” ম্য়াচে বল হাতে তিন উইকেটশিকারির কথায়, “বোলিংয়ের সময় পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা এবং নিজের অস্ত্র ব্যবহার করা প্রয়োজন। শর্ট এবং হার্ড লেন্থ বল আমার শক্তি। সেগুলিকে যথাসময়ে ঠিকঠাক ব্যবহার এবং ব্যাটারদের ভুল করতে বাধ্য় করতে পারাটাই আসল কাজ।” গত টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান জিতেছিল ১০ উইকেটে। স্বস্তির বিষয় এই যে ১১ মাস পর সেই দুবাইয়ের মাঠে পাকিস্তানের ১০টি উইকেট নিলেন ভারতীয় পেসাররা।

দুরন্ত ফর্মে থাকা হার্দিকের আত্মবিশ্বাসের নমুনা পাওয়া গিয়েছে শেষ ওভারে। তখন হার্দিক যেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রানের প্রয়োজন ছিল। টেনশনে নখ খুঁটছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। হার্দিক কিন্তু নিজেকে শান্তি এবং ধীর স্থির রেখেছিলেন। তাঁর ও জাডেজার ৫২ রানের পার্টনারশিপেরর সমাপ্তি ঘটে শেষ ওভারে। মহম্মদ নওয়াজের প্রথম বলে ফিরে যান জাডেজা। দীনেশ কার্তিক এসে সিঙ্গল রান নিয়ে হার্দিককে স্ট্রাইক দেন। নওয়াজের তৃতীয় বলে হার্দিকের কভার ড্রাইভ ফিল্ডারের হাতে আটকে গেলেও রান নেওয়ার জন্য উদ্যোত হন কার্তিক। সামান্য মাথা হেলিয়ে, চোখের ইশারায় তাঁকে নিশ্চিত করলেন, চিন্তা করো না। তারপরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জয়। ফিনিশার হার্দিকের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।



Leave a Reply