কাতার বিশ্বকাপের আট স্টেডিয়ামের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তর স্টেডিয়াম আল বায়াত। এই স্টেডিয়ামের ডিজাইনে আরবের বিখ্যাত তাঁবুর ছোঁয়া রয়েছে।
Qatar World Cup 2022: চলুন, আপনাকে নিয়ে যাই ‘যাযাবরদের তাঁবু’তে!
সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্তী
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022)। জুন-জুলাইয়ে নয়, ধারা বদলে এ বার বিশ্বকাপ হতে চলেছে শীতকাতুরে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতারে ফুটবলের এই মেগা ইভেন্ট। আর যা নিয়ে আগ্রহ কম নেই আপামর ফুটবলপ্রেমীর। ২১ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের মেগা রিলিজ। মোট ৮টা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে মহাযজ্ঞ। প্রথম দিন আয়োজক দেশ কাতার এবং ইকুয়েডরের উদ্বোধনী ম্যাচ আল বায়াত স্টেডিয়ামে (Al Bayt Stadium)। এই স্টেডিয়াম কেমন দেখতে? কী ভাবে তৈরি হল? এমন নানা চমকে দেওয়া গল্প নিয়ে TV9Bangla-তে আজ প্রথম কিস্তি।
কাতার বিশ্বকাপের আট স্টেডিয়ামের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তর স্টেডিয়াম আল বায়াত। এই স্টেডিয়ামের ডিজাইনে আরবের বিখ্যাত তাঁবুর ছোঁয়া রয়েছে। দোহার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ৩৫ কিমি দূরে আল খোরে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম। সেখানকার মানুষরা মুক্তা সংগ্রস, মাছ ধরার মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই স্টেডিয়াম তৈরির নেপথ্যে রয়েছে আল খোরের সংস্কৃতির ছোঁয়াও। আল বায়াত স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য দ্বিগুন হয়ে যায় রাতে। স্টেডিয়ামটি রাতের বেলায় কৃত্রিম আলোতে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের তৈরি করে।
- নাম : আল বায়াত স্টেডিয়াম
- দর্শক আসন সংখ্যা : ৬০ হাজার
- ডিজাইনার : দার আল-হান্ডাসাহ
- কটি ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে : ৮টি
‘যাযাবরদের তাঁবু’… আল বায়াত স্টেডিয়ামের সঙ্গে এটিই প্রযোজ্য। আল খোরের নকশা অত্যন্ত নজরকাড়া। স্টেডিয়ামের সামনের দিকে কার্পেটের মতো লম্বা সুদৃশ্য সবুজ ঘাস। সামনে সুবিশাল লেক। সেই ঝিলের জলে হাঁসের দলের জলকেলি। সব মিলিয়ে এক মনোরম দৃশ্য। এই স্টেডিয়ামের নকশা প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল ২০১৪ সাল নাগাদ। নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ৩ হাজার জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বরের মধ্যেই স্টেডিয়ামের বেসের ৯৫% কাজ এবং নিচের স্তরের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ২৫০০ দর্শকদের বসার মডিউলার সিট পৌঁছে যায়। এই স্টেডিয়ামের মূল উপাদানগুলির একটি হল এই মডিউলার সিট। সে বছরের এপ্রিলের মধ্যে ৩০০০ কর্মী এই স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ ৪০% পূর্ণ করে ফেলেন। কাতারের অসম্ভব গরমের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ছাদ তৈরি করা হয়েছে গ্যালারিগুলিতে। ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬০০ টনের ছাদ তৈরির কাজ শুরু হয়। কাতারের পরিবেশের জন্য এই ছাদ বিশেষ উপযুক্ত। এই ছাদের আচ্ছাদন পুরোটাই সরিয়ে দেওয়া যায়।
ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে এই স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের পর এই স্টেডিয়ামের ওপরের অংশে পাঁচতারা হোটেলে হবে। শপিং সেন্টার, ফুড কোর্ট, জিম এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে এই স্টেডিয়াম। স্থানীয় বাসিন্দারা এই স্টেডিয়াম থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে। দর্শনার্থীদের কাছে আল বায়াত স্টেডিয়ামে তাঁবুর মতো সুদৃশ্য দেওয়ালগুলি সেখানকার সংস্কৃতির ছাপ তুলে ধরবে। রেস ট্র্যাক, সাইকেল চালানোর জন্য সাইক্লিং ট্র্যাকের পাশাপাশি বিভিন্ন স্পোর্টিং ইভেন্টের জন্য আলাদা আলাদা জায়গা থাকবে আল বায়াত স্টেডিয়ামে।