কুলিং অফ প্রত্যাহারে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট! বিসিসিআইয়ের পদ খোয়াতে পারেন সৌরভ-শাহরা


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিসিসিআইয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, জয় শাহ-সহ অন্যান্য মেয়াদ পেরনো কর্তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন। বোর্ডের আবেদন মেনে ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ড তুলে দিতে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট। বিসিসিআই যেভাবে দীর্ঘদিন একই ব্যক্তিকে পদে রাখতে চাইছে, তাতে অখুশি শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। 

লোধা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সংস্থা বা বিসিসিআইয়ে কেউ টানা ছ’বছর কোনও পদে থাকলে তাঁকে ৩ বছরের জন্য বাধ্যতামূলক ‘কুলিং অফ’ (Cooling-off) পিরিয়ডে যেতে হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী বছর দুই আগেই শেষ হয়েছে বোর্ড সচিব জয় শাহ (Jay Shah) এবং সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কার্যকাল। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব পদে জয় শাহ (Jay Shah) আসেন ২০১৩ সালে। বিসিসিআইয়ে আসার আগে পর্যন্ত তিনি সেই অ্যাসোসিয়েশনেই ছিলেন। সৌরভও সিএবিতে প্রথমে সচিব, পরে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে প্রায় ৫ বছর কাটিয়েছেন। ২০১৯ সালে বোর্ড নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন তিনি। লোধা কমিশনের আইন মানতে হলে সৌরভ-শাহদের এতদিন পদ ছেড়ে দিতে হবে।

[আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে স্টেডিয়ামে বসে দলকে সমর্থন করেছেন, কে এই রহস্যময়ী সুন্দরী?

কিন্তু বোর্ডের তরফে আগেভাগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাখা হয়, যাতে ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’ বাতিল করে দেওয়া যায়। বিসিসিআইয়ের (BCCI) যুক্তি ছিল, এত কম সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে কোনও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাছাড়া তাঁদের কার্যকালের বেশিরভাগ সময়টা করোনা (Coronavirus) মহামারীর আবহেই কেটে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যদি তাঁরা দায়িত্ব ছেড়েও দেন তাতেও বোর্ড অথৈ জলে পড়বে। তাই সব দিক ভেবেচিন্তে ‘কুলিং অফ’ তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু মঙ্গলবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালত সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি। আদালতের তরফে এদিন বলে দেওয়া হয়, কুলিং অফ ছাড়া টানা ১২ বছর অনেকটা সময়। আমরা বলতে পারি রাজ্য সংস্থায় এবং বোর্ডের দায়িত্বের মাঝে ‘কুলিং অফ’ না থাকলেও হবে। কিন্তু দুই জায়গা মিলিয়ে নিজেদের সময় শেষ হওয়ার পর কুলিং অফে যেতেই হবে। বুধবার দুপুর দু’টোয় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। শেষপর্যন্ত শীর্ষ আদালত যদি এই রায়ই দেয়, তাহলে সেটা সৌরভ বা শাহদের জন্য মোটেই ভাল খবর হবে না। সুপ্রিম কোর্ট কুলিং অফ তুলে না নিলে দায়িত্ব ছাড়তে হবে সৌরভ এবং জয়কে। সে ক্ষেত্রে নতুন নির্বাচন করতে হবে। আর তাতেও সৌরভরা অংশ নিতে পারবেন না। যদিও সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ‘আইনবন্ধু’ মনিন্দর সিং এদিন সৌরভদের সামান্য স্বস্তি দিয়েছেন। তিনি সুপারিশ করেছেন, কোনও ব্যক্তি  রাজ্য সংস্থায় একটি টার্ম কাটালে তাঁকে বিসিসিআইতে পরপর দুটি টার্ম কাজ করার অনুমতি দেওয়াই যায়। অর্থাৎ, সৌরভদের দাবি আংশিকভাবে মেনে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। যদিও তাঁর সুপারিশ আদৌ শীর্ষ আদালত মানবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। 

[আরও পড়ুন: ‘সুপ্রিম কোর্ট আরবি পড়ে কোরানের অর্থ বলতে পারে না’, হিজাব মামলায় দাবি মুসলিম পক্ষের]

বিসিসিআইয়ের আরও একটি দাবি এদিন খণ্ডন করেছে শীর্ষ আদালত। বোর্ড চাইছিল, কর্তাদের অবসরের মেয়াদ যেভাবে ৭০ বছরে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেটা তুলে দেওয়া হোক। বিসিসিআইয়ের যুক্তি ছিল, অভিজ্ঞ কর্তারা থাকলে বোর্ড চালাতে সুবিধা হয়। কিন্তু সেই দাবি খণ্ডন করে শীর্ষ আদালত পালটা প্রশ্ন তোলে, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া বোর্ডেও কি কেউ ৭৫ বছর বয়সি রয়েছেন? মোট কথা, এদিন আদালতের শুনানির গতিপ্রকৃতি একেবারেই বোর্ডের পক্ষে ছিল না। এখন দেখার বুধবারের রায়ে সৌরভদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যায়।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে



Leave a Reply