ফেডেরারের খুব রাগ হয়েছিল? নাকি যোগ্য প্রতিপক্ষ পাওয়ার আনন্দ। জানা নেই। টেনিস বিশ্ব সেদিনই আঁচ করে ফেলেছিল এক রূপকথার দ্বৈরথের।
Image Credit source: Twitter
মাদ্রিদ: ‘এই দিনটা আসুক, কোনওদিনও চাইনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার এবং ক্রীড়া দুনিয়ার কাছে ভীষণ দুঃখের একটা দিন।’ সুইস কিংবদন্তি রজার ফেডেরারের অবসর ঘোষণার পর যে মানুষটির প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় বসে ছিল টেনিস বিশ্ব, তিনি রাফায়েল নাদাল। প্রবলতম প্রতিপক্ষ, কোর্টে ‘শত্রু’ আর তার বাইরে বন্ধু। রজার বিদায়ের খবর শুনে আবেগপ্রবণ রাফা। নাদাল-ফেডেরার দ্বৈরথের দেখা আর মিলবে না। স্প্যানিশ টেনিস মহাতারকা টুইটারে যা লিখলেন, মন ছুঁয়ে গেল ক্রীড়াপ্রেমীদের। শুরুটা করলেন রজারকে বন্ধু সম্বোধন করে।
প্রিয় রজার, আমার বন্ধু এবং প্রতিপক্ষ
“এই দিনটা আসুক, কোনওদিনও চাইনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার এবং ক্রীড়া দুনিয়ার কাছে ভীষণ দুঃখের একটা দিন। এতগুলো বছর তোমার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যেমন আনন্দের তেমনই সম্মানের। কোর্ট ও তার বাইরে অসাধারণ সব মুহূর্ত কাটিয়েছি। ভবিষ্যতে আমাদের একসঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার আরও অনেক মুহূর্ত আসবে। একসঙ্গ অনেক কিছু করার বাকি আছে। স্ত্রী মির্কা, সন্তান এবং পরিবারের সঙ্গে তোমার সর্বসুখ কামনা করি। লন্ডনে দেখা হবে।” প্রতিটি ফেডেক্স প্রেমীর মনের কথা বলেছেন নাদাল। চোট আঘাতে ভুগছেন অনেকদিন, ৪১ বছর বয়সী ফেডেরার অবসর নেবেন এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কিন্তু মন মানে না। চরম সত্যিটাও মেনে নিতে কষ্ট হয় যখন সামনে মানুষটি হন রজার ফেডেরার।
Dear Roger,my friend and rival.
I wish this day would have never come. It’s a sad day for me personally and for sports around the world.
It’s been a pleasure but also an honor and privilege to share all these years with you, living so many amazing moments on and off the court ??— Rafa Nadal (@RafaelNadal) September 15, 2022
২০০৩ সালে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জেতেন ফেডেরার। তার আগেই টেনিস বিশ্বে শুরু হয়ে যায় ফেডেক্স যুগ। ২০০১ সালের ১৯ বছরের তরুণ ফেডেরার হারিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন দুর্ধর্ষ পিট সাম্প্রাসকে। অবাক হয়ে দেখেছিল টেনিস বিশ্ব। এই টেনিস জগত ফের অবাক হয়েছিল যেদিন ১৭ বছরের স্পেনের এক অখ্যাত তরুণ হারিয়ে দেন ফেডেরারকে। সেটা ২০০৪ সালের মিয়ামি ওপেন। ২০০৫ সালে ফের অঘটন। ফরাসি ওপেনে ফের রজারকে হারান ওই স্প্যানিশ তরুণ। ফেডেরারের খুব রাগ হয়েছিল? নাকি যোগ্য প্রতিপক্ষ পাওয়ার আনন্দ। জানা নেই। টেনিস বিশ্ব সেদিনই আঁচ করে ফেলেছিল এক রূপকথার দ্বৈরথের। প্রায় দুই দশক ধরে যে দ্বৈরথ আচ্ছন্ন করে রেখেছিল টেনিসপ্রেমীদের।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অথচ একে অপরকে শ্রেষ্ঠ বলতে কোনওদিন কুণ্ঠা করেননি তাঁরা। লাল মাটিতে রাফার রাজত্ব মাথা পেতে মেনে নিয়েছেন ফেডেরার। আবার সবুজ কোর্টে ফেড দাপট অস্বীকার করার কোনও উপায়ই খুঁজে পাননি নাদাল। কোর্টের ওপারে রজার ছাড়া গ্র্যান্ড স্লাম জেতার সেই নৈসর্গিক আনন্দ কী আর পাবেন রাফা? বোধহয় না। তাই হয়তো ১৬ সেপ্টেম্বর দিনটি তাঁর কাছে ব্যক্তিগতভাবে কষ্টের দিন।