লর্ডসে আজ ঝুলনের নতুন শুরুর দিন


Jhulan Goswami: লর্ডস এক দিকে যেমন গর্বের, হতাশারও। ২০১৭ সালে মেয়েদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনাল হয়েছিল। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা ছিল, লর্ডসে ৮৩ নেমে আসুক। আসেনি। ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র ৯ রানে হার। দ্বিতীয় বার সুযোগ এসেছিল ঝুলনের সামনে, বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন সত্যি হয়নি।

Image Credit source: TWITTER

লন্ডন : ঝুলন গোস্বামীর (Jhulan Goswami) ঠিক কেমন অনুভূতি হচ্ছে? কারও পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। ঝুলন নিজেও হয়তো বোঝাতে পারবেন না। শেষ বারের মতো যখন নীল জার্সিতে মাঠে নামবেন…জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাবেন কিংবা বোলিং স্পেল শুরু করবেন, তখনই বা কেমন অনুভূতি হবে? ভালো-মন্দ দুরকমই হতে পারে। আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে, বারবার একটা কথা উঠে এসেছে, ‘আমি খুব ভাগ্যবাণ’। হয়তো সত্যিই তাই। লর্ডসের (Lord’s) মতো ঐতিহ্যের মাঠে বিদায়ি ম্যাচ খেলতে নামবেন। ইংল্যান্ডের (INDWvsENGW) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল, কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটাও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই। তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ ২-০ জিতে নিয়েছে ভারত। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে সিরিজ জয় ভারতীয় মহিলা দলের। সব ছাপিয়ে লর্ডসের কেন্দ্রে কিংবদন্তি ঝুলন গোস্বামী।

সাংবাদিক সম্মেলনে যে দৃষ্টিকোণ থেকেই নিজেকে বারবার ভাগ্যবাণ বলে থাকুন ঝুলন, সত্যিই তিনি তাই। অন্তত ভারতীয় ক্রিকেটের সাম্প্রতিক চিত্র সেটাই বলে। খেলার মাঠ থেকে অবসরের সুযোগ, সকলের ভাগ্যে জোটে না। খুব বেশি দূর যেতে হবে না। কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যাক। রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ, বীরেন্দ্র সেওয়াগ, জাহির খান, আচ্ছা অন্য প্রসঙ্গে আসি। ঝুলনের সতীর্থ-বন্ধু, যাকে ছাড়া কোনও দিন আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেননি ঝুলন, সেই মিতালি রাজও কিন্তু মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার সুযোগ পাননি। সোস্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে অবসর ঘোষণা করেছেন। ঝুলন গোস্বামী ম্যাচ খেলে, মাঠ থেকে অবসর নিতে পারছেন, তাঁর কাছে সত্যিই আরও একটা স্মরণীয় দিন।

একটা সময়, সকলকেই অবসর নিতে হয়। তিনি যে কাজের সঙ্গে কিংবা অন্য খেলার সঙ্গেই যুক্ত থাকুন না কেন। ঝুলনকেও সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছে। গত বিশ্বকাপের পরই এই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। প্রায় ৪০ বছর বয়স। একজন পেসারের পক্ষে খেলা চালিয়ে যাওয়া সত্যিই কঠিন। ওয়ান ডে বিশ্বকাপে চোট পাওয়া, জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব, ফিট হয়ে ইংল্যান্ডের মতো কঠিন সফর। সহজ ছিল না। কমনওয়েলথ গেমসের আগে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজও ছিল। স্কোয়াডে রাখা হয়নি ঝুলনকে। মিতালি অবসর নিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটে মিতালি পরবর্তী যুগ শুরু হয়েছিল সেই সিরিজেই। আজ আরও একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলেছে। সতীর্থরা তাই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজকে ঝুলুদির সিরিজ বলেই ব্যাখ্যা করছেন। সিরিজ জয় সম্পূর্ণ হয়েছে। লর্ডসে জিতলে মধুরেণ সমাপয়েৎ। লর্ডস এক দিকে যেমন গর্বের, হতাশারও। ২০১৭ সালে মেয়েদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনাল হয়েছিল। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা ছিল, লর্ডসে ৮৩ নেমে আসুক। আসেনি। ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র ৯ রানে হার। দ্বিতীয় বার সুযোগ এসেছিল ঝুলনের সামনে, বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন সত্যি হয়নি। সেই স্বপ্নভঙ্গের লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-০ জয় হলে, হয়তো ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ পড়বে। সতীর্থদের লক্ষ্য, ঝুলুদিকে এমন উপহারই দেওয়া।

Leave a Reply