মেসির সতীর্থ, আর্জেন্টিনার নয়া তারকা এনজোর ছেলেবেলা কেমন ছিল জানেন?


বিশ্বকাপ মানেই নতুন তারকার জন্ম হয়। যাঁরা এর আগে থাকেন সকলের অগোচরে। চলতি কাতার বিশ্বকাপে তেমনই নতুন তারকা বলা হচ্ছে এনজোকে। এ বার বছর ২১-এর এনজো তাঁর কেরিয়ারে কতটা সাফল্য পান সেটাই দেখার।

মেসির সতীর্থ, আর্জেন্টিনার নয়া তারকা এনজোর ছেলেবেলা কেমন ছিল জানেন?

দোহা: এনজো ফার্নান্ডেজ (Enzo Fernandez)। নামটার সঙ্গে কোটি কোটি আর্জেন্টিনা (Argentina) সমর্থক যেমন পরিচিত হয়ে গিয়েছেন, তেমনই ফুটবল মহলে তাঁকে নিয়ে জোর আলোচনাও চলছে। মাত্র ২১ বছর বয়সে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল করেছেন এনজো। আর তাঁর এক গোলই তাঁকে নায়ক বানিয়ে দিয়েছে। সকলের কৌতুহল জন্মেছে তাঁকে কেন্দ্র করে। কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরব ২-১ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে অঘটন ঘটায়। মেসিরা ওই ম্যাচে হারতেই গেল গেল রব উঠেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে অনবদ্য প্রত্যাবর্তন করেছে লা আলবিসেলেস্তেরা। মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়ে নক আউটে ওঠান রাস্তায় রয়েছে আর্জেন্টিনা। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে লিও মেসির (Lionel Messi) অনবদ্য গোল। পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন এক তরুণ ফুটবলার। কর্নার থেকে তৈরি হওয়া একটা মুভ। মেসির ছোট্ট পাস, ওচোয়ার ধরাছোঁয়ার বাইরে বল, গোল। যে গোল এনজোকে আর্জেন্টিনার নতুন নায়ক বানিয়ে দিয়েছে। কেমন ছিল তাঁর ছেলেবেলা, তুলে ধরল TV9Bangla

এনজোকে নিয়ে মেসি জানিয়েছেন, তিনি তার খেলা দেখে অবাক নন। কারণ, আগেও এনজোকে লিও এভাবে খেলতে দেখেছে। হোসে পেসেইরো এনজোকে জিদানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এই এনজো ফার্নান্দেজ তিন বছর আগে রিভারপ্লেটে খেলেন। ছেলেবেলা থেকে ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত এনজো। তবে এনজোর ফুটবল খেলাটা ছেলেবেলায় এতটাও সহজ ছিল না। এনজোরা পাঁচ ভাই। যার মধ্যে তিনি সব চেয়ে ছোট। ছেলেবেলায় এনজো তাঁর জন্মস্থান সান মার্টিনে লা রেকোভা ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। যখন এনজোর পাঁচ বছর বয়স, তখন প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কোচ এবং মিলোর প্রতিভা স্কাউট পাবলো এসকুইভেল তাঁকে দেখেছিলেন এবং মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি এনজোর বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে তাঁর বাবা রাউল এবং মা মার্তার কাছে হাজির হয়েছিলেন। যাতে তাঁরা তাকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় ক্লাবে নিয়ে যেতে দেয়। কিন্তু এনজো তখনও খুব ছোট ছিলেন বলে, তাঁর বাবা-মা বেশ চিন্তিত ছিলেন। যখন এনজোর বয়স ছয় বছর হয়, তখনই তাঁর মা-বাবা আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভারপ্লেটের হয়ে এনজোকে খেলতে পাঠিয়ে দেন।

তিনি আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে আর্জেন্টিনার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১৯ সালে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক হয় তাঁর। আর্জেন্টিনার বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় এক বছরে ২ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয়েছে এনজোর। দেশের জার্সিতে গোল করার স্বপ্ন ছিল এনজোর। তা তিনি করতে পেরেছেন। তাও আবার অভিষেক বিশ্বকাপেই। লিওনেল মেসির সঙ্গে মাঠ থেকে ড্রেসিংরুম শেয়ার করার স্বপ্নও পূর্ণ হয়েছে এনজোর। এ বারই আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জিতে নিতে পারলে এনজোর সব স্বপ্ন পূরণ হয়ে যাবে।

জুনিয়র পর্যায়ে ২০০৬-২০১৯ সাল অবধি রিভারপ্লেটে খেলেছেন এনজো। এরপর ২০১৯-২২ সাল অবধি রিভারপ্লেটের হয়ে ৪০টি ম্যাচে খেলে ১০টি গোল করেছেন তিনি। এর পর তিনি লোনে চলে যান ডিফেন্সা ওয়াই জাস্টিসিয়া ক্লাবে। চলতি বছরে তাঁকে দলে নিয়েয় পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকা। বিশ্বকাপ মানেই নতুন তারকার জন্ম হয়। যাঁরা এর আগে থাকেন সকলের অগোচরে। চলতি কাতার বিশ্বকাপে তেমনই নতুন তারকা বলা হচ্ছে এনজোকে। এ বার বছর ২১-এর এনজো তাঁর কেরিয়ারে কতটা সাফল্য পান সেটাই দেখার।

Leave a Reply