PAKvsENG: ছেলেবেলাতেই বাবার হাত ধরে করাচিতে চলে আসেন আবরার। বাবা নূর আহমেদ ছিলেন ক্রিকেট ভক্ত। মুলতানে যখন বীরেন্দ্র শেওয়াগ তাণ্ডব চালিয়ে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন, তখন আবরারের বয়স ছিল মাত্র ৬।
Image Credit source: twitter
করাচি: মুস্তাক আহমেদ তখন পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির হোড কোচ। একটি বাচ্চা ছেলেকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আব্দুল কাদিরের নাম শুনেছ? মাথা চুলকে বাচ্চাটি বলেছিল, আব্দুল কাদির… কে বলুন তো? কখনও নাম শুনিনি!’ পরের দৃশ্যটা কল্পনাই করা যায়। মুস্তাক আহমেদ নিশ্চয় পেট চেপে ধরে হেসেছিলেন অনেকক্ষণ। সে দিনের সেই বাচ্চাই যে বিশ্ব ক্রিকেটকে থমকে দিতে পারেন, পাঁচ বছর আগে কেউই হয়তো ভাবেননি। একঝলক দেখলেই মনে হবে, সুনীল নারিন বল করতে আসছেন। সেই একই রকম বল আড়াল করা রানআপ। সাইডঅন ডেলিভারির সময় স্পিনের ঘূর্ণি। যা সামলাতে গিয়ে হিমশিম বিশ্বের সেরা ব্যাটাররা। আইপিএলের কোনও ম্যাচের দৃশ্য নয়। পাকিস্তান ক্রিকেট এখন এই ছবিতে মশগুল। আবরার আহমেদ নামের এক মিস্ট্রি স্পিনার রীতিমতো চমকে দিয়েছেন আবির্ভাবেই। মুলতান কি সুলতান হয়ে উঠছেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে। আগের টেস্টে জেতা বেন স্টোকসের টিম প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনেই ১৬৫-৭ হয়ে গিয়েছিল। আশ্চর্যের ঘটনা হল, ২৪ বছরের আবরারই নিয়েছেন টানা ৭টা উইকেট। জিম লেকার, অনিল কুম্বলেদের টেস্টে ১০ উইকেট নিতে সময় লেগেছিল। আবরার কি অভিষেকেই ঘটিয়ে ফেলবেন আশ্চর্য ঘটনা? জাহিদ মাহমুদ অবশ্য পরের দুটো উইকেট নিয়েছেন।
মুলতানের শিনকিয়ারি নামের ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা আবরারের। পাকিস্তানে যে কোনও ছোট বাচ্চা সাধারণত স্বপ্ন দেখেন পেস বোলার হওয়ার। কেউ কেউ আব্দুল কাদির, মুস্তাক আহমেদ হন। সেই রাস্তাতেই হাঁটতে শুরু করেছিলেন আবরার। কালো ফ্রেমের চশমা পরা মিষ্টি যুবক লেগস্পিনের জাদুতে শুরুতেই মাত করে দিয়েছেন। প্রথম টেস্টে হারের পর সমালোচনার মুখে পড়েছিল বাবর আজমের পাকিস্তান। সেখান থেকে আবরারই তুলে আনলেন টিমকে।
ছেলেবেলাতেই বাবার হাত ধরে করাচিতে চলে আসেন আবরার। বাবা নূর আহমেদ ছিলেন ক্রিকেট ভক্ত। মুলতানে যখন বীরেন্দ্র শেওয়াগ তাণ্ডব চালিয়ে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন, তখন আবরারের বয়স ছিল মাত্র ৬। আবরারের ক্রিকেট জীবন কিন্তু সহজ ছিল না। ২৪ বছর বয়সে জাতীয় টিমে পা দেওয়ার আগে অনেক অন্ধকারময় রাত কাটাতে হয়েছে। চোটের কারণে দুটো বছর মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। তাঁর চোট এমন ছিল যে, প্যারালিসিস হয়ে যেতে পারতেন। কিংবা ক্রিকেটেও হয়তো ফেরা হত না তাঁর। পাকিস্তান প্রিমিয়ার লিগের কোনও টিম তাঁকে নেয়নি পর্যন্ত। সে সব অতীত করে দিয়ে পাক ক্রিকেটে এখন নতুন তারা আবরার আহমেদ। স্পিনের দুনিয়াতেও যে ঝলসে উঠেছেন অভিষেক ম্যাচেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।