FIFA World Cup 2022: কী হবে স্টেডিয়াম ৯৭৪ এর? কোথায় ব্যবহার করা হতে পারে স্টেডিয়ামটি?


ফিফা বিশ্বকাপের পর সমস্ত স্টেডিয়ামগুলি আয়োজক দেশগুলির কাছে ‘হোয়াইট এলিফেন্ট’ হয়ে থেকে যায়। মানে স্টেডিয়ামগুলি ব্যবহার করা খরচাসাপেক্ষ হওয়ায় বেশি কাজে লাগে না। তবে অন্যান্য স্টেডিয়ামগুলির মতো এটা স্থায়ী নয়।

কী হবে স্টেডিয়াম ৯৭৪ এর? কোথায় ব্যবহার করা হতে পারে স্টেডিয়ামটি?

Image Credit source: Twitter

দোহা: কাতারের আইএসডি কোড যা, কিংবা যে পরিমাণ উপকরণ দিয়ে তৈরি স্টেডিয়াম— তা মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। আর তাই রাস আবু আবোউদ স্টেডিয়ামের নাম হয়ে গিয়েছে ৯৭৪! বিশ্বকাপের(FIFA World Cup) ইতিহাসে প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম। দোহা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ৯৭৪ স্টেডিয়ামটি(974 Stadium) জাহাজের কন্টেনার দিয়ে তৈরি। ২০২১ সালে নভেম্বর মাসে উদ্বোধন হওয়ার পরে স্টেডিয়ামটিতে ফিফা আরব কাপ ও এ বছর ফিফা বিশ্বকাপ খেলা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার ৮৯ জন দর্শক একসঙ্গে ফুটবল উপভোগ করছেন এই স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপে মোট ৭টি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ। পর্তুগাল(Portugal) বনাম ঘানা থেকে শুরু করে ব্রাজিল বনাম সুইজারল্যান্ড ও আর্জেন্টিনা বনাম পোল্যান্ড ম্যাচগুলো খেলা হয়েছে এই তাক লাগানো স্টেডিয়ামটিতে। কিন্তু এই স্টেডিয়ামের ভবিষ্যৎ কী? তুলে ধরল TV9 Bangla।

জানা গিয়েছে, যে ইতিমধ্যেই স্টেডিয়ামটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। স্টেডিয়ামটির যে কন্টেনার দিয়ে তৈরি, সেগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে উরুগুয়েতে। উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা, চিলি ও প্যারাগুয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে দক্ষিণ আমেরিকায় ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায়। সেখানেই ব্যবহার করা হতে পারে কন্টেনারগুলি। এই বিষয়ে টুর্নামেন্ট অর্গানাইজার ও সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি এন্ড লেগেসির এক কর্তা বলেছেন, “স্টেডিয়ামটি পুরোপুরি ভেঙ্গে নতুন কোনও উদ্দেশ্য ব্যবহার করতে ঠিক কতদিন সময় লাগতে পারে, তা এই মুহূর্তে ঠিক করা হচ্ছে।”

কাতারি আর্কিটেকচারের অনবদ্য উদাহরণ স্টেডিয়াম ৯৭৪ ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে কেন? কারণ, ফিফা বিশ্বকাপের পর সমস্ত স্টেডিয়ামগুলি আয়োজক দেশগুলির কাছে ‘হোয়াইট এলিফেন্ট’ হয়ে থেকে যায়। মানে স্টেডিয়ামগুলি ব্যবহার করা খরচাসাপেক্ষ হওয়ায় বেশি কাজে লাগে না। তবে অন্যান্য স্টেডিয়ামগুলির মতো এটা স্থায়ী নয়। তা ছাড়া কাতার ২০২২ এর ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পরে আয়োজক কমিটি বলেছিল, কাতার বিশ্বকে প্রথম কার্বনবিহীন ফিফা বিশ্বকাপ উপহার দিতে চলেছে। আটটি স্টেডিয়াম সহ পরিকাঠামো সংক্রান্ত সকল প্রজেক্ট টেকসই। এর সর্বোচ্চ মাপকাঠি ছুঁয়ে ফেলবে। তারা এ বিষয়ে বলেছে যে, সমস্ত স্টেডিয়াম তৈরি করতে তাঁরা বহু সামগ্রী পুনর্ব্যবহার করেছেন। রিসাইকেল করে কাজে লাগিয়েছেন বহু কিছু। জল ও বিদ্যুৎ বাঁচা‌তে তারা ব্যবহার করেছে উন্নত প্রযুক্তি।

আয়োজক কাতারের প‌রিকল্পনাগু‌লো পুরোপুরি কাজ করেছে। স্টেডিয়ামগুলির ডিজাইন দাগ কেটেছে বিশ্বব্যাপী ফুটবল প্রেমীদের মনে। কাতারে পৌঁছেই স্টেডিয়াম ৯৭৪ আগে দেখতে গিয়েছেন একাধিক ফুটবলপ্রেমী। মেক্সিকো, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জোয়ার দেখা গিয়েছে। লোহার কন্টেনার দিয়ে তৈরি হওয়ার দরুণ সমর্থকদের এক সুরে গাওয়া গান, করতালি ও আনন্দে পায়ের শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়েছে স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ। যা শুরু হয়েছিল ম্যাক্সিকো পোল্যান্ড ম্যাচে সমর্থকদের পায়ের শব্দে। তা শেষ হয়েছে ব্রাজিল দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে ৪-১ গোলে জয়ের ,পরে ব্রাজিলিয়ানদের সাম্বার ধ্বনিতে। তাক লাগানো আর এক বিষয় হলে, কাতারের অন্যান্য স্টেডিয়ামগুলির মতো এয়ারকন্ডিশান এর ব্যবস্থা ছিলনা এই স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামগুলি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, ম্যাচ চলাকালীন বাতাস শীতল রাখতে প্রয়োজন হয়নি এয়ারকন্ডিশানিংয়ের।

Leave a Reply