‘জেল-সেল’ স্ট্র্যাটেজি কী জানেন? মেসিকে থামানোর নতুন পরিকল্পনা মদ্রিচদের…


Jail cell:এ ক্ষেত্রেও অবশ্য় সমস্য়া দেখা দিতে পারে। শুধুমাত্র মেসিকে আটকাতে চার জন ফুটবলারকে ব্য়স্ত রাখলে, আর্জেন্টিনার আক্রমণ ভাগের বাকিরা কিন্তু এর সুবিধা তুলতে পারে। যেটা এ বারের বিশ্বকাপে হামেসাই দেখা গিয়েছে। মেসি যেমন গোল করেছেন, তেমনই সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের মতোই কখনও জুলিয়ান আলভারেজ, অ্য়ালেক্সিস ম্য়াক অ্যালিস্টার, মোলিনা, এনজো ফার্নান্ডেজরা গোল করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলেছেন। তাই মেসির বিরুদ্ধে ‘জেল-সেল’ পরিকল্পনাও আদৌ কার্যকর হবে তো?

Image Credit source: twitter

লুসেইল : মেসিকে আটকানো সম্ভব? তাঁর জন্যও রাখা যেতে পারে পরিকল্পনা? বিশ্বের যে কোনও ফুটবলারের ক্ষেত্রে কি একই কথা প্রযোজ্য? হয়তো হ্যাঁ। দিনের শেষে মেসিও মানুষ। তিনি সব কিছু নিখুঁত করবেন, তা নয়। তবে তাঁর মতো ফুটবলারকে আটকাতে গেলে বিশেষ কোনও পরিকল্পনা প্রয়োজন। আটোসাঁটো পরিকল্পনা ছাড়া মেসির বিরুদ্ধে নামা মানে ঢাল-তলোয়ার ছাড়া যুদ্ধে যাওয়া। পেশাদার ফুটবলে পা রাখার পর থেকেই মেসিকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা সাজিয়েছে প্রতিপক্ষ। কাতার বিশ্বকাপে এখনও অবধি ৪ গোল করাই শুধু নয়, বেশ কিছু ম্যাচে তাঁর শিল্পের ঝলকও দেখিয়েছেন এলএম টেন। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারের পর থেকে যেন খিদে বেড়ে গিয়েছে তাঁর। প্রতিটা ম্যাচেই দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামছেন লিও মেসি। আর এই মেসিকে আটকাতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে নামছে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া!কী সেই পরিকল্পনা, তুলে ধরল TV9Bangla

গত বিশ্বকাপে শুরুর দিকে ক্রোয়েশিয়াকে কেউ ধর্তব্য়ে রাখেনি। তারাই চমক দেখিয়েছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে মেসির আর্জেন্টিনাকে হারানোই শুধু নয়, বিশ্বকাপের ফাইনালেও উঠেছিল জ্লাতকো দালিচের ক্রোয়েশিয়া। ট্রফি হাতছাড়া হলেও তাদের পারফরম্য়ান্স সমীহ জাগিয়েছিল। কাতার বিশ্বকাপে শুরুর দিকে কিছুটা যেন এলোমেলো ছিল। ক্রমশ গুছিয়ে নিয়েছে তারা। আজ অবশ্য কঠিন পরীক্ষার সামনে। কেন? প্রতিপক্ষ দলে লিওনেল মেসি নামের একজন রয়েছেন যে! আর তাঁকে আটকাতে প্রয়োজন বিশেষ অস্ত্র। কোন পরিকল্পনায় মেসিকে আটকানো সম্ভব? এর সহজ কোনও জবাব হয় না। নির্দিষ্ট কোনও ব্লু প্রিন্টও নেই। একই পরিকল্পনা পরবর্তী ম্যাচেও কাজে লাগবে, এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবু, প্রশ্নটা থেকেই যাবে। মেসির উল্টো দিকে থাকা কোচ, অধিনায়ক কিংবা যে ফুটবলারই সাংবাদিক সম্মেলনে আসবেন, তাঁকে এই প্রশ্নের মুখেই পড়তে হবে।

সাত বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীকে কী ভাবে আটকাবেন? আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে নামার আগে এই প্রশ্নের সামনে ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাতকো দালিচ। তিনি বলছেনন, ”আমরা মেসিকে গার্ড করব, তবে ম্যান মার্কিংয়ের ধরনে নয়। শেষ বারও এমনটা করিনি। ও কতটা দৌড়তে পারে, পরিষ্কার ধারণা রয়েছে আমাদের। উইথ দ্য় বল ওকে রোখা, ওর পা থেকে বল কাড়া খুবই কঠিন। এর জন্য আমাদের রক্ষণ ভাগে আরও শৃঙ্খলা দরকার। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে যে ভাবে খেলেছিলাম, এই ম্যাচে তেমন খেলতে পারলে, প্রত্যেকে প্রত্য়েকের পাশে দাঁড়ালে, হয়তো ওকে (মেসি) আটকানো সম্ভব।’

ম্য়ান মার্কিং করে যে মেসিকে আটকানো সম্ভব নয়, তার ঝলক পাওয়া গিয়েছে নেদারল্য়ান্ডসের বিরুদ্ধে গত ম্য়াচেও। নাথন আকে মেসির সামনেই ছিলেন। বাঁ দিকে, ডান দিকে, ব্যাক পাসের বিকল্প খোলা থাকলেও মেসির পজিশন থেকে থ্রু বল বাড়ানো কার্যত অসম্ভব ছিল। এখানেই মেসি এবং বাকিদের মধ্যে পার্থক্য। নাথন আকের মার্কিংয়ে থেকেই আচমকা ফরোয়ার্ড পাস বাড়ান মেসি, যা থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন নহেল মোলিনা। তাহলে কি মেসিকে আটকানোর কোনও রাস্তাই নেই? নেদারল্য়ান্ডস ম্যাচে আরও একটা বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে। চারদিক থেকে জেল-এর সেলের মতো মার্কিং করলে কিছুটা অস্বস্তিতে দেখায় মেসিকে। ক্রোয়েশিয়াও কি একই পরিকল্পনা নিতে পারে? এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এই জেল সেল মার্কিং কী? একটা চতুর্ভূজের মতো। যে ঘেরাটোপে কোনও ফুটবলারকে আটকে রাখা। যে দিকেই যান কেন, সামনে কোনও না কোনও প্রতিপক্ষ পাবেন মার্কিংয়ে থাকা ফুটবলার। আর তাতে তিনি ফ্রি ফুটবল খেলতে পারবেন না। এই স্ট্র্যাটেজিই কাজে লাগাতে চাইছেন দালিচ।

এ ক্ষেত্রেও অবশ্য় সমস্য়া আছে। শুধুমাত্র মেসিকে আটকাতে চারজন ফুটবলারকে ব্য়স্ত রাখলে, আর্জেন্টিনার আক্রমণ ভাগের বাকিরা কিন্তু এর সুবিধা তুলতে পারে। যেটা এ বারের বিশ্বকাপে হামেশাই দেখা গিয়েছে। মেসি যেমন গোল করেছেন, তেমনই সিলেবাসের বাইরের প্রশ্নের মতো কখনও জুলিয়ান আলভারেজ, অ্য়ালেক্সিস ম্য়াক অ্যালিস্টার, মোলিনা, এনজো ফার্নান্ডেজরা গোল করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলেছেন। তাই মেসির বিরুদ্ধে ‘জেল-সেল’ পরিকল্পনাও আদৌ কার্যকর হবে তো?

Leave a Reply