সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হোসে মেহেদি ফারিয়াকে (Jose Mehdi Faria) মনে আছে? এক ব্রাজিলীয় কোচ মরক্কোতে গিয়ে সেই কবে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন।
কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022) কোয়ার্টার ফাইনালে অ্যাটলাস সিংহদের পর্তুগাল-বধের পরে ফুটবল রোম্যান্টিকদের স্মৃতিতে ভেসে উঠছেন তিনি। টাইমমেশিনের সাহায্য না নিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা ফিরে যাচ্ছেন ৩৬ বছর আগের এক বিশ্বকাপে। সেবারও অ্যাটলাস সিংহদের কাছে পরাস্ত হয়েছিল পর্তুগিজরা। তখন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বয়স মাত্র এক।
[আরও পড়ুন: মেসিদের বিরুদ্ধে নামার আগে ক্রোয়েশিয়াকে ভাবাচ্ছে ক্লান্তি, টিমকে সতর্ক করলেন মদ্রিচ]
মেক্সিকো বিশ্বকাপ ছিল দিয়েগো মারাদোনার (Diego Maradona)। একক দক্ষতায় একটা বিশ্বকাপ যে জেতা সম্ভব, তা দেখিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন জাদুকর। মেক্সিকোয় ছাপ ফেলেছিলেন মরক্কোর ফুটবলার মহম্মদ তিমৌমি। ১৯৮৬-র বিশ্বকাপে পর্তুগালকে ১-৩ গোলে মাটি ধরিয়েছিল মরক্কো।
সেবার গ্রুপ এফ-এ ইংল্যান্ড, পোল্যান্ড, পর্তুগালের সঙ্গে ছিল মরক্কো। ১৯৮৬ সালের ১১ জুন মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। মরক্কো যে শেষ হাসি হাসবে, তা কেউই সেদিন বিশ্বাস করতে পারেননি। পর্তুগালকে হারিয়ে মরক্কো পৌঁছে যায় দ্বিতীয় রাউন্ডে। প্রথম অ্যাফ্রো-আরব দল হিসেবে গ্রুপ পর্ব থেকে নক আউটে পৌঁছেছিল মরক্কো।
সেই সময়ে কোচের রিমোট কন্ট্রোল ছিল হোসে মেহেদি ফারিয়ার হাতে। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত মরক্কো জাতীয় দলের কোচ ছিলেন মেহেদি ফারিয়া। তাঁর কোচিংয়ে ১৯৮৪ সালের অলিম্পিকেও যোগ্যতা অর্জন করেছিল মরক্কো।
১৯৩৩ সালে রিও ডি জেনিরোতে জন্ম ফারিয়ার। তখন তাঁর নাম ছিল হোসে ফারিয়া। পরে মরক্কো জাতীয় দলের কোচিংয়ের সময়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে যায় মেহেদি। হয়ে যান হোসে মেহেদি মারিয়া। মরক্কোর একাধিক ক্লাব দলকে কোচিং করিয়েছেন ফারিয়া। রাবাতের ক্লাব এফএআর-এরও কোচ ছিলেন। তাঁর কোচিংয়ে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল। মরক্কোর প্রথম ক্লাব হিসেবে মহাদেশীয় কোনও টুর্নামেন্ট জিতেছিল রাবাতের ক্লাব এফএআর। ইন্টার মিলানের কোচ হওয়ার প্রস্তাব ছেড়ে দিয়েছিলেন ফারিয়া। ২০১৩ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান মরক্কোর প্রাক্তন কোচ।
জীবদ্দশায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না বিশ্বকাপের মঞ্চে মরক্কোর রূপকথা। ফারিয়ার দল গিয়েছিল দ্বিতীয় পর্বে। পশ্চিম জার্মানির কাছে হার মেনে সেবারের বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল অ্যাটলাস সিংহরা। এবার ইতিহাস লিখে সেমিফাইনালে হাকিমিরা। আরও এক নতুন ইতিহাসের হাতছানি মরক্কোর সামনে। ইয়াসিন বোনো, আশরাফ হাকিমিদের এমন দুরন্ত পারফরম্যান্স আরও বেশি করে যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রাক্তন এক কোচকে। তিনি এখন অতীত। কিন্তু আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে গিয়েছেন এমন স্মৃতি যা রবি ঠাকুরের গানের কথাকেই মনে করিয়ে দেয়–দিনের পথিক মনে রেখো, আমি চলেছিলেম রাতে, সন্ধ্যা প্রদীপ নিয়ে হাতে।
[আরও পড়ুন: মোদি সরকার থাকতে দেশের এক ইঞ্চি জমিও কেউ দখল করতে পারবে না, চিন ইস্যুতে হুঙ্কার শাহ’র]
Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ