লড়াই করেও থামল অ্যাটলাস সিংহের গর্জন, মরক্কোকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স


ফ্রান্স: ২ (হার্নান্ডেজ, মুয়ানি)

মরক্কো: ০

দুলাল দে, দোহা: ম্যাচের শুরুতে প্রতিপক্ষ বুঝে ওঠার আগেই গোল। ইংল্যান্ডের পর মরক্কোর বিরুদ্ধেও একই স্ট্র্যাটেজি নিয়ে শুরু করেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। শক্তিশালী মরোক্কান ডিফেন্সের মোকাবিলা করতে হলে গোল করতেই হবে-এই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন এমবাপেরা। সেই কৌশলে ভর করেই ম্যাচ বের করে নিলেন দিদিয়ের দেশঁ। টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) ফাইনালে চলে গেল ফ্রান্স। থেমে গেল মরক্কোর রূপকথা। 

টুর্নামেন্টে একটিও গোল খায়নি মরক্কো (France vs Morocco)। কানাডার বিরুদ্ধে আত্মঘাতী গোল ছাড়া একবারও ভুল করেননি আফ্রিকার দেশটির ডিফেন্ডাররা। কিন্তু মহা গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনালেই চিড় ধরল আটলাস সিংহের দুর্ভেদ্য রক্ষণে। ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটের মাথায় খাতা খুলে ফেলল ফ্রান্স। পিছিয়ে পড়ে মরিয়া লড়াই করে সমতা ফেরানোর চেষ্টা করেছেন হাকিমিরা। কিন্তু গোল লক্ষ্য করে একাধিক শট বাঁচিয়েছেন ফরাসি অধিনায়ক হুগো লরিস। দুরন্ত লড়াই করেও ফাইনালের আগেই থামতে হল মরক্কোকে।

[আরও পড়ুন: ‘ইন্টেরিম’ থেকে ‘হোলটাইমার’, মেসিদের বিশ্বজয়ের পথ দেখাচ্ছেন স্কালোনি]

ম্যাচের শুরুতেই মাঝমাঠ থেকে বল পেয়েছিলেন গ্রিজম্যান। বরাবরের মতোই এমবাপেকে লক্ষ্য করে পাস দেন তিনি। কিন্তু পায়ের জালে আটকে গিয়ে গোলে বল ঠেলতে পারলেন না চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোল সংগ্রাহক। তাঁর শট আটকে গেলেও বল চলে গেল হার্নান্ডেজের কাছে। প্রায় কাঁধ সমান উচ্চতায় শট খেলে জালের মধ্যে বল জড়িয়ে দেন। চলতি টুর্নামেন্টে প্রথমবার মরক্কোর গোলে বল জড়াল প্রতিপক্ষ। পিছিয়ে পড়ে দুরন্ত প্রতি-আক্রমণের রাস্তায় হাঁটে আফ্রিকার দেশটি। গোল খাওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে মরক্কোর দুরন্ত শট কোনওমতে বাঁচান হুগো লরিস। হাফ টাইমের সংযুক্ত সময়ে পরপর দু’টি কর্ণার থেকে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল মরক্কোর কাছে। কিন্তু লরিসের গ্লাভসে আটকে গেল জিয়েশদের প্রচেষ্টা।

এক গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করেন হাকিমিরা। প্রতিপক্ষের বক্সের কাছে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে মরক্কো। কিন্তু শত চেষ্টাতেও গোল হয়নি। ৭৫ মিনিটে গোল করার সেরা সুযোগ ছিল মরক্কোর সামনে। কিন্তু গোলে শট নিলেন না হামদালা। এর মাত্র তিন মিনিটের মাথায় ডিফেন্ডারদের গুঁড়িয়ে দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গেলেন এমবাপে। মরক্কোর পায়ের জঙ্গলের মধ্যে এঁকেবেঁকে পাস দিলেন পরিবর্ত মুয়ানিকে। মাঠে নামার ৪৪ সেকেণ্ডের মধ্যে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করলেন মুয়ানি।

চলতি বিশ্বকাপের আগে ফেভারিট দলগুলির ভিড়ে চাপা পড়ে গিয়েছিল মরক্কোর নাম। ‘অঘটনের’ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে তাদের জয়ও কাকতালীয় বলেই ধরে নিয়েছিল ফুটবলবিশ্ব। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে পরপর ম্যাচে কার্যকরী ফুটবল খেলে গেল আফ্রিকার দেশটি। সকলকে বুঝিয়ে দিল, তাদের সাফল্য নিছক অঘটন নয়। বুধবারের ম্যাচে যতবার মরক্কোর খেলোয়াড়রা বিপক্ষের বক্সে উঠে এসেছেন, কান ফাটানো শব্দে স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে দিয়েছেন সেদেশের সমর্থকরা। ফুটবলপ্রেমীদের রোজকার চর্চায় উঠে এসেছে হাকিমি-জিয়েশদের নাম। ইতিহাস গড়ে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছে তারা। ট্রফি না পেলেও, অগণিত ফুটবলপ্রেমীর মন জয় করেছে অ্যাটলাস সিংহের গর্জন।

[আরও পড়ুন: সেঞ্চুরি হাতছাড়া পূজারার, রান পেলেন না কোহলি, প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান ২৭৮]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে



Leave a Reply