কাতার বিশ্বকাপে দলের জয়ের পিছনে অবদান রাখতে পেরে আপ্লুত ডিবু।
‘আর্জেন্টাইনদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়াটা গর্বের’, বলছেন মার্টিনেজ
দোহা: বছর দেড়েক আগে, তিনি আর্জেন্টিনার (Argentina) ভক্তদের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলেন। সেই তিনিই এখন আর্জেন্টিনার অন্যতম বড় অস্ত্র। কথা হচ্ছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে (Emiliano Martinez) নিয়ে। আর্জেন্টিনা দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। লিওনেল মেসিরা সেমিফাইনালে পৌঁছতে পেরেছিল ডিবুর জাদুকরী হাতের কারণেই। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তাঁর দুর্দান্ত সেভের কারণেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছিল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। এ বার কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন মেসি। তাই মেসিকে বিশ্বকাপ ট্রফি দিয়ে ফেয়ারওয়েল দিতে চান এমিলিয়ানো। শুধু তিনি নন, এটাই চায় পুরো আর্জেন্টিনা শিবির। মেসির প্রতি নিজের ভালোবাসা, চলতি বিশ্বকাপে দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে কী বললেন ডিবু, তুলে ধরা হল TV9Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
কাতার বিশ্বকাপে দলের জয়ের পিছনে অবদান রাখতে পেরে আপ্লুত ডিবু। তিনি বলেন, “আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন ইংল্যান্ডে যাওয়ার জন্য লড়াই করেছিলাম। ওরা আমাকে এতটা চিনত না, কারণ আমি রেড-এ ডেবিউ করিনি। আজ সমস্ত আর্জেন্টাইনদের হৃদয়ে থাকাটা আমাকে সব চেয়ে গর্বিত করছে। আমার কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের। দেশের হয়ে খেলতে পেরে ভীষণ গর্ববোধ হচ্ছে।”
২০২১ সাল থেকে আর্জেন্টিনার সিনিয়র দলের হয়ে খেলছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের একটি ম্যাচে চিলির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে (৩ জুন, ২০২১) মার্টিনেজের আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয়। দেশের জার্সিতে এখনও অবধি ২৫টি ম্যাচে খেলেছেন তিনি। আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে যথাক্রমে ২টি ও ৫টি ম্যাচে খেলেছেন ডিবু। ২০১২ সাল থেকে একাধিক ক্লাবে খেলেছেন ডিবু। প্রথমে আর্সেনালে ৮ বছর ১৫টি ম্যাচে খেলেন। এর পর লোনে পর পর অক্সফোর্ড ইউনাইটেডে (১টি ম্যাচে), শেফিল্ড ওডেনেসডে (১১টি ম্যাচে), রোথ্যারহ্যাম ইউনাইটেড (৮টি ম্যাচে), উলভসে (১৩টি ম্যাচে), গেতাফে (৫টি ম্যাচে), রিডিংয়ে (১৮টি ম্যাচে) খেলেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি অ্যাস্টন ভিলার হয়ে খেলছেন। এখনও অবধি ভিলার হয়ে মোট ৮৯টি ম্যাচে খেলেছেন ডিবু।
২০২১ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জেতে আর্জেন্টিনা। ২০২২ সালের জুনে ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিসিমাও জেতে আর্জেন্টিনা। এ বার স্কালোনির কোচিংয়ে বিশ্বকাপ জয়ের খেতাবটি বাকি রয়েছে। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে এমিলিয়ানো তিনটি পেনাল্টি বাঁচিয়েছিলেন এবং ফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ক্লিন শিট রেখেছিলেন। কোপা আমেরিকায় গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছিলেন তিনি। ডিবু বর্তমান আর্জেন্টিনা দল নিয়ে বলেন, “যখন থেকে আমি খেলতে শুরু করেছি, আমরা আরও ভালো পারফর্ম করে চলেছি। আমরা কোপা আমেরিকার দল নই, আমরা ফাইনালিসিমা দল নই, আমি মনে করি আমরা এক ধাপ উপরে রয়েছি।”
এলএম ১০ এর শেষ বিশ্বকাপে তাঁকে সোনালি ট্রফিটি দিতে চান সতীর্থরা। মার্টিনেজ এ নিয়ে বলেন, “মেসিকে আমি খুব ভালোবাসি। শুধু আমি নয়, গোটা দলই মেসিকে ভালোবাসে। এটাই ওর শেষ বিশ্বকাপ। তাই আমরা সকলেই চাই, নিজেদের সেরাটা দিয়ে ওর হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিতে। আমাদের ধারণা এর থেকে বড় ফেয়ারওয়েল হয়তো আর কিছুই হতে পারে না। এই বয়সে এখনও মেসি যেভাবে খেলছে তা সত্য়ি প্রশংসনীয়। অনেকেই ওর মতো খেলতে পারবে না। ওর থেকে আমরা অনেকই অনেক কিছু শিখেছি। তবে শুধু আমরা নয়, গোটা ফুটবল বিশ্ব ওর থেকে অনেক কিছুই শিখেছে। তাই আমরা যদি ওর হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিতে পারি তা হলে সত্য়ি খুব খুশি হব।”