বিতর্ক নাকি হতাশা? ক্রিকেট প্রশাসনে সৌরভ অপসারণ…


Year Ender 2022: খেলার মাঠে বাদ পড়ে প্রত্যাবর্তনের অনন্য় নজির গড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়। ক্রিকেট প্রশাসনেও আগামী দিনে এমন কিছু হয়তো দেখা যেতেই পারে। ক্য়াপ্টেন, দাদা, হেরে যাওয়ার পাত্র নন।

Image Credit source: twitter

কলকাতা : ক্য়াপ্টেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ক্ষেত্রে এই বিশেষন সবচেয়ে দামি। ক্রিকেটের মাঠেই হোক কিংবা বাইরে। তিনি সবসময়ই ক্যাপ্টেন। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্ধকার সময়ে নেতৃত্ব নিয়েছিলেন। একটা দল গড়ে তুলেছিলেন। যা টিম ইন্ডিয়া নামে পরিচিত। প্রতিষ্ঠানের চেয়ে নিঃসন্দেহে বড় কেউ নন। তবে প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত করতে, সম্মান ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কারও না কারও হাত থাকেই। ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় তেমনই একজন। ম্য়াচ গড়াপেটার অন্ধকারে ভারতীয় ক্রিকেট যখন সকলের ভরসা হারিয়েছিল, ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা যখন জাতীয় দলের খেলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল, সে সময় ভারতীয় ক্রিকেটের সম্মান পুনরুদ্ধার সৌরভের জন্যই। আর ক্রিকেট প্রশাসনে? সেখানেও তো এক চিত্র। তারপরও কেন তাঁকে বোর্ড থেকে অপসারিত করা হল! Tv9Bangla-য় ফিরে দেখা বাইশের বিতর্ক, হতাশা।

দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় ক্রিকেটে পদ আগলে বসে থাকা, নির্বাচন না হওয়া, এমন অনেক বিষয় নিয়েই বোর্ডের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা। শেষ অবধি সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসকদের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল। লোধা কমিটির সুপারিশ এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নানা পরিবর্তন আসে বোর্ডে। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গীন পরিস্থিতি ফের মুখ হয়ে উঠেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ই। তাঁর ভাবমূর্তিকে সামনে রেখেই বোর্ডে নির্বাচন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে প্রেসিডেন্ট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বোর্ডের সংবিধানেও পরিবর্তন হয়। নতুন সংবিধান অনুযায়ী অনেক আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছিল বোর্ড প্রেসিডেন্ট এবং সচিবের। আবারও বোর্ডের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয় সংবিধান সংস্কারে। প্রেসিডেন্ট এবং সচিবের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বোর্ডের তরফে কোর্টকে কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও সৌরভের ভাবমূর্তির জন্যই সবটা সম্ভব হয়েছে। এরপর বোর্ডেই পরিবর্তন!

হঠাৎই বোর্ড প্রেসিডেন্টের দৌড়ে নাম উঠে আসে ৮৩’র বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য় রজার বিনির। প্রেসিডেন্ট, সচিব দু-জনের মেয়াদ বাড়লেও সচিব নিজের পদে থেকে যান। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারিত করা হয় সৌরভকে। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্য়ান অরুণ ধুমাল একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সৌরভকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, আইপিএলের চেয়ারম্যান হওয়ার। যদিও প্রেসিডেন্ট পদ সামলানো সৌরভ তাতে রাজি হননি। হওয়ার কথাও নয়। মনে করা হয়েছিল, বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসির পদে দেখা যেতে পারে সৌরভকে। সেটাও হয়নি। সৌরভের অপসারণে ভারতীয় ক্রিকেটের বিশেষ কোনও লাভ হয়েছে কি? এই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য়। তবে এ বছর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রশাসনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, বিতর্কিত এবং হতাশার দিক ছিল সৌরভের অপসারণই।

খেলার মাঠে বাদ পড়ে প্রত্যাবর্তনের অনন্য় নজির গড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়। ক্রিকেট প্রশাসনেও আগামী দিনে এমন কিছু হয়তো দেখা যেতেই পারে। ক্য়াপ্টেন, দাদা, হেরে যাওয়ার পাত্র নন।

Leave a Reply