ঘরোয়া লিগের বড় ম্যাচ হোক আর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট নেহরু কাপ, ইডেনই বসত করেছিল একসময়। ক্রিকেটের অন্যতম সেরা মাঠেই যে পা রেখেছিলেন ফুটবল সম্রাট!
Image Credit source: Twitter
কলকাতা: তখন ইডেনে বাকেট সিট ছিল না। তখনও ইডেন আদ্যোপান্ত বিজ্ঞাপনে ঢাকা পড়ে যায়নি। ইডেন বলতে তখন আক্ষরিক অর্থেই নন্দনকানন। সবুজে ঘেরা দ্বীপ যেন। ওই সবুজ মাঠে ক্রিকেটের কত গল্পই তো জন্ম নিয়েছে। আজও ইডেনের বাতাস ফিসফিসিয়ে শোনায় সে সব কাহিনি। বাইশ গজের (Cricket) ব্যাট-বলের অক্লান্ত যুদ্ধের কি বিরতি ছিল না? ওই সবুজ মাঠের দখল কখনও না কখনও নিয়েছে ফুটবলও। ঘরোয়া লিগের বড় ম্যাচ হোক আর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট নেহরু কাপ, ইডেনই (Eden Gardens) বসত করেছিল একসময়। ক্রিকেটের অন্যতম সেরা মাঠেই যে পা রেখেছিলেন ফুটবল সম্রাট! ১৯৭৭ সালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কসমস ক্লাবের হয়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে কলকাতায় পা দিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান মহাতারকা পেলে (Pele)। ৪৫ বছর পর সেই অতীত আবার ফিরতে চলেছে ইডেনে! কীভাবে? তুলে ধরল TV9 Bangla।
সে ছিল ভরা শরতের এক সেপ্টেম্বর মাস। ৪৫ বছর আগের ২৪ সেপ্টেম্বর। পেলেকে দেখার জন্য সারা কলকাতা উপচে পড়েছিল ইডেনে। সরকারি হিসেব বলেছিল, ৮০ হাজার দর্শক হাজির ছিলেন ওই দিন। আর বেসরকারি, কে জানে কত হবে সংখ্যাটা! ওই ম্যাচের সাক্ষী থাকা অনেকেই বলেন, সে দিন ইডেনে যত লোক ছিলেন, ই়ডেনের বাইরেও ছিলেন তত মানুষ। এক ঝলক যদি পেলেকে দেখা যায়। বিশ্বের অন্যতম সেরা, ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ জেতানো, ফুটবলকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তুলে দেওয়া কৃষ্ণাঙ্গ সম্রাট একবার যদি হাত নাড়েন।
১৯৭৭ সালের সেই ইতিহাসই এ বার তুলে ধরার দায়িত্ব নিতে চলেছে সিএবি। ১২ জানুয়ারি ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। ৬ বছর পর আবার ইডেনে কোনও ওয়ান ডে ম্যাচ হতে চলেছে। বৃহস্পতিবারের ওই ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনার শেষ নেই। শীতের রোদ গায়ে মাখতে মাখতে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের দেখার জন্য কলকাতা যে ইডেনমুখী হবে, তাতে আর আশ্চর্যের কী! আর ওই দিনই ইডেনে আবার পেলেকে ফেরাতে চলেছে সিএবি। ম্য়াচের মাঝে সদ্য প্রয়াত ফুটবল সম্রাটকে দেওয়া হবে বিশেষ সম্মান। যে ইডেন পেলের স্মৃতিতে জড়িয়ে, সেই ইডেন আরও একবার পেলেতে আচ্ছন্ন হবে। ওই ম্যাচে মোহনবাগানের হয়ে খেলা সুব্রত ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, গৌতম সরকার, প্রদীপ চৌধুরীদের মতো তারকাদের আমন্ত্রম জানাতে চলেছে সিএবি।
কলকাতায় পেলে পরেও এসেছেন। সব মিলিয়ে মোট তিনবার। এই শহরে পা রাখার অনেক আগেই বাঙালি মনপ্রাণে ব্রাজিলিয়ান হয়ে গিয়েছে সেই ১৯৫৮ সাল থেকে। সে বারই প্রথম পেলে ও ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জেতা। ইতিহাস, রমনীয় মুহূর্ত, সাফল্য, এভারেস্টের সর্বোচ্চ শিখরে চিরকালীন থেকে যাওয়া পেলের সঙ্গেই ফুটবলকে ভালোবাসা এই শহরের। সেই তিনিই গত বছরের একেবারে শেষে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্যকেই ফিরে দেখবে ইডেন। ক্রিকেট থাকবে। কিন্তু বৃহস্পতি-সন্ধের ইডেন ক্ষণিকের জন্য হলেও পেলের ইডেনে বদলে যাবে!