এই শতাব্দীতেও যে অন্ধকার কাটেনি তা আরও একবার প্রমাণ করলেন বিনেশ ফোগাট। সিমোনা বাইলসের মতো কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট বছর কয়েক আগে প্রকাশ্যে কবুল করেছিলেন তাঁকে দিনের পর দিন যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে।
Image Credit source: Twitter
নয়াদিল্লি: সেই বহু চর্চিত এবং চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আরও একবার উঠে এল খেলার দুনিয়ায়। খেলার পৃথিবী মেয়েদের জন্য কতটা নিরাপদ, এ নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে বিতর্ক চলেছে। এই শতাব্দীতেও যে অন্ধকার কাটেনি তা আরও একবার প্রমাণ করলেন বিনেশ ফোগাট। সিমোনা বাইলসের মতো কিংবদন্তি জিমন্যাস্ট বছর কয়েক আগে প্রকাশ্যে কবুল করেছিলেন তাঁকে দিনের পর দিন যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। ক্রীড়ামহল প্রশংসা করে প্রশ্নও তুলে দিয়েছিল। বাইলসের মতো সাহসী মেয়ে খুব কম আছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন কোণে কত মেয়ে যে নীরবে আজও যন্ত্রণা ভোগ করছেন কে জানে? বিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), ভারতীয় কুস্তির (Indian Wrestling) অন্যতম মুখ। তিনি এ বার রেসলিং ফেডারেশনের কর্তাদের ধুয়ে দিলেন। কী বললেন তিনি? বিস্তারিত TV9 Bangla-য়।
ফেডারেশনের বিরুদ্ধে যন্তর মন্তরের ধর্না মঞ্চে একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছেন কুস্তিগিররা। যে মৌরসিপাট্টা চলছে দীর্ঘদিন ধরে তা ভাঙার জন্যই গণবিক্ষোভে সামিল হয়েছেন রেসলাররা। অলিম্পিকের মঞ্চে পদক যেমন দরকার তেমনই প্রয়োজন সম্মান, আত্মবিশ্বাস ও সেইসঙ্গে প্রয়োজন ফেডারেশনের সমর্থন। যা কখনও জুটেছে কি না, সেই প্রশ্নই এ বার উঠে যাচ্ছে। ঘটনা হল, এই ধর্না মঞ্চেই বিতর্কিত প্রশ্নে বিদ্ধ হলেন ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ব্রিজভূষণ শরণ । বিনেশ বলে দিলেন, যে সব মেয়েরা কুস্তিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছেন তাঁদের দিনের পর দিন ধরে নিগ্রহ করছেন কোচেরা। তাঁর এই বিস্ফোরক মন্তব্য যে ভারতীয় খেলায় নতুন করে আগুন জ্বালিয়ে দেবেন তাতে সন্দেহ নেই।
বিনেশ বলছেন, ” ফেডারেশনের পছন্দের বেশি কিছু কোচ দিনের পর দিন মেয়েদের নিগ্রহ করে চলেছেন। সব জেনেবুঝেও এখান থেকে মেয়ে রেসলারদের বাঁচার কোনও রাস্তা নেই। শুধু কোচেরা নন, খোদ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টই তো বহু মেয়েকে যৌন নিগ্রহ করেছেন।”
আসলে এতদিন মুখ বন্ধ রাখা বিনেশদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড, রেসলিং, বক্সিংয়ের মতো খেলাগুলোতে কোচের গুরুত্ব অপরিসীম। আর সেই সুযোগটাই কোচেরা দিনের পর দিন নিয়ে চলেছেন। বিনেশের এই বিপ্লব নিশ্চিতভাবেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। কেন মেয়েদের খেলার দুনিয়ায় নিরাপত্তা খুঁজে বেড়াতে হবে, কেন সাফল্যের পরও তিনি প্লেয়ার বা অ্যাথলিট বলে গণ্য হবেন না, কেন দিনের শেষে তিনি ‘মেয়ে’ বলে গণ্য হবেন-এই প্রশ্ন এ বার ফালা ফালা করে দেবে। বিনেশের পথে হয়তো অনেকেই হাঁটবেন।