‘চলো আনন্দ করি’ ঘরের মাঠে জিতে বিশ্বকাপের সেলিব্রেশনে মেসি


Argentina: কেরিয়ারে ৮০০ গোলের মাইলফলকে মেসি। বিশ্বকাপ সাফল্যের জন্য সতীর্থদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুললেন না। তেমনই যারা বিশ্বকাপ জিততে পারেননি সেই সমস্ত সতীর্থ ফুটবলারদেরও চেষ্টার জন্য কুর্নিশ জানালেন ক্য়াপ্টেন।

বুয়েনস আইরেস : তারিখের নিরিখে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কাতার বিশ্বকাপের রেশ কাটেনি আর্জেন্টিনার। এমনটাই তো হওয়ার কথা! দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। দেশে ফেরার পর মেসিদের নিয়ে জনজোয়ার দেখা গিয়েছে। আরও এক বার নীল-সাদা জার্সিতে নামলেন লিওনেল মেসি। তাঁকে দেখতে যে রকম টিকিটের চাহিদা ছিল, তাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা। ৬৩ হাজারের আসন-বিশিষ্ট মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে টিকিটের জন্য আবেদন হয়েছিল ১৫ লক্ষ। ভাগ্যবানরাই যেন স্টেডিয়ামে গিয়ে মেসি এবং আর্জেন্টিনার খেলা দেখার সুযোগ পেলেন। পানামার বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্য়াচে জয়ের চেয়ে বিশ্বকাপের সেলিব্রেশনই হল বেশি। ক্য়াপ্টেন মেসির জন্য় আরও একবার জনজোয়ার। পেশাদার কেরিয়ারে ৮০০ গোলের রেকর্ডও গড়লেন লিও মেসি। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।

নাচ-গান হুল্লোর। ফুটবলারদের পরিবারও উপস্থিত ছিল এমন একটা মুহূর্তে। পানামার বিরুদ্ধে ২-০ ব্য়বধানে জিতল আর্জেন্টিনা। ম্য়াচের ৭৮ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন থিয়াগো আলমাডা। শেষ মুহূর্তে গোল লিও মেসির। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর ৮০০ গোলের মাইলফলকে এ বার মেসি। আর্জেন্টিনার জয়, মেসির গোল, বিশ্বকাপ জয়ের সেলিব্রেশন। ম্য়াচের পর আর্জেন্টিনা অধিনায়ক পুর্বসূরিদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন। তেমনই বিশ্বকাপ জয়ের সেলিব্রেশনে সামিল করলেন সকলকে। লিও মেসি বলেন, ‘কোপা আমেরিকা জয়ের পর বিশ্বকাপ। এত ভালোবাসা পাচ্ছি, সকলকে ধন্য়বাদ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে আমরা বলেছিলাম, সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব।’ মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের গ্য়ালারি আরও এক বার দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানায় বিশ্ব চ্য়াম্পিয়ন দলকে।

শুধুমাত্র দল হিসেবে নয়, ব্য়ক্তিগত ভাবেও মেসির জন্য় কাতার বিশ্বকাপ স্পেশাল। আর্জেন্টিনার অপেক্ষার অবসান হয়েছে, মেসিরও। দিয়েগো মারাদোনার পর আর্জেন্টিনার সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার মেসিই। তাঁকে ঘিরে বহু আগে থেকেই স্বপ্ন দেখছিল মারাদোনার দেশ। ২০১৪ বিশ্বকাপে মেসির নেতৃত্বে ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হার। রানার্স তকমায় সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। সর্বকালের অন্য়তম সেরা লিওনেল মেসির দক্ষতা অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছিল বিশ্বকাপ না জেতায়। দেশ-বাসীর আক্ষেপ পূরণ হয়েছে, মেসিরও। সেই প্রসঙ্গ উঠে এল অধিনায়কের কথায়। বলছেন, ‘ব্য়ক্তিগত ভাবেও এই মুহূর্তের স্বপ্ন দেখেছি। অবশেষে সকলের সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ করতে পারছি।’ কোপা আমেরিকা, ফিনালিসমা, বিশ্বকাপ। অল্প সময়ের ব্য়বধানে স্বপ্নের মতোই কেটেছে আর্জেন্টিনার।

বিশ্বকাপ সাফল্য়ের জন্য় সতীর্থদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুললেন না। তেমনই যারা বিশ্বকাপ জিততে পারেননি সেই সমস্ত সতীর্থ ফুটবলারদেরও চেষ্টার জন্য় কুর্নিশ জানালেন ক্য়াপ্টেন। মেসি বলেন, ‘এই দিনটা আমাদের জীবনে এসেছে। তবে সেই সমস্ত সতীর্থদের ভুলিনি, যারা দেশকে বিশ্ব চ্য়াম্পিয়ন করতে সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। আমরা খুব কাছে পৌঁছেও কোপা আমেরিকা, বিশ্বকাপ জিততে পারছিলাম না। ওরাও এই বিশ্বকাপ জয়ের অংশ। দেশের জার্সিতে সর্বস্ব দিয়েছিল।’ আনন্দের মুহূর্তে আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হলেও দ্রুত সামলে নিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর আমরা বিশ্বকাপ জিততে পেরেছে। যতদিন না আরও একটা বিশ্বকাপ আসছে, চলো এই মুহূর্তটাকে আনন্দ করি। একটা বিশ্বকাপ জিততে কতটা পরিশ্রম, চেষ্টা প্রয়োজন এখন ভালো ভাবেই অনুভব করতে পারি। অনেক কিছুর উপরই নির্ভর করে। আমাদের জার্সিতে তৃতীয় তারা যোগ হওয়ার আনন্দে মেতে থাকি।’

Leave a Reply