২০১৪ সালে দু’জনের বিয়ে হয়। চারবছর পর চরম তিক্ততায় শেষ হয়েছিল সম্পর্ক। অথচ মহম্মদ সামি ও হাসিন জাহানের প্রেমকাহিনি যেন হিন্দি সিনেমার প্লট।
Image Credit source: Twitter
কলকাতা: দেশ-বিদেশের ক্রিকেটারদের কাছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগের (IPL) গুরুত্ব অনেক। উঠতি ক্রিকেটাররা যেমন নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শনের মঞ্চ পান তেমনই ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁদের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স। দেড় থেকে দু’মাসের টুর্নামেন্টের জন্য লাখ, কোটি টাকায় আয়। কিন্তু ভারতীয় দলের তারকা পেসার মহম্মদ সামির কাছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগ ক্রিকেট বা অর্থ রোজগারের থেকেও একটু বেশি গুরুত্ব রাখে। কারণ এই মঞ্চ থেকেই ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছিলেন সামি (Mohammed Shami)। একটা সময় ব্যাটাররা চার, ছক্কা হাঁকালেই পমপম হাতে স্বল্পবসনা সুন্দরীদের দিকে ঘুরে যেত ক্যামেরা। শরীরী ভঙ্গিতে চলত উদযাপন। মডেল হিসেবে কেরিয়ারের শুরুর দিকে তাঁদেরই মধ্যে এক বাঙালি কন্যেকে দেখে মন গলে যায় সামির। ২০১২ সালের আইপিএল চলাকালীন একটি পার্টিতে হাসিন জাহানের (Hasin Jahan) সঙ্গে পরিচয় তারকা পেসারের। ২০২৩ আইপিএল শুরুর আগে সামি-হাসিনের পুরনো লাভস্টোরি রইল TV9 Bangla-র প্রতিবেদনে।
২০১১-২০১৩ সাল পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেছেন মহম্মদ সামি। এদিকে মডেল হিসেবে কেরিয়ারের শুরুর দিকে হাসিন জাহান কেকেআরের হয়ে কাজ করার সুযোগ পান। শোনা যায়, ২০০২ সালে বীরভূমের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল হাসিনের। দম্পতির সন্তানও রয়েছে। কিন্তু কেরিয়ার তৈরি ও পড়াশোনার চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছের কারণে বনিবনা না হওয়ায় কলকাতায় চলে আসেন হাসিন। যদিও এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেনি কোনও পক্ষই। ২০১০ সালে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মডেলিং শুরু করেন হাসিন। এরপর সামির সঙ্গে পরিচয়। যা প্রেম পর্যন্ত গড়াতে সময় লাগেনি। ক্রিকেটার ও মডেলের প্রেম তখন আকাশ ছুঁয়েছিল। একে অপরকে চোখে হারাতেন সামি ও হাসিন। তাই নিজের থেকে দশ বছরের বড় ও হাসিনের ডিভোর্সি তকমাও দু’জনের প্রেমে বাধা হয়নি। দু’বছর ডেটিংয়ের পর ২০১৪ সালে ধুমধাম করে বিয়ে সারেন হাসিন ও সামি। কলকাতায় শুরু হয় সামি-হাসিনের স্বপ্নের সংসার। ২০১৫ সালে মেয়ে আইরার জন্মের পর বন্ধন মজবুত হয়। কিন্তু সেই সুখের সংসারেও লাগল ভাঙন। ২০১৮ সালে ক্রিকেটার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় নিয়ে প্রকাশ্যে আসেন হাসিন। যার মধ্যে গার্হস্থ্য হিংসা, বিবাব বহির্ভূত সম্পর্ক এবং ম্যাচ গড়াপেটার মতো অভিযোগও সামিল ছিল। নিজের অভিযোগের ভিত্তিতে বেশকিছু স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন হাসিন।
হাসিনের বোমায় সাময়িকভাবে সামির কেরিয়ারে প্রভাব ফেলে। ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগের কারণে সামির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে বিসিসিআই। পরে অবশ্য তদন্তে ক্লিনচিট পেয়ে যাওয়ায় চুক্তি ফিরে পান সামি। স্ত্রীর তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন সামি। ২০১৮ সাল থেকে সামির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চলেছে হাসিনের। সম্প্রতি সেই মামলায় জয়ী হয়েছেন হাসিন জাহান। আজ দু’জনের দুটি পথ আলাদা। মেয়ে আইরা একমাত্র বন্ধন। তবে আইপিএলের দামামা বাজলেই আজও সামি-হাসিনের পুরনো প্রেমকাহিনি ঘুরেফিরে আসে।