হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে দেশের দশটি শহর জুড়ে চলবে ক্রিকেট উৎসব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে জমজমাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মাতিয়ে দেবেন মেলোডিয়াস অরিজিৎ সিং, সুন্দরী তামান্না ভাটিয়া, রশ্মিকা মান্ধানারা।
Image Credit source: Twitter
তিথিমালা মাজী
নিজস্ব ছন্দে ফিরছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগ। কোভিডের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে আইপিএলের আসর বসেছিল ঠিকই, কিন্তু তা যেন আইপিএলোচিত নয়। কখনও দেশের বাইরে গিয়েছে আইপিএল, কখনও বিধিনিষেধ এতটাই কড়াকড়ি যে মাছি গলবারও জো নেই। হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাট তো উঠেই গিয়েছিল। কয়েকটা বছরের বিরতির পর ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ থেকে ফিরছে দর্শকদের চেনা আইপিএল। যেখানে হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে দেশের দশটি শহর জুড়ে চলবে ক্রিকেট উৎসব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে জমজমাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মাতিয়ে দেবেন মেলোডিয়াস অরিজিৎ সিং, সুন্দরী তামান্না ভাটিয়া, রশ্মিকা মান্ধানারা। গত তিনবছর ধরে যা প্রবলভাবে মিস করেছেন ক্রিকেট সমর্থকরা। এক এক করে সব ফিরছে। ফের স্বমহিমায় বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মাঠে নামিয়ে শুরু করা হয়। এ বারও তার অন্যথা হচ্ছে না। গতবার জিতেছিল গুজরাট টাইটান্স। আইপিএলের আবির্ভাবেই টুর্নামেন্ট জিতে চমকে দেওয়া হার্দিকদের এটা দ্বিতীয় মরসুম। আমেদাবাদে প্রথম ম্যাচে তাঁদের সামনে চার বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস। বহুদিন পর মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ব্যাট হাতে মাঠে নামতে দেখা যাবে। অনেকে বলছেন, এটাই নাকি মহেন্দ্র সিং ধোনির শেষ আইপিএল। অনুমান সত্যি হলে আইপিএলের ১৬তম সংস্করণে আলাদা তাৎপর্য তো রয়েছেই। জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন অনেকদিন হল। এ বার হয়তো পাকাপাকিভাবে ব্যাট তুলে রাখবেন এমএস। তেমনটা হলে, মোদীর নামাঙ্কিত স্টেডিয়াম থেকে শুরু হচ্ছে ধোনির শেষের শুরু। যার সাক্ষী থাকতে লক্ষাধিক মানুষ টিকিট কেটে নিজের আসন সংরক্ষিত করেছেন শুক্রবারের সন্ধ্যাটার জন্য।
১৬তম সংস্করণের সঙ্গে জুড়ছে একগুচ্ছ নতুন নিয়ম। ক্রিকেটে টস খুব গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচে হার-জিত অনেক সময়ই টসের উপর নির্ভর করে। ১৬তম সংস্করণে এই টসের প্রভাব কমিয়ে দলের ক্যাপ্টেনদের কপালের ভাঁজ দূর করতে নতুন নিয়ম এনেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে টসের আগে একাদশ চূড়ান্ত করতে হবে না। অধিনায়কেরা দুটি একাদশ লেখা কাগজ নিয়ে টস করতে নামবেন। এরপর টসের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে একাদশ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে তাঁদের সামনে। দ্বিতীয়ত, ম্যাচ চলাকালীন একজন ক্রিকেটার বদলানো যাবে। যাঁকে বলা হচ্ছে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার। টসের সময় একাদশের সঙ্গে চারজন অতিরিক্ত ক্রিকেটার নাম দেবেন ক্যাপ্টেনরা। ম্যাচের মাঝে এই চারজনের মধ্য থেকে একজনকে একাদশের অন্য কারও জায়গায় বদল করা যাবে। এই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ব্যাটিং ও বোলিং দুটিই করতে পারবেন। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামানো যাবে ইনিংসের ১৫ ওভারের মধ্যে। মোট ১০টি দলকে ভাগ করা হয়েছে ২টি গ্রুপে। প্রতিটি গ্রুপে ৫টি করে দল। লিগপর্বে প্রতিটি দল হোম এবং অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে ১৪টি করে ম্যাচ।
উদ্বোধনী ম্যাচের দিকে তাকালে দেখা যাবে, প্রথম ম্যাচ থেকেই সিএসকের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বাঁ পায়ে সমস্যা রয়েছে মাহির। প্র্যাকটিস সেশন মিস করেছেন। অবশ্য সিএসকে কর্তৃপক্ষের প্রবল বিশ্বাস, সন্ধ্যা সাতটার সময় উদ্বোধনী ম্যাচে টস করতে নামবেন ধোনি।
গত মরসুমটা একেবারেই ভালো কাটেনি চেন্নাইয়ের। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে নিচের দিকে ছিল সিএসকে। ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে চল্লিশোর্ধ ধোনির ধারেকাছে এখনও কেউ নেই। ১৬তং সংস্করণে সিংহদের গর্জন ফেরানোই তাঁর বড় চ্যালেঞ্জ। চর্চায় রয়েছেন বেন স্টোকস। তাঁকে কীভাবে ব্যবহার করেন ধোনি সেটাই দেখার। গুজরাট জায়ান্টসের জন্য গতবারের থেকে কাজটা আরও কঠিন হতে চলেছে। এই প্রথমবার ভিন্ন ভিন্ন ভেনুতে গিয়ে খেলতে হবে হার্দিক পান্ডিয়াদের। দলে শুভমন গিলের মতো দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ব্যাটার। রশিদ খানের ধারাবাহিকতার অভাব নেই। কেন উইলিয়ামসনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন দলে। অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া নিজেও অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে অবদান রাখতে চান।
ম্যাচের আগের দিন আমেদাবাদে ভালই বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোদী স্টেডিয়ামের পিচেও রানের বর্ষণের সম্ভাবনা। এই মাঠে ভারত-নিউজিল্যান্ড শেষ আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে রোহিতরা ২৩৪ রান করেছিলেন। শেষ পাঁচটি টি-২০ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ১৭৩।