IPL 2023 Final, CSK vs GT : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার পরও জনপ্রিয়তার নিরিখে একেবারে উপরের সারিতে রয়েছেন। কারণ ধোনি, চেন্নাই সুপার কিংস, আইপিএল- এই তিনের মিশেলে এখনও রূপকথা রচিত হয় ভারতীয় ক্রিকেটে। ধোনিযুগের অবসান দেখার জন্য এখনও যে প্রস্তুত নয় এ দেশের ক্রিকেট!
ভারতীয় ক্রিকেটকে কত ভাগে ভাগ করা হয়? কেউ বলেন গাভাসকর পূর্ব যুগ, গাভাসকর উত্তর যুগ। কেউ ব্যাখ্যা করেন সচিন পূর্ব যুগ, সচিন উত্তর যুগ হিসেবে। আবার কারও দর্শনে ভারতীয় ক্রিকেট মানে শুধুই ধোনিযুগ। যে যুগে মিশে থাকে আবেগ, রোম্যান্স, বিস্ময়, হাসি, কান্না, স্বপ্ন। ভারতীয় ক্রিকেটে ট্রফি খিদের জন্ম দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর ভারতীয় ক্রিকেটে ট্রফিকে অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। যাঁর ক্রিকেট দর্শন বিশ্ব ক্রিকেটে চর্চিত। মুহূর্তে বদলে দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের দর্শন। আইসিসির তিনটে ট্রফি তাঁর ক্যাবিনেটে। আইপিএলের জন্মলগ্ন থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের অবিসংবাদী নায়ক। তিনি কখনও মাহি, কখনও থালা আবার কখনও ক্যাপ্টেন কুল। ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম সংস্করণে ধোনিকে নায়কের চেয়ারে বসায় চেন্নাই সুপার কিংস। এরপর ধোনি আর সিএসকের রসায়ন ভারতীয় ক্রিকেটে এক নতুন সম্পর্কের জন্ম দেয়। ঝাড়খণ্ডের নয়, ধোনি হয়ে ওঠেন চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলে। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
আইপিএলে আজীবন সিএসকের জার্সিতেই খেলে এলেন। মাঝে দু’বছর খেলেন রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টসে (২ বছর নির্বাসিত ছিল সিএসকে)। চেন্নাইয়ের জার্সিতেই গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বার (১০) ফাইনাল খেলার রেকর্ড চেন্নাইয়ের দখলে। রবিবারের পর ধোনির নামের পাশে লেখা থাকবে ১১টি ফাইনাল (১টি ফাইনাল পুণের হয়ে)। চ্যাম্পিয়ন হলেই ছুঁয়ে ফেলবেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে (৫ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন)।
বয়স শুধুই একটি সংখ্যা মাত্র। ৪২ বছরেও তিনি অপ্রতিরোধ্য। ফিটনেসের চূড়ায় মাহি। ক্যাপ্টেন্সি দিয়ে যে এখনও ম্যাচ জেতা যায়- তার উদাহরণ তিনি নিজেই। শুধু চেন্নাই নয়, প্রত্যেক রাজ্যের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে মাহিভক্তরা। রবিবার আমদাবাদের ফাইনালেও ধোনির জন্য গলা ফাটাতে তৈরি গ্যালারির বড় অংশ। যাঁদের কাছে ধোনি শুধুই ক্রিকেটার কিংবা ক্যাপ্টেন নন, ভগবান।
ভারতীয় ক্রিকেটে রূপকথার নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনেকে বলছেন এটাই তাঁর শেষ আইপিএল। আবার অনেকে মাহিকে দেখতে চান পরের বছরও। ধোনি কবে ময়দান ছাড়বেন? এই উত্তর একমাত্র তিনিই দিতে পারবেন। বাইশ গজের ধোনিকে নিয়ে প্রশ্ন করা সত্যিই অবাঞ্ছনীয়। রবিবারের ফাইনালে কাপ জিতে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর মঞ্চ তৈরি ধোনির সামনে। অন্য কেউ হলে হয়তো তেমন ভাবনা নিয়ে মাঠে নামতেন। কিন্তু তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনি। সবার ভাবনার সঙ্গে তাঁর ভাবনার ফারাক কয়েক যোজন। তিন বছর আগে স্বাধীনতা দিবসে সন্ধ্যা ৭.২৯ মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানিয়ে আসমুদ্রহিমাচলকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার পরও জনপ্রিয়তার নিরিখে একেবারে উপরের সারিতে রয়েছেন। কারণ ধোনি, চেন্নাই সুপার কিংস, আইপিএল- এই তিনের মিশেলে এখনও রূপকথা রচিত হয় ভারতীয় ক্রিকেটে। ধোনিযুগের অবসান দেখার জন্য এখনও যে প্রস্তুত নয় এ দেশের ক্রিকেট!