ছিলেন ধ্যানচাঁদের শিষ্য, জীর্ণ কুঁড়েঘরে শেষ প্রহর গুণছেন প্রাক্তন হকি খেলোয়াড়


Hockey Player : ৮২ বছর বয়সী টেকচাঁদ যাদব মধ্যপ্রদেশের সাগরে একটি জরাজীর্ণ কুঁড়েঘরে একাকী লড়াই চালাচ্ছেন।

Image Credit source: Twitter

সাগর: স্ত্রী-কন্যা প্রয়াত হয়েছেন অনেকদিন আগেই। চার ভাইয়ের কেউ খোঁজ নেন না। স্থানীয় প্রশাসনও উদাসীন। জরাজীর্ণ কুঁড়েঘরে একাকী জীবনে শেষপ্রহর গুণছেন ৮২ বছরের প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় (Ex Hockey Player) টেকচাঁদ যাদব। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদের আশীর্বাদ ছিল তাঁর উপর। ধ্যানচাঁদকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। নিউজিল্যান্ড, হল্যান্ডের মতো আন্তর্জাতিক হকি টিমের বিরুদ্ধে খেলেছেন। টেকচাঁদদের দাপটে বিপক্ষ গোল করার সুযোগও পায়নি। অসামান্য প্রতিভা নিয়ে বড় হলেও বাবার মৃত্যু সব হিসেব পাল্টে দেয়। সংসারের ভার এসে পড়ে। এরপর একে একে স্ত্রী ও কন্যার মৃত্যু। ৮২ বছরের প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় টেকচাঁদ যাদব সম্পূর্ণ একা। মধ্যপ্রদেশের সাগরের একটি ভাড়ার কুঁড়েঘরে কোনওক্রমে দিন গুজরান। কেউ ফিরেও তাকান না। চরম দুরাবস্থায় দিন কাটছে টেকচাঁদের। বিস্তারিত রইল TV9 Bangla Sports-র এই প্রতিবেদনে।

মধ্যপ্রদেশের সাগরের বাসিন্দা টেকচাঁদ একটা সময় হকি প্লেয়ার ও বর্তমান রেফারি মোহর সিংয়ের প্রশিক্ষক ছিলেন। ১৯৬১ সালে নিউজিল্যান্ড ও হল্য়ান্ড হকি টিম এসেছিল ভারত সফরে। ভোপালে প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল তাদের। ভোপাল ১১-র একজন সদস্য ছিলেন টেকচাঁদ। তৎকালীন বিশ্ব হকির দুই শীর্ষ টিমকে আটকে দিয়েছিলেন টেকচাঁদরা। ফলাফল, ভোপাল ১১-র বিরুদ্ধে ড্র করে দেশে ফেরে নিউজিল্যান্ড ও হল্যান্ড। তার আগেই মেজর ধ্যানচাঁদের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আসে। এতে টেকচাঁদের খেলায় আরও ধার বাড়ে।

১৯৪০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম টেকচাঁদ স্কুলজীবন থেকে হকি খেলা শুরু করেছিলেন। বাবা ছিলেন আর্মির কনট্রাক্টর। ছেলের হকির প্রতি ঝোঁক দেখে উৎসাহ দিতেন। ডিসট্রিক্ট হকি অ্যাসোসিয়েশন টিমের হয়ে খেলতেন। তবে ১৯৬২ সালে বাবার মৃত্যুর পর সব ওলটপালট হয়ে যায়। জাতীয় দলের হয়ে হকি খেলার স্বপ্ন ভেঙে যায় টেকচাঁদের। পরিবারের পূর্ণ দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর উপর। যাঁদের জন্য কেরিয়ার বিসর্জন দিয়েছিলেন তাঁরা এখন আর কেউ পাশে নেই। বাড়িঘরদোর কিছুই নেই। ভাড়ার কুঁড়েঘরে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা কোনওক্রমে দিন কাটান। বার্ধক্যভাতা পান, সেটাতেই দিন চলে। স্থানীয় একটি সংস্থা তাঁর দুরাবস্থা দেখে এগিয়ে এসেছে। সেখান থেকে দুপুর ও রাতের খাবার আসে।

Leave a Reply