ঐতিহাসিক পদক জিতে উষার দেখা, যা বলছেন ‘মুখার্জি অ্যান্ড মুখার্জি’


কলকাতা: এশিয়ান গেমসে ঐতিহাসিক পদক জিতেছেন বাংলার সুতীর্থা এবং ঐহিকা মুখার্জি। তাঁদের বন্ধুত্ব এতটাই গাঢ়, দুই বোনের মতোই। বোঝাপড়াও দুর্দান্ত। হানঝাউতে সেমিফাইনালে অল্পের জন্য হারলেও দেশকে এনে দিয়েছেন ঐতিহাসিক পদক। এই প্রথম এশিয়ান গেমস টেবল টেনিস ডাবলসে পদক পেল ভারত। আর ম্যাচ দেখলেন স্বয়ং পিটি উষা! তাঁদের উৎসাহ দিলেন। ম্যাচ শেষে দেখাও করেন। ভারতীয় ক্রীড়ার কিংবদন্তি পিটি উষা সোশ্যাল মিডিয়ায় সুতীর্থা-ঐহিকার সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লেখা-‘দুর্দান্ত দুই প্লেয়ার, সুতীর্থা-ঐহিকার ম্যাচ দেখলাম। টিটিটে মেয়েদের ডাবলসে প্রথম বার পদক পেল ভারত। ওরা ইতিমধ্যেই ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে। বাকিদেরও প্রেরণা জোগাবে। অনেক অভিনন্দন।’ সুতীর্থা-ঐহিকার ‘মুখার্জি অ্যান্ড মুখার্জি’ জুটিতে ভারতীয় টেবল টেনিসও যেন ‘উষা’র আলো দেখল। পদক জয়ের পর সাইয়ের সঙ্গে বিশেষ কথোপকথনে নানা বিষয় খোলসা করলেন সুতীর্থা-ঐহিকা। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচ। ফাইনালে যাওয়ার মতোই পারফর্ম করেছে সুতীর্থা-ঐহিকা জুটি। শেষ অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে বিজয়ী জুটির জন্য। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ম্যাচ গড়ায় সপ্তম গেমে। নির্ণায়ক সপ্তম গেমে ছন্দপতন। সপ্তম গেমে কী হল? সুতীর্থা বলেন, ‘খুবই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ওরা মিসই করছিল না। আমরাও মানসিক ভাবে একটু ভেঙে পড়ি। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। ওরা সেটে পেরেছিল।’

কে অ্যাটাক করবে, কে ডিফেন্স, এটা কী ভাবে ঠিক করলেন? সুতীর্থা বলতে শুরু করেন, ‘আমিই মূলত অ্যাটাক করি। কারণ, ও (ঐহিকা) যে রাবার ব্যবহার করে তাতে ডিফেন্স খুব ভালো হয়। আমরা সেটাই করছিলাম। অতীতেও লাভ হয়েছে। আজও সব ঠিকই চলছিল।’ এমন পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল? ঐহিকা বলেন, ‘ম্যাচের আগে কিছুটা পরিকল্পনা গড়ি। এর পর ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা বদলায়।’

ঐহিকা জানালেন তাঁর বিশেষ রাবারের কথা, ‘ছোট থেকেই এই রাবার ব্যবহার করি। কোচই আমাকে বলেছিলেন অ্যান্টিপেন্টো রাবারের কথা। তখন অবশ্য এটার বিশেষ চল ছিল না। সহজলভ্যও ছিল না। এখন অনেক ভারতীয় প্যাডলারই এই রাবার ব্যবহার করেন। তবে এই রাবার দিয়ে খেললে, সঠিক ব্যবহার না জানলে খুব কঠিন। ব্যাক অ্যান্ডে ডক্টর নিউবার রাবার। জার্মানির এক প্যাডলারের খেলা দেখে এই রাবার পছন্দ করেছিলাম।’

ঐতিহাসিক পদক প্রসঙ্গে ঐহিকা জুড়লেন, ‘অনুভূতিটা বোঝাতে পারব না। সত্যি বলতে, ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে আরও ভালো হতে পারতো। আপাতত এই পদক নিয়ে সন্তুষ্ট। আরও পরিশ্রম করে পদকের রং বদলাতে চাই।’

কোয়ার্টার ফাইনালে চিনের প্রতিপক্ষর বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছিল। তাঁদের হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন সুতীর্থা-ঐহিকা। এ দিন কোরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ হলেও স্থানীয় দর্শকরা ভারতকে সমর্থন করেনি। যা নিয়ে ঐহিকা বললেন, ‘চাইনিজ দর্শক নিয়ে আমাদের মাথাব্য়থা ছিল না। কেন না, ভারতীয় টিমের প্রচুর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ওরা আমাদের চিয়ার করেছেন।’

Leave a Reply