তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে এমন একটা দল বিশ্বকাপ জিতেছে, যাদের কোনও স্পেশালিস্ট স্পিনার ছিল না! ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ যৌথ ভাবে আয়োজন করেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ফাইনালেও মুখোমুখি হয় দুই আয়োজক দেশ। ফাইনালে বাজিমাত অস্ট্রেলিয়ার। স্কোয়াডে বাঁ হাতি স্পিনার জাভিয়ের ডোহার্তি ছিলেন। তবে ফাইনালে স্পেশালিস্ট স্পিনার ছাড়াই নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই তথ্য যেমন ঠিক, তেমনই ভুললে চলবে না, ফাইনাল হয়েছিল মেলবোর্নে। পুরো টুর্নামেন্ট হয়েছিল পেস সহায়ক দুই দেশে। এ বারের পরিস্থিতি একে বারেই আলাদা। উপমহাদেশে বেশির ভাগ মাঠেই স্পিনাররা সুবিধা পাবে এটাই প্রত্য়াশিত। অস্ট্রেলিয়া কি স্কোয়াড পরিবর্তনে ভুল করল?বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
বিশ্বকাপের স্কোয়াডে পরিবর্তনের সময়সীমা ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। শেষ মুহূর্তে অ্যাস্টন অ্যাগারের জায়গায় মার্নাস লাবুশেনকে যোগ করা হয়। অজি বোর্ডের নির্বাচক প্রধান জর্জ বেইলি এর কারণও জানিয়েছিলেন। অ্যাস্টন অ্যাগারের চোট রয়েছে। অথচ এই অজি স্কোয়াডে রাখা হয় চোট থাকা ট্রাভিস হেডকে। প্রথম দিকের কয়েক ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে না। জর্জ বেইলি আরও জানিয়েছিলেন, চোট থাকা দুই ক্রিকেটারকে রাখা ঠিক হত না, সে কারণেই অ্যাগারের পরিবর্তে লাবুশেন। অ্যাগারকেও তো পরের দিকে পাওয়া যেতে পারত!
মার্নাস লাবুশেন প্রাথমিক স্কোয়াডে ছিলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অনবদ্য পারফর্ম করেছিলেন লাবুশেন। ভারতের বিরুদ্ধেও ওয়ান ডে সিরিজে পারফর্ম করেছেন। তাঁকে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত নয়। ভারতের মাটিতে এক বিশ্বকাপে এক বিশেষজ্ঞ স্পিনার কি যথেষ্ঠ? অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে এক বার নজর দেওয়া যাক- প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথ, অ্যালেক্স ক্যারি, জশ ইংলিশ, শন অ্যাবট, ক্যামেরন গ্রিন, জশ হ্যাজলউড, ট্রাভিস হেড, মার্নাস লাবুশেন, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টইনিস, ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যাডাম জাম্পা, মিচেল স্টার্ক।
বিশেষজ্ঞ স্পিনার বলতে অ্যাডাম জাম্পা। তবে বিশ্বকাপের আগে গত কয়েকটি ম্যাচ তাঁর খুব ভালো কাটেনি। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এক ম্যাচে ১০ ওভারে ১১৩ রানও দিয়েছেন। ভারতের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজেও দক্ষতা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেননি। বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপে দুটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল। বৃষ্টিতে প্রথম ম্যাচ নিষ্ফলা ছিল। জাম্পাকে বোলিংয়ে আনা হয়নি। গত কাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও বিশ্রামেই রাখা হয়েছিল। আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে বড় মঞ্চে পারফর্ম করার মতো কতটা প্রস্তুত জাম্পা, প্রশ্ন থাকেই।
স্কোয়াডে বিশেষজ্ঞ স্পিনার শুধু জাম্পা থাকলেও বিকল্প আরও রয়েছে। পার্টটাইম স্পিনার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। স্টিভ স্মিথ কেরিয়ার শুরু করেছিলেন লেগ স্পিনার হিসেবেই। পরবর্তীতে ব্যাটিং স্কিলে নজর দেন। বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার হয়ে ওঠেন। এখন মাঝেসাঝে বোলিং করেন। ট্রাভিস হেড, লাবুশেনও পার্টটাইম স্পিনারের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন। কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে পার্টটাইম স্পিনারদের ওপর ভরসা করা ঝুঁকির নয় কি?
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ার্ম ম্যাচে স্মিথ ৪ ওভার বোলিং করেন। দিয়েছেন ৪০ রান! ডেভিড ওয়ার্নার ২ ওভারে ৪১! মার্নাস লাবুশেন তিন উইকেট নিলেও ওভার প্রতি ৯ রান দিয়েছেন। ভরসা একমাত্র ম্যাক্সওয়েল। তবে ওয়ার্ম ম্যাচ আর বিশ্বকাপ এক নয়। চেন্নাইয়ে স্পিন সহায়ক পিচের প্রত্যাশা করা যায়। তেমনই টুর্নামেন্ট যত এগবে, বাকি ভেনুগুলিতেও স্পিনাররা সাহায্য পাবেন। জাম্পা কিংবা ম্যাক্সওয়েল কোনও ২-৩ ম্যাচে ফিট না থাকলে!