বিশ্বকাপের শুরুতেই হোঁচট খেয়েও উঠে দাঁড়িয়েছে ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে আজ দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে আফগানিস্তান। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভালো খেললেও বড় ইভেন্টে তাদের স্নায়ুর চাপ সামলাতে না পারার ব্যর্থতা, নতুন নয়। এশিয়া কাপেও এমন হয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে আরও বেশি। দিল্লির এই মাঠে গত ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। হাইস্কোরিংই শুধু নয়, রেকর্ডের ম্যাচ হয়েছে সেটি। সবমিলিয়ে ম্যাচে ৭৫৪ রান উঠেছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা সর্বাধিক। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসে তিনটি সেঞ্চুরি ছিল। এখানকার পিচে ব্যাটিং তাণ্ডব দেখা যাবে, এমনটাই প্রত্যাশা। ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচে নানা বিষয়ে নজর থাকবে। বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
বিরাট কোহলির হোম গ্রাউন্ড: বিরাট কোহলির ক্রিকেটারের কাছে সব মাঠই হোম গ্রাউন্ড। তবে দিল্লি তাঁর কাছে স্মৃতির জায়গা। এই মাঠেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, রঞ্জি ট্রফি খেলে নির্বাচকদের নজরে পড়া এবং জাতীয় দলে সুযোগ। দিল্লির এই স্টেডিয়ামে তাঁর নামে প্যাভিলিয়নও রয়েছে। নিজের নামাঙ্কিত প্যাভিলিয়নের সামনে খেলার সুযোগ! প্রথম বার খেলতে চলেছেন তা নয়। আইপিএল, টেস্টও খেলেছেন। তবে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলার সুযোগ এ বারই প্রথম। স্বাভাবিক ভাবেই আবেগে ভাসছেন বিরাট। তাঁর অনেক বন্ধু, স্বজনই উপস্থিত থাকবেন মাঠে। এমন একটা ভেনুতে দুর্দান্ত একটা ইনিংস উপহার দেওয়াতেই নজর থাকবে বিরাটের।
বার্থ-ডে বয় হার্দিক: ভারতীয় টিমের সহ অধিনায়ক। তাঁর জন্মদিনও। স্পেশাল দিনে, স্পেশাল পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা থাকবে হার্দিকের ওপর। চেন্নাইয়ে প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে ভরসা দিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে তিনি যখন নামেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। ব্যাটিংয়ে সীমিত সুযোগ হাতছাড়া করেননি। নতুন ভেনু, নতুন চ্যালেঞ্জ। গত ম্যাচের মতো পিচ থাকলে, বোলিংয়ে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে হার্দিককে। এটাই হয়তো তাঁর জন্মদিনে ‘সেরা’ উপহার হতে পারে!
বিরাট বনাম নবীন: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সৌজন্যে হঠাৎই মুখরোচক হয়ে উঠেছে বিরাট কোহলি বনাম নবীন উল হকের দ্বৈরথ। এশিয়া কাপের স্কোয়াডে সুযোগ হয়নি আফগানিস্তানের তরুণ পেসার নবীন উল হকের। বিশ্বকাপের স্কোয়াডে তিনি জায়গা পেতেই ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ তৈরি হয়। বিরাট কোহলির মানের ব্যাটারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে কার্যত সমস্যায়ই পড়েছেন নবীন। যে প্রান্তেই খেলতে যান, কোহলি ধ্বনিতে নাজেহাল হতে হয় নবীনকে। আর আজ তো প্রকৃত অর্থেই বিরাটের হোম গ্রাউন্ড। পারফরম্যান্সে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার পালা। তেমনই গ্যালারিকেও সামলানোর চ্যালেঞ্জ নবীনের সামনে।
হার্দিক পান্ডিয়া -রশিদ খান: আফগানিস্তান ক্রিকেটের আইকন রশিদ খান। বিশ্বের যেখানেই খেলতে যান, তাঁকে নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ থাকে। মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব। ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরাও রশিদকে খুবই পছন্দ করেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে গত দু-বছর গুজরাট টাইটান্সে খেলছেন রশিদ। তাঁর অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। এক দিকে বন্ধুত্ব, অন্য দিকে, দেশের হয়ে সেরা পারফরম্যান্সের তাগিদ। হার্দিক বনাম রশিদ দ্বৈরথও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে। রশিদের লেগ স্পিনকে ভারতের সেরা ব্যাটাররা কী ভাবে সামলান, নজর সেদিকেও।
অজয় জাডেজা: চেন্নাইয়ের পিচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। দিল্লিতে আকর্ষণ অজয় জাডেজা। বিশ্বকাপের আগেই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড অজয় জাডেজাকে মেন্টর করেছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক, অন্যতম সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটার এবং দুর্দান্ত ফিল্ডার। অজয় জাডেজার উপস্থিতি এখনও অবধি খুব বেশি পার্থক্য গড়ে দিতে পারেনি আফগান টিমে। ভারতের বিরুদ্ধে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ডাগআউটে থেকে কোনও পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন কিনা, সেদিকেও নজর থাকবে।