ICC ODI World Cup 2023: বাবা বলেছিল ২০০ রান করলে কথা হবে, আর ফোন আসেনি, সেই অতীত আজও চোখে জল আনে শাহিদির


লখনউ: তেইশের বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) অঘটনের সূত্রপাত আফগানিস্তানের হাত ধরে। তথাকথিত শক্তিশালী দলদের পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে আফগান বাহিনী। রোজ নতুন ইতিহাস লিখছেন রশিদ খানরা। দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন হসমতউল্লাহ শাহিদি। বাবা চেয়েছিলেন, ছেলে পড়াশোনা নিয়ে থাকুক। কিন্তু ক্লাসরুমের জানালা থেকে তাঁকে ডাকত মাঠ। তাই কোনও রকমে পড়াশোনা শেষ করেই পাকাপাকিভাবে বাইশ গজে আসেন আফগান অধিনায়ক হসমতউল্লাহ শাহিদি। নেদারল্য়ান্ডসের মুখোমুখি হওয়ার আগে, ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা অজানা গল্প শোনালেন শাহিদি। কী বলছেন তিনি? TV9 Bangla Sports-এ বিস্তারিত।

দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে জোর দিয়েছেন শাহিদি। নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য ক্রিকেট খেলেন তিনি, জানিয়েছেন সে কথাও। ছোট থেকেই ক্রিকেটকে ভালোবাসতেন। বাবা ছিলেন পর্দার্থবিদ্যার অধ্যাপক। চেয়েছিলেন ছেলেও বড় হয়ে পড়শোনা নিয়েই থাকবে। তবে ছেলে বেছে নিয়েছিলেন ব্যাট বলকেই। এই প্রসঙ্গে আফগান অধিনায়ক বলেন, “আমি উচ্চশিক্ষিত পরিবারের ছেলে। বাবা অধ্য়াপক ছিলেন। ৪৪ টি বিজ্ঞানের বই লিখেছেন। বাবা চেয়েছিলেন পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলি। তবে আমার ভালোবাসা ছিল ক্রিকেট।” শাহিদির অকপট স্বীকার, পড়াশোনায় খুব একটা ভালোও ছিলেন না তিনি। পদার্থবিদ্যায় তো একেবারেই নয়। তাই শেষমেশ নিজের ভালোবাসা ক্রিকেটকেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেন। তবে বাবার মন রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিও পেরোন তিনি। তবে ক্রিকেট ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। আর পড়াশোনা, বাবাকে খুশি করার জন্য়।

আফগান অধিনায়কের জীবনের একটাই আফসোস, বাবাকে শেষ বারের মতো চোখের দেখা দেখতে পাননি তিনি। শেষ কথা হয়েছিল ফোনেই। বাবা বলেছিলেন ২০০ রান করে কথা হবে। আর সেই ফোন আসেনি। এই প্রসঙ্গে শাহিদি বলেন. “টেস্ট খেলছিলাম। প্রথম ইনিংসে ১২০ রান করে অপরাজিত ছিলাম। বাবাকে ফোন করে বলেছিলাম, আমার জন্য প্রার্থনা করো যাতে ২০০ রান করতে পারি। মনে আছে বাবা বলেছিল, বাড়িতে অনেক লোকজন রয়েছে পরে কথা বলব। তুমি ২০০ রান করার পর কথা হবে। বড় কিছু করবে তুমি। ওটাই ছিল শেষ কথা। বাবা চলে যায় তারপর।” অতীতের সে সব মুহূর্তের কথা বলতে গেলে আজও চোখ ভিজে যায় শাহিদির। চলতি বিশ্বকাপে আফগানদের আগ্রাসী পারফরম্যান্সে প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছে চারিদিক থেকে। আর আফগানদের এই জয়ের পিছনে অবদান সেই ছেলেটির ,যে সে দিন ব্যাট-বল ছেড়ে পড়াশোনায় মন দিলে হয়তো আজ ভারতের মাটিতে আফগান কাব্য লেখা হত না রশিদ খানদের।

Leave a Reply