ম্যাক্সির ইনিংস নিয়ে কিংবদন্তি সচিনের অনবদ্য বিশ্লেষণ


মুম্বই: ক্রিকেট বিশ্বের ঘোর কাটছে না। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কী করলেন! এটাই যেন বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ইনিংস এখন অনেকের কাছেই প্রেরণা। জীবনে চলার পথেও যেন এই ইনিংসকে উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়। হারার আগে হারতে নেই, লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ম্যাক্সওয়েল সেটাই করেছিলেন। নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়েও দুর্দান্ত একটা ইনিংস। ম্যাক্সির ইনিংসে মজে মাস্টারব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকরও। নিজের মতো করে বিশ্লেষণও করলেন। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তানের দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একের পর এক ধাক্কা অজি শিবিরে। উল্টো প্রান্তে দাঁড়িয়ে দলের বিপর্যয় দেখছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১৯ ওভারের মধ্যেই ৯১ রানে ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা দেখাচ্ছিল মাত্র ১ শতাংশ। এরপরই ম্যাক্সওয়েল ঝড়।

বিশ্বকাপের মঞ্চে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন কিছুদিন আগেই। দলের বিপদে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৭৬ বলে সেঞ্চুরিতে ম্যাক্সওয়েল। সেখানেই ইতি নয়। শেষ অবধি মাত্র ১২৮ বলে ২০১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ছয় মেরে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ এবং দলের জয় নিশ্চিত করেন। মুম্বইয়ের প্রচণ্ড গরমে হিমশিম অবস্থা ছিল ম্যাক্সির। সেঞ্চুরির পরই পায়ে টান ধরে। কোমরেও সমস্যা ছিল। দৌড়তে পারছিলেন না। পা নড়াতেও সমস্যা হচ্ছিল। সেঞ্চুরির পর কার্যত জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলে যান। একের পর এক দর্শনীয় শটে বল আছড়ে পড়ে বাউন্ডারিতে। পায়ের কোনওরকম মুভমেন্ট ছাড়াই একের পর এক অনবদ্য শট।

ক্রিকেট শিখতে আসা প্রত্যেককেই বোঝানো হয় ফুটওয়ার্কের কথা। কেরিয়ারের শেষ দিন পর্যন্তও একজন ব্যাটারের জন্য ফুটওয়ার্ক খুবই জরুরি। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফুটওয়ার্ক ছাড়াও যে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা যায়, ম্যাক্সওয়েল যেন সেটাই দেখিয়েছেন। কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরও মুগ্ধ ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসে। ম্যাক্সির ইনিংসের বিশ্লেষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘জীবন এবং ক্রিকেটের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে। অনেক সময় এগনোর জন্য পিছোতে হয়। ঠিক যেন স্প্রিংয়ের মতো। ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটাও তেমনই। ক্র্যাম্পের জন্য ফুটওয়ার্কই করতে পারছিল না। কিন্তু ওকে ক্রিজে থাকতেই হত। ফুটওয়ার্ক না থাকার ফলে ওকে কিন্তু মাথা সোজা এবং জায়গায় শক্তভাবে দাঁড়িয়ে শট খেলতে হয়েছে। পরিস্থিতি ভিন্ন হলে নিজেকেও সেই অনুযায়ী মানিয়ে নিতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে যেন কোনও ফুটওয়ার্ক না থাকাটাই দুর্দান্ত ফুটওয়ার্ক।’

পুরুষদের ক্রিকেটে রান তাড়ায় কোনও ক্রিকেটারের ডাবল সেঞ্চুরি ছিল না। সেই নিরিখে রেকর্ড গড়েন ম্যাক্সওয়েল। তেমনই ওয়ান ডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়নও হয়েছেন ম্যাক্সি। এ বারের বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ গড় ও ১৫৩ স্ট্রাইকরেটে ৩৯৭ রান করেছেন ম্যাক্সওয়েল।

Leave a Reply