আমেদাবাদ: কত কাছে, তবু কত দূর…। সেমিফাইনালের দরজাটা দেখতে পাচ্ছিল আফগানিস্তান। প্রবেশ করা যেত কিনা পরের প্রশ্ন। দরজার এক্কেবারে সামনে পৌঁছে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করাই যেত। কে জানে, হয়তো সেমিফাইনালে পৌঁছেও যেতে পারত আফগানিস্তান। আগাম সেলিব্রেশনও শুরু হয়ে গিয়েছিল। ম্যাক্সওয়েল এমন ‘হাইলাইটস’-এর মতো ইনিংস খেলবে সেটাই বা কে প্রত্যাশা করেছিল! সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ আফগানিস্তানের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমিফাইনালের সম্ভাবনা নেই। তবে মাথা উঁচু করেই বিশ্বকাপ দৌড় শেষে নজর আফগান শিবিরের। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
গত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান। ম্যাচের আগের দিন ওয়াংখেড়েতে আফগান অনুশীলনে হাজির হয়েছিলেন স্বয়ং মাস্টারব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। তাঁর থেকে মূল্যবান পরামর্শ পান আফগান ক্রিকেটাররা। মাস্টারের পরামর্শ দারুণ কাজেও লাগান আফগান তরুণ ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। বিশ্বকাপের মঞ্চে আফগানিস্তানের প্রথম সেঞ্চুরিয়ন হিসেবে ইতিহাস গড়েন বছর ২১-এর ইব্রাহিম।
পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ২৯২ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। বোলাররাও দুর্দান্ত শুরু করে। ১৯ ওভারের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার ৭ উইকেট নেয় আফগানিস্তান। বোর্ডে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন মাত্র ৯১। আফগানিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ। প্রয়োজন ছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট। দু-বার ক্যাচও ওঠে। মুজিব উর রহমান শর্ট থার্ডে হাতের ক্যাচ ফেলেন। ম্যাক্সি তখন মাত্র ৩৩ রানে ব্য়াট করছেন। মুজিবের হাতে সেই ক্যাচ জমে গেলে? আফগানিস্তান আজ অ্যাডভান্টেজ নিয়েই নামতে। তাদের প্রেরণা থাকত সেমিফাইনাল। ম্যাক্সওয়েল একাই ২০১ রানের ইনিংসে আফগানিস্তানের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেন।
তেইশের বিশ্বকাপে অন্যতম ধারাবাহিক দল দক্ষিণ আফ্রিকা। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারে তাদের বড় ধাক্কা দিয়েছিল। ধারাবাহিক বিধ্বংসী ক্রিকেটে সেমিফাইনালও নিশ্চিত করেছে প্রোটিয়ারা। কিন্তু গত ম্যাচে ভারতের কাছে লজ্জার হার। ঐতিহ্যের ইডেন গার্ডেন্সে তাদের বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইন আপ মাত্র ৮৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছে। ২৪৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের ধাক্কা কাটিয়ে সেমিফাইনালের আগে জয়ে ফিরতে মরিয়া প্রোটিয়া শিবির। শেষ চারে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারে আফগানদের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের সম্ভাবনা না থাকলেও ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত আফগানিস্তানের। পয়েন্ট টেবলে ৬ নম্বরে রয়েছেন রশিদ খানরা। সেখান থেকে আর নামার সম্ভাবনা নেই। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিশ্চিত। বরং শেষ ম্যাচে প্রোটিয়াদের হারাতে পারলে ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাসের ডালি সঙ্গী করে এ বারের মতো বিশ্বকাপকে বিদায় জানাতে পারবে।