দিস টাইম ফর আফ্রিকা! ২০১০ ফুটবল বিশ্বকাপ মনে পড়ে? সে বারের ফিফা বিশ্বকাপের থিম সং ছিল এটাই। শাকিরার সেই ওয়াকা…ওয়াকা… এ বার ক্রিকেট বিশ্বকাপে যেন দক্ষিণ আফ্রিকা টিমেরই থিম সং! ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপে এর আগে চার বার সেমিফাইনালে উঠেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তারকাখচিত দল। কিন্তু একবারও সেমিফাইনালের বাধা পেরোতে পারেনি। সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ‘চোকার্স’ তকমা। বিশ্বকাপে পঞ্চম বার সেমিফাইনালে নামছে প্রোটিয়ারা। ইডেন গার্ডেন্সে আজ তাদের প্রতিপক্ষ পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
বিশ্বকাপের আগে থেকেই দুরন্ত ক্রিকেট খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলেছে। প্রথম দু-ম্যাচ হেরে পিছিয়েছিল প্রোটিয়ারা। টানা তিন ম্যাচে দুরন্ত পারফরম্যান্স এবং সিরিজ জয়। বিশ্বকাপের লিগ পর্বেও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। লিগ পর্বে মাত্র দুটি ম্যাচ হেরেছে তারা। নেদারল্যান্ডস এবং ভারতের কাছে। বাকি সব ম্যাচেই বিধ্বংসী ক্রিকেট প্রোটিয়াদের। বিশ্বকাপের মঞ্চে সর্বাধিক স্কোরের রেকর্ডও তাদের দখলে। এ বারের বিশ্বকাপেই গড়া। তারপরও ইডেন গার্ডেন্সের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা যেন আন্ডারডগ। এর কারণ, তাদের পরিসংখ্যান।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা যে চারবার হেরেছে তার মধ্যে দু-বার অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ১৯৯৯ এবং ২০০৭ বিশ্বকাপ। না চাইলেও সেই পরিসংখ্যান, অতীত, ভয়ঙ্কর ইতিহাস তাড়া করবেই। সব ভুলে নামার চ্যালেঞ্জ দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। সঙ্গে অন্য অস্বস্তিও রয়েছে। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা খেলতে পারবেন তো? বছরের শুরুতে স্বপ্নের ফর্মে ছিলেন বাভুমা। কিন্তু বিশ্বকাপে তাঁর পারফরম্যান্স ফিটনেসের চেয়েও বেশি অস্বস্তির। তেম্বা নিজেও চিন্তিত ফর্ম। আর ফিটনেস নিয়ে ম্যাচের আগের দিনই জানিয়ে দিয়েছেন, একশো শতাংশ ফিট নন। ইডেনে কিছুক্ষণের সেই দৌড় যেন ফিটনেস টেস্টই ছিল। তেম্বা খেলতে না পারলে? হয়তো শাপে বরও হতে পারে প্রোটিয়া শিবিরের কাছে!
অস্ট্রেলিয়ার কাছে ইডেন গার্ডেন্স স্মৃতির মাঠ। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি এসেছিল এই মাঠ থেকেই। ১৯৮৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৭ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া। প্রথম বিশ্বজয়ের মাঠে তেইশের ফাইনালের লক্ষ্যে নামছে অজিরা। ম্যাচের আগের দিন প্র্যাক্টিসের পথে হাঁটেনি পুরো অস্ট্রেলিয়া টিম। একমাত্র ট্রাভিস হেড ইডেনে ঘণ্টাখানেক ব্যাটিং করেন। তার আগের দু-দিনই জোর কদমে অনুশীলন করেছে অজিরা। আর আসল প্রস্তুতি তো মানসিক! দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনায় সেই প্রস্তুতিতে যেন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। কিন্তু ওই যে, প্রোটিয়াদের এ বার অলিখিত থিম সং, ‘দিস টাইম ফর আফ্রিকা’! চোকার্স তকমা সরিয়ে ফেলতে প্রথম ফাইনালই লক্ষ্য।