Jasprit Bumrah: ‘এ শহর জানে তাঁর সবকিছু’, ফাইনালের আগে কী বলছেন বুমরার ছেলেবেলার কোচ?


অভিষেক সেনগুপ্ত

আমেদাবাদ: ভারতীয় ক্রিকেট দলের সবচেয়ে বড় শক্তি কী? ব্যাটিংকে বরাবরই কৃতিত্ব দেওয়া হয়। বিশ্বকাপে অন্য দলের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছে ভারতের বোলিং। তার অন্যতম স্তম্ভ বুমরা। আর একটা রাতের অপেক্ষা মাত্র। তারপরই আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি ভারত-অস্ট্রেলিয়া। এক যুগ পর বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত। উন্মাদনা যেন বাঁধ মানছে না ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। ভারতের হাতেই উঠবে বিশ্বকাপ। এই আশা নিয়ে রবিবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে সারা দেশ। নজর থাকবে আর একজনের দিকে। তিনি জসপ্রীত বুমরা। এই ‘আমেদাবাদ শহর জানে বুমরার সবকিছু’। এই শহরে খেলেই এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটারদের ত্রাস হয়ে উঠেছেন বুমরা। এ বার ঘরের মাঠে অজিদের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলবেন তিনি। আর তাঁর আগে TV9 Bangla Sports খুঁজে নিয়েছে এমন একজনকে, যে ‘কিশোর’ ভারতীয় ক্রিকেটকে উপহার দিয়েছেন বুমরাকে। তাঁর ছেলেবেলার কোচ। শিষ্যকে নিয়ে কী বলছেন কোচ?

আজও, রয়্যাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে একই চিত্র। নেটে অনুশীলন করছে কচিকাঁচারা। ঠিক যেমন একদিন এই মাঠেই হাজির হতেন বুমরা। তাঁকে যিনি গড়ে তুলেছেন, তিনি হলেন কিশোর ভাই ত্রিবেদী। বুমরার ছেলেবেলার কোচ। নির্মাণ বিদ্যালয়ের পড়তেন বুমরা। রয়্যাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বুমরাকে দেখে কিশোর ভাই বুঝেছিলেন এই ছেলে অনেক দূর যাবে। সেই মতোই তাঁকে গড়েপিঠে নিয়েছিলেন। TV9 Bangla-এর সঙ্গে কথা বলতে-বলতে এক মজার ঘটনা তুলে ধরেছেন কোচ। কী সেই ঘটনা? বুমরার সামনে খেলতে নাকি একপ্রকার ভয় পেত অন্যান্য ছেলেরা! কোচের কাছে নালিশ আসত, “ও বড্ড জোরে বল করে।” তবে জহুরী ঠিকই ‘জহর’ চিনেছিলেন। আসলে কোচের কাজই তো তাই, প্রতিভাদের খুঁজে বের করা। তাঁদের যোগ্য জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। কিশোর ভাইও সেই কাজটাই করেছিলেন। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার নির্বাচকদের সঙ্গে বুমরার বিষয়ে কথা বলেন কিশোর ত্রিবেদী।

এত অল্প বয়সে এক্সপ্রেস গতিতে বল করতে গুজরাট শহরে কাউকে দেখেননি কিশোর ভাই। সে কথাও নির্বাচকদের কানে পৌঁছে দেন। এরপর জেলা, আন্তঃজেলা, গুজরাট টিম, আইপিএল। একের পর এক ধাপ পেরিয়ে উঠে আসেন বুমরা। সে দিনের ছোট ছেলেটা আজ দেশের জার্সিতে লড়ছে। বুম বুম বুমরা ম্যাজিকে বুঁদ ক্রিকেটবিশ্ব। শিষ্যর কোনও ম্যাচ মিস করেন না কিশোর। জানালেন, এই বিশ্বকাপে বুমরার প্রতিটা স্পেলই তাঁর ভালো লেগেছে। নিজের হাতে গড়েছেন তাঁকে, টান তো থেকে যায়ই। সেভাবে যোগাযোগ না থাকলেও দূর থেকে সবসময় আশীর্বাদ দিচ্ছেন বুমরাকে। আর সবার আগে এগিয়ে রাখছেন শিষ্যকেই। সবরকম পরিস্থিতিতে কামাল করবে তাঁর জসপ্রীত, একশো শতাংশ নিশ্চিত কিশোর ভাই।

চোট সারিয়ে ফিরেই জাত চিনিয়েছেন বুমরা। তবে তাঁর ছেলেবেলার কোচ মনে করছেন ব্যতিক্রমী অ্যাকশনের জন্য নয়, চাপের জন্য চোট লাগে বুমরার। তিন ফরম্যাটে খেলা মুখের কথা নয়। তাই চাপ একটু কমলে হয়তো ভালো হয়, মনে করছেন কিশোর ভাই। ভারতকে জেতাবে বুমরা আর পাঁচ জন ভারতীয়র মতো এই আশায় বুক বাঁধছেন তিনিও। আর বুমরাকে দেখেই হয়তো স্বপ্ন বুনছে আমেদাবাদের ছেলেমেয়েরা। জহুরীর কাজ করে চলেছেন কিশোর ভাইয়ের মতো কোচেরা। আবার হয়তো এই শহর থেকেই উঠে আসবে আরও কোনও নতুন প্রতিভা!

Leave a Reply