অজিদের বিরুদ্ধে নামার প্রস্তুতিতে মুকেশ কুমার। ছবি-X
বিশাখাপত্তনম: গানের সঙ্গে কি বোলিংয়ের কোনও মিল আছে? খুঁজলে পাওয়া যেতেই পারে। যেমন বাংলার পেসার মুকেশ কুমারের (Mukesh Kumar) নামের সঙ্গে! কিংবদন্তি গায়ক মুকেশকে সঙ্গীতপ্রেমীদের কে না চেনেন! তাঁর ছিল সুর-তাল-ছন্দ। জাতীয় দলের তরুণ পেসার মুকেশের রয়েছে লাইন-লেন্থ-সুইং। এক্সপ্রেস গতির বোলার নন। তবে সঠিক লাইন-লেন্থ বজায় রেখে একটানা বোলিং করে যেতে পারেন। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে তাঁর সাফল্য নজরকাড়া। আর এ বছর তো স্বপ্নের মতো কাটছে! সফর দীর্ঘমেয়াদী করতে চান বাংলার পেসার। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
জাতীয় দলের রাডারে রয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরেই। বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল ভারতীয় দল। টেস্ট, ওডিআই, টি-টোয়েন্টি। তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয়েছে মুকেশের। প্রত্যাশিত ভাবেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও রয়েছেন। অর্শদীপের সঙ্গে নতুন বলে জুটি বাঁধবেন। কিন্তু সিরাজ, বুমরার মতো সিনিয়ররা যখন ফিরবেন? সেই স্কোয়াডে কি আদৌ জায়গা হবে! তার জন্য চাই ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স। অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষর বিরুদ্ধে নজরকাড়া পারফরম্যান্সে নির্বাচকদের আস্থা অর্জনেই লক্ষ্য।
বিশাখাপত্তনমে আজ শুরু ভারত-অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া মুকেশ কুমার। বলছেন, ‘দেশের জার্সিতে নিয়মিত খেলতে চাই। এটাই হবে আমার প্রথম সাফল্য। সফল ব্যক্তিরা একটি প্রক্রিয়া মেনে চলেন। সেদিকেই নজর দিতে চাই। এখনও অবধি পরিশ্রমের সুফল পেয়েছি। সেটাই ধরে রাখতে চাই।’ প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে তাঁর সাফল্য বেশি। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও কম যান না। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলেন। টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ বেশি বলেই মনে করেন মুকেশ। নিজের সাফল্যের জন্য় আইপিএলকেও কৃতিত্ব দিচ্ছেন।
দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলার সুবাদে সুযোগ হয়েছে অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মার থেকে পরামর্শ নেওয়ার। দেশের অন্যতম সেরা পেসার ইশান্ত। মুকেশ বলেন, ‘ইশান্ত ভাইয়া আমাকে প্রচুর সাপোর্ট দিয়েছে। টিমে আমার ভূমিকা কী, সেটা পরিষ্কার করে বুঝিয়েছে। আমি সেই অনুযায়ী পারফর্ম করার চেষ্টা করেছি। জাতীয় দলের হয়েও সেই চেষ্টাই থাকবে।’ ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে প্রথম অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, বলতে গিয়ে যেন ভাষা হারালেন। যে সমস্ত তারকা ক্রিকেটারদের শুধুমাত্র টেলিভিশনেই দেখে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেওয়া যে নতুন প্লেয়ারের কাছে বিরাট ব্যাপার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই শুরুর মুহূর্তগুলি ভাগ করে নিলেন। মুকেশের কথায়, ‘প্রথম যখন জাতীয় দলের সতীর্থদের দেখি, আমার মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। ভাবছিলাম, আরে ওদের তো এক দিন আগে অবধিও টিভিতেই দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম। আর আজ একই সঙ্গে ওয়ার্ম আপ করব! বিরাট ভাই বলেছিল, আমি ভালো বল করছি। প্র্যাক্টিস ম্যাচের ফাঁকে রোহিত ভাইও কথা বলে, নানা পরামর্শ দেয়।’
মুকেশের চোখে এখন বড় স্বপ্ন। তার চেয়ে বড় তাগিদ। কতটা পরিশ্রম করে এই জায়গা অবধি পৌঁছতে হয়েছে, সেটা ভোলেননি। তাঁর সফরটা একেবারেই গলি থেকে রাজপথের মতো। সেই পথটা দীর্ঘ হোক, সেটাই লক্ষ্য। মাঝ পথে খেই হারাতে নারাজ। বরং, সাফল্যের পথে নিয়মিত দৌড়তে চান।