কলকাতা: ভারতীয় ক্রিকেটে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিবাচক ভূমিকা কতটা, এ আর নতুন করে বলার নেই। একটা উদাহরণই দেওয়া যাক। জসপ্রীত বুমরা। তাঁর উত্থান কিন্তু আইপিএল দিয়েই। বর্তমানে ভারতীয় পেস বোলিংয়ের মূল অস্ত্র জসপ্রীত বুমরা। হঠাৎ কেন এই প্রসঙ্গ! আগামী আইপিএলের প্রস্তুতি যে শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি দলই তাদের রিটেনশন ও রিলিজ লিস্ট প্রকাশ করেছে। ট্রেডিং উইন্ডো যদিও ১২ ডিসেম্বর অবধি খোলা। মূল নজর অবশ্য ১৯ ডিসেম্বর। আইপিএলের নিলাম। বুমরার মতো নতুন কোনও প্লেয়ার এখান থেকেই উঠে আসবেন কিনা, কেই বা বলতে পারে! টিমগুলো ঘরোয়া ক্রিকেটে যে ধরনের ক্রিকেটারদের টার্গেট করতে পারে, বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports– এর এই প্রতিবেদনে।
বুমরার মতোই আরও একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। সদ্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ভারতীয় স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন সাই সুদর্শন। দীর্ঘদিন ধরেই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন সাই। তাঁর পরিচিতি এতটাও ছিল না। গত আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সে ছিলেন। প্রথম ম্যাচেই কেন উইলিয়ামসনের চোট সাই সুদর্শনের কাছে ‘সুযোগ’ হয়ে দাঁড়ায়। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে আইপিএলে অভিষেক। একের পর এক চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলেছেন। ভারত এ দলের হয়েও খেলার সুযোগ হয়েছে। সেটা আইপিএলের পরই। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ধারাবাহিক ভালো খেলে চলেছেন। এ বার জাতীয় দলেও সুযোগ। টাইটান্সের হয়ে খেলার সুযোগটা না এলে হয়তো এত তাড়াতাড়ি নির্বাচকদের খাতায় নাম উঠতো না।
আগামী আইপিএলেও হয়তো এমনই অনেক ক্রিকেটার উঠে আসবেন। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যেমন বর্তমানের জন্য শক্তিশালী দল গড়ার দিকে নজর দেবে, তেমনই ভবিষ্যতের পরিকল্পনাও থাকবে। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি (ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা) থেকে অনেকেই হয়তো ফ্র্যাঞ্চাইজি স্কাউটদের নোটবুকে নাম তুলে রেখেছেন। চলছে বিজয় হাজারে ওয়ান ডে টুর্নামেন্টও। সেখান থেকেও নতুন প্লেয়ারদের টার্গেট করছে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেমন পাওয়ার হিটার প্রয়োজন পড়ে তেমনই এমন ব্যাটারও যাঁরা দলের প্রয়োজনে ইনিংস গড়তে পারবেন। আর এক্ষেত্রে স্কাউটদের নজরে মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। বিজয় হাজারের মতো ওয়ান ডে টুর্নামেন্ট থেকে তেমনই ব্যাটার খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যাঁরা ঝুঁকি না নিয়েও ইনিংস গড়বেন, স্কোর বোর্ড সচল রাখতে পারবেন। উল্টোদিকে কেউ ক্যামিও ইনিংস খেলে বাকিটা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন। এমন কিছু প্লেয়ারই নজরে রয়েছেন। যাঁদের নিয়ে নিলামে ঝড় উঠতে পারে।
তেমনই বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও। সকলেই উইকেট নিয়েই দলকে সাহায্য করেন, তা নয়। বোলিংয়েও পার্টনারশিপ প্রয়োজন। একদিক থেকে কেউ বেশ কিছু ডট বল করতে পারলে, উল্টোদিকের বোলারের উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। বিজয় হাজারে ট্রফিতে তেমনই বোলারেই নজর দিচ্ছেন স্কাউটরা। কটা উইকেট নিচ্ছেন, তার চেয়েও বেশি করে দেখছেন, ইকোনমি। পেসারদের ক্ষেত্রে নজর থাকছে গতিতেও। ১৩৫-এর ওপর গতিতে কেউ যদি দুর্দান্ত ইকোনমি রাখতে পারেন, যে কোনও দলেরই সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন। ১৯ ডিসেম্বর এমন ক’জনকে দেখা যাবে, এটুকু বলাই যায়।