ব্লুমফন্টেন: যতটা আত্মবিশ্বাসী শুরু, তেমনই আত্মসমর্পণ। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের পরিস্থিতি এমনই। গত ডিসেম্বরে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে সেমিফাইনালেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হল বাংলাদেশকে হারিয়েই। সৌম্য পান্ডে এবং থ্রি-ডি ক্রিকেটার মুশির খানের বাঁ হাতের কামালে কুপোকাত বাংলাদেশ। দিনের শুরুটা হয়েছিল বাঘের গর্জনে। দিনের শেষে সবটাই শান্ত। যুব বিশ্বকাপে ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে জয়ে যাত্রা শুরু ভারতের। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
দিনের ম্যাচ। ব্লুমফন্টেনের মংগং ওভালে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহফুজুর। বাঁ হাতি পেসার মারুফ মৃধার বোলিং পারফরম্যান্স এবং সেলিব্রেশনই যেন তাতিয়ে দিয়েছিল ভারতকে। শুরুতেই আর্শিন কুলকার্নি, মুশির খানের উইকেটে জোড়া ধাক্কা খায় ভারতীয় দল। ওপেনার আদর্শ সিং এবং ক্যাপ্টেন উদয় সাহারণের ১১৬ রানের জুটি ভারতকে ম্যাচে ফেরায়। আদর্শ (৭৬), উদয় (৬৪) দু-জনেই হাফসেঞ্চুরি করেন। শেষ দিকে আরাবল্লী অবনীশ ১৭ বলে ২৩ ও সচিন দাসের ২০ বলে ২৬ রানের ক্যামিও। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান করে ভারত। বাঁ হাতি পেসার মারুফ মৃধা ৪৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন।
রান তাড়ায় অনবদ্য শুরু বাংলাদেশের। এক প্রান্ত থেকে রাজ লিম্বানি দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। অপর প্রান্তে বাঁ হাতি পেসার নমন তিওয়ারি সেই চাপ তৈরি করতে ব্যর্থ। প্রথম ওভারেই চারটি ওয়াইড বল করেন। বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিল। অবশেষে রাজ লিম্বানির বলেই এল ব্রেক থ্রু। এর কৃতিত্ব প্রাপ্য মুরুগান অভিষেকের। অনবদ্য ক্যাচ নেন।
বাংলাদেশ শিবির কুপোকাত জুনিয়র জাডেজা ও মুশির খানের সৌজন্যে। বাঁ হাতি স্পিনার সৌম্য পান্ডেকে দ্রুতই আক্রমণে আনেন ভারত অধিনায়ক উদয় সাহারণ। প্রথম ওভার থেকেই ভেলকি। বোলিং স্টাইল, লাইন-লেন্থ এবং গতির হেরফের দেখে সৌম্যকে জুনিয়র রবীন্দ্র জাডেজা বলা ভুল হবে না। প্রথম স্পেলে ৬ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট। স্লিপে একটি ক্যাচ মিস না হলে উইকেটের সংখ্যা প্রথম স্পেলেই তিন হতে পারত। কাঁধে সমস্যা হওয়ায় দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন সৌম্য।
বাংলাদেশের আরিফুল এবং জেমসের জুটি ক্রমশ চাপে ফেলছিল ভারতকে। ড্রিংকস বিরতির পর আর এক বাঁ হাতি স্পিনার মুশির খান ব্রেক থ্রু দেন। সৌম্য পান্ডে নতুন স্পেলে এসেও কামাল দেখান। সব মিলিয়ে ৯.৫ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট জুনিয়র জাডেজা সৌম্যর। আর এক বাঁ হাতি স্পিনার মুশির খান ১০ ওভারে ১টি মেডেন সহ ৩৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। ডিরেক্ট থ্রোয়ে একটি রান আউটও করেন মুশির। মাত্র ১৬৭ রানেই শেষ বাংলাদেশ ইনিংস।
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। এ দিনও তার অন্যথা হল না। বাংলাদেশ বোলাররা উইকেট নিয়ে সেলিব্রেশন এবং স্লেজিং করেছেন। পাল্টাও পেলেন ভারতের কাছ থেকে। দু-বার আম্পায়ারকেও পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে হল।