ভারতীয় দলে কিপার নিয়ে ত্রিমুখী লড়াই! শিকে ছিঁড়বে কার?


কলকাতা: এখন আর হাতে গোনা দিন। ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ শুরু বৃহস্পতিবার। তার আগে প্রশ্ন ভারতের কিপার নিয়ে। ঈশান কিষাণ না থাকায় প্রশ্নটা উঠছে। নয়তো এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকত না। ভারতের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ। আপাতত প্রথম দু-ম্যাচের জন্যই স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বোর্ড। লোকেশ রাহুলের পাশাপাশি আর দুই কিপার শ্রীকার ভরত ও নতুন মুখ ধ্রুব জুরেল। এই প্রথম জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন জুরেল। এ দলের হয়ে খেলেছেন। শুধুমাত্র রাহুল এবং ভরত থাকলে, কোনও প্রশ্ন ছিল না। ধ্রুব জুরেলকে নেওয়াতেই নানা দিক আসছে। একাদশে লোকেশ রাহুলের জায়গাও কি সঙ্কটে? বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে হঠাৎই টেস্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ঈশান কিষাণ। স্কোয়াডে ব্যাক আপ কিপার হিসেবে যোগ করা হয়েছিল এ দলের সঙ্গে থাকা ভরতকে। তাঁকে রাখা হলেও খেলানো হবে না, পরিষ্কারই ছিল। সিরিজ শুরুর আগেই কোচ রাহুল দ্রাবিড় নিশ্চিত করেন, লোকেশ রাহুলই কিপিং করবেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় দু-টেস্টেই কিপিং করেছেন রাহুল। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলা আর ভারতে, এক নয়। সে কারণেই নানা ভাবনা।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দু-ম্যাচের স্কোয়াডে চার স্পিনার রয়েছে ভারতের। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা, অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে দীর্ঘ সময় পর টেস্ট দলে কুলদীপ যাদব। চার স্পিনার রাখায় একটা বিষয় স্পষ্ট, ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে তৈরি ভারত। ইংল্যান্ডের বাজবল আটকাতে স্পিন আক্রমণই ভরসা হতে পারে। বোলিং কম্বিনেশনে তিন স্পিনার এবং দুই পেসারের সম্ভাবনা বেশি।

এ বার আশা যাক, ব্যাটিং। ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা এবং যশস্বী জয়সওয়াল। সব ঠিক থাকলে তিন নম্বরে শুভমন গিল। চারে বিরাট কোহলি। পাঁচে শ্রেয়স আইয়ার। ছয়ে লোকেশ রাহুল! এরপর তিন স্পিনার দুই পেসার খেলালে কিপারের জায়গা থাকছে না। বোলিং কম্বিনেশন নিয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষা হবে না, এটকু বলা যায়। টেস্ট জিততে গেলে ব্যাটিং যেমন প্রয়োজন, প্রতিপক্ষর ২০টা উইকেটও নিতে হবে।

লোকেশ রাহুলকে যদি কিপার হিসেবে খেলানো হয়, এই কম্বিনেশনে কিন্তু সমস্যা নেই। তাঁকে স্পেশালিস্ট ব্যাটার হিসেবে খেলালে টপ ফাইভে পরিবর্তন প্রয়োজন। ভারতের মাটিতে খেলা। পিচ স্পিন সহায়ক। সেখানে অশ্বিন-জাডেজার মতো স্পিনারের জন্য স্পেশালিস্ট কিপার চাই। বলা যেতে পারত, শ্রীকার ভরত এগিয়ে। ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট সিরিজে ভরতই খেলেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আরও একটা দক্ষতাও প্রয়োজন। ব্যাটিং। রাহুলকে কিপার খেলালে ব্যাটিং বিভাগ শক্তিশালী হবে, কিন্তু স্পিনারদের বিরুদ্ধে কিপার হিসেবে ঝুঁকি নাও নেওয়া হতে পারে।

শ্রীকার ভরতের ব্যাটিং পারফরম্যান্সই হোক বা কিপিং দক্ষতা, সবটাতেই উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। সদ্য ভারত এ দলের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন শ্রীকার। ফলে তাঁর ওপর প্রথম ম্যাচে ভরসা রাখা হতেই পারে। তবে হিসেবের বাইরে রাখা যাবে না ধ্রুব জুরেলকে। টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার পরই এ দলের হয়ে বিধ্বংসী হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছেন। কিপার হিসেবেও ‘সেফ’ বলা যায়।

রাহুলকে খেলানোর আরও একটা বিকল্প হতে পারে। স্পেশালিস্ট ব্যাটার। শুভমন গিল ফর্মে নেই। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও রান পাননি। এক হতে পারে, তাঁর জায়গায় তিনে দেখা হতে পারে লোকেশ রাহুলকে। দুই পাঁচ নম্বরে শ্রেয়সের পরিবর্তে রাহুল। আজ থেকে অনুশীলন। এরপরই হয়তো চিত্রটা পরিষ্কার হবে। তবে কিপিং পজিশনে যে ত্রিমুখী লড়াই, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে, নজর সে দিকেই।

Leave a Reply