বাবা-মা ক্ষেতমজুর, দু’বেলা জোটে না খাবার, হাইজাম্পে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাদুড়িয়ার আরাবুল!


Athletics: বাবা-মা ক্ষেতমজুর, দু’বেলা জোটে না খাবার, হাইজাম্পে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাদুড়িয়ার আরাবুল!Image Credit source: নিজস্ব চিত্র

অর্ণব ব্রহ্ম

প্রবল শীতে ছেঁড়া কাথায় দিনযাপন ছোট্ট আরাবুল ইসলামের। না, এই আরাবুল নেতা আরাবুল নয়। এ হল বাদুড়িয়ার ১২ বছরের আরাবুল ইসলাম (Arabul Islam)। দিন মজুরের সন্তান। আধবেলা জোটে খাবার। জশাই কাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ইতিমধ্যেই উত্তর চব্বিশ পরগণার হাইজাম্পে ইভেন্টে প্রথম স্থান অধিকার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ক’দিনের মধ্যে মধ্যমগ্রামের বাছাই করা ছেলেদের নিয়ে রাজ্যস্তরে খেলতে পাঠানোর জন্য অনুশীলন শুরু হবে। তাতেও স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আরাবুল।

বাবা আলফাজ আলি দিনমজুরের কাজ করেন। পলিথিনের পলেস্তারা দিয়ে কোনও রকমে বাঁশের খুঁটির উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছোট্ট আরাবুলের বাড়ি। সংসারে অভাব এতটাই যে নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায়। কিন্তু বাবা আফজলের স্বপ্ন, ছেলে একদিন সংসারের সব অভাব অনটন মিটিয়ে দেবে। খেলাধুলোয় উজ্জ্বল করবে বাবা-মায়ের মুখ। চোখে একরাশ জল নিয়ে সে কথাই জানাচ্ছিলেন তিনি। মা-বাবা দু’জনেই ক্ষেতমজুরের কাজ করেন। ছোট্ট আরাবুল স্কুলের পাশাপাশি, পাড়ায় যে সব স্পোর্টসের ইভেন্ট হতো, সেখান থেকে পুরস্কার এনেছে। কখনও প্রথম, কখনও দ্বিতীয়। আরাবুল জেলাস্তরে হাইজাম্পে প্রথম স্থান অধিকার করার পর তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ মণ্ডল বলছেন, ‘আরাবুলের এই সাফল্য আমাদের চোখে আনন্দের অশ্রুধারা এনেছে। গর্ববোধ হয় ওর জন্য। আগামী দিনে ওর খেলার ক্ষেত্রে যাতে কোনএ রকম অসুবিধা না হয়, তার জন্য সব রকম ভাবে আমরা পাশে থাকব।’

মা খাদিজা বিবির কোলে ছোট্ট আরাবুল। (নিজস্ব চিত্র)

আরাবুলের মা খাদিজা বিবিও বলে দিলেন, ‘খেলাধুলো অন্তঃপ্রাণ আমার ছেলে। স্কুল থেকে ফিরেই ছোটে মাঠে। পাড়া হোক আর অন্য কোথাও, সব ইভেন্টে ও ঠিক নামবেই। ও ভালো কিছু করলে আমাদেরও খুব ভালো লাগে।’ ইতিমধ্যেই মধ্যমগ্রামের ওই মাঠে রাজ্যস্তরে খেলতে যাওয়ার জন্য অনুশীলন শুরু করেছে ছোট্ট আরাবুল। ক’দিনের মধ্যেই বহরমপুরে অনুষ্ঠিত হবে রাজ্যস্তরের খেলা। সেখানে অংশ নিতেই পড়াশোনার পাশাপাশি চুটিয়ে প্র্যাকটিসও করছে ছোট্ট এই আরাবুল। বাদুড়িয়ার আরাবুল যে কিছু করে দেখাবে, এলাকার মানুষজনও বিশ্বাস করে।

Leave a Reply