কলকাতা: যুব বিশ্বকাপ থেকে যেমন অনেকে পরবর্তীতে তারকা হয়ে উঠেছেন, তেমনই উল্টো চিত্রও রয়েছে। অনেকেই যুব বিশ্বকাপে ভালো পারফর্ম করে হারিয়ে গিয়েছেন। কেউ বা বিশ্বকাপে তথাকথিত তারকা না হলেও ভবিষ্যতে সুপার স্টার হয়ে উঠেছেন! আবার এমন অনেক উদাহরণও রয়েছে, যাঁরা কোনও দিন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলেননি। কিন্তু সিনিয়র ক্রিকেটে সুপার স্টার। ক্যাপ্টেন্সির দিক থেকেও। কিংবা ব্যাটিং! অনেক জটিল মনে হচ্ছে! একটু সহজ করে বলা যাক। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ উঠলে বিরাট কোহলির নাম আসবেই। ২০০৮ সালে তাঁর নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। সিনিয়র স্তরে ব্যাটার কিং কোহলির কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন। নেতা হিসেবে কিন্তু আইসিসি ট্রফি জিততে পারেননি। তাঁর অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বজয়ী দলের সতীর্থদের মধ্যে জাডেজা ছাড়া আর কেউই সিনিয়র স্তরে মেলে ধরতে পারেননি নিজেদের।
আরও একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ব্যাচ। পৃথ্বী শ-শুভমন গিল। সেই বিশ্বকাপে তারকা ছিলেন পৃথ্বীই। তাঁকেই নিয়েই যাবতীয় আলোচনা। সিনিয়র দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশও হয়েছিল পৃথ্বীর। ক্রমশ হারিয়ে গিয়েছেন। ফের কবে জাতীয় দলে দেখা যাবে তাঁকে, পৃথ্বী নিজেও আশা দেখছেন না। আবার মহেন্দ্র সিং ধোনির কথাই বলা যাক। তিনি তো অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ দলেই সুযোগ পাননি। অথচ বিশ্বের অন্যতম সফল অধিনায়ক হয়ে উঠেছেন। এশিয়ার একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছেন।
এ বছর অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে খেলা অনেকেই হয়তো ভবিষ্যতে তারকা হয়ে উঠবেন। অনেকে হারিয়েও যাবেন। তবে একটা নামে নজর রাখতেই হবে। উদয় সাহারণ। ভারতীয় দলকে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্টে তাঁর উপস্থিতি যেন আলাদা করে টের পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে বলতে হয় গ্রুপের ম্যাচগুলির কথা। ভারত পরপর জিতেছে। দলের সাফল্য। তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে তেমন কথা হয়নি। সেমিফাইনালে দল যখন প্রবল চাপে তখন একটা দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন, সুপার সিক্স পর্বেও তেমনই একটা ইনিংস।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগ। তরুণ ব্যাটাররা সাধারণত শটের বৈচিত্রে জোর দেন। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেন। আর ক্যাপ্টেনরা! আগ্রাসী। অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পাবে সেটা। উদয় সাহারণ যেন ঠিক উল্টো। শান্ত, চুপচাপ কাজ করে যাওয়ায় বিশ্বাসী। রক মিউজিকের জমানায় জগজিৎ সিংয়ের গজলের মতো! হয়তো কোমর দোলানো যায় না, তবে মানসিক শান্তি মেলে। জন্মভূমি এক বলেই কি?
উদয় সাহরণের বাড়ি রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগরে। মাত্র ২ লক্ষ জনবসতি। এই জায়গাটা পরিচিত হয়ে রয়েছে সঙ্গীতশিল্পী জগজিৎ সিংয়ের জন্যই। আর আগামীতে কিছুটা হতে উদয়ের! জগজিৎ সিংয়ের গজল আর উদয় সাহারণের ব্যাটিং। কোনও সময় বেঁধে হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শোনা যায়, দেখা যায়। তবে যুব বিশ্বকাপে হারের ধাক্কা থেকে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন উদয়, সেটাই আসল।