লকডাউনের মেনুতে ৫০০ বল, সরফরাজের সাফল্যের গল্প শোনালেন কোচ!
কলকাতা: সাফল্যের পথে আসতে গেলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এ কথা বহুল প্রচলিত ‘যে সয়, সে রয়’… আর এই কথা যেন মিলেমিশে গিয়েছে টেস্ট অভিষেক হওয়া সরফরাজ খানের (Sarfaraz Khan) সঙ্গে। এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা জীবনে উন্নতির পথে হাঁটতে গিয়ে অনেক হোঁচট খেয়েছেন। তারপরও উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। এই তালিকাতেই পড়েন সরফরাজ খানও। তাঁর ধৈর্যশক্তির যত বাহবা করা হয় ততই কম। ধৈর্য ধরো, ফল মিলবে এই তত্ত্বের পাহাড় পেরিয়ে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নপূরণ হয়েছে মুম্বইয়ের ছেলের। কোন মন্ত্রে ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে (Test) সোনা ফলিয়েছেন সরফরাজ?
সরফরাজের ক্রিকেটের পাঠ প্রথম পাওয়া বাবা ও কোচ নওশাদ খানের কাছ থেকে। ইংল্যান্ডের স্পিনারদের বিরুদ্ধে রাজকোটে শাসন করেছেন সরফরাজ। যার পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কোন মন্ত্রে সরফরাজ এত ভালো স্পিনের মোকাবিলা করতে শিখেছেন? এক দিনে স্পিনের বিরুদ্ধে হঠাৎ করেই ভালো খেলা শিখে যাননি সরফরাজ খান। গত ১৫ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল এখন পাচ্ছেন তিনি। অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করেছেন সরফরাজ। তাতে ছুঁয়ে ফেলেছেন কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকরকে (অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করার রেকর্ড)। বাবা নওশাদ খানের মাচো ক্রিকেট ক্লাবের হাত ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রবেশ সরফরাজের। সেখানে মুম্বইয়ের জার্সিতে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই খুলছিল না জাতীয় দলের দরজা। অবশেষে তাঁর সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে।
মুম্বইয়ের ছেলে সরফরাজের এক কোচ জানিয়েছেন, তিনি আজাদ ময়দানে প্রতিদিন অফস্পিনার, লেগস্পিনার ও বাঁ হাতি স্পিনারদের বিরুদ্ধে ৫০০ বল খেলতেন। এখানেই শেষ নয়। করোনাকালে লকডাউনের সময় সরফরাজ প্রায় ১৬০০ কিমি সফর করে মুম্বই থেকে আমরোহা, মোরাদাবাদ, মিরাট, কানপুর, মথুরা ও দেরাদুন অবধি গিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন পরিবেশে খেলেছেন। যেখানে বল ঘোরে। এত পরিশ্রমের ফল এখন পাচ্ছেন সরফরাজ।
ভুবনেশ্বর কুমার (সঞ্জয় রাস্তোগি), মহম্মদ সামি (বদরুদ্দিন শেখ), কুলদীপ যাদব (কপিল দেও পান্ডে), গৌতম গম্ভীর (সঞ্জয় ভরদ্বাজ) এবং ইন্ডিয়া এ-এর ক্যাপ্টেন অভিমন্যু ঈশ্বরণের (আরপি ঈশ্বরণ) কোচরাও সরফরাজ খানকে তৈরি হতে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর বাবার অনুরোধে করোনার সময় লকডাউন চলাকালীন কুলদীপ-সামির কোচরা স্পিনারদের বিরুদ্ধে সরফরাজের নেট সেশনের ব্যবস্থা করেছিলেন।